পার্ক স্ট্রিটে বড়দিনের উৎসবের আর দু’সপ্তাহও বাকি নেই। প্রতি বছর বড়দিন উপলক্ষে পার্ক স্ট্রিটে বিপুল জমায়েত হয়। সারা রাত ধরে চলে উৎসব। একই রকম জমায়েত হয় বর্ষবরণের রাতেও। এ বছরও পার্ক স্ট্রিটে তেমন জমায়েতের সম্ভাবনা রয়েছে। তবে বিপুল ভিড়ের সুযোগে যাতে কোনও রকম অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে, সে দিকে বাড়তি নজর দিচ্ছে লালবাজার।
দিন কয়েক আগে পার্ক স্ট্রিটের একটি হোটেল থেকে এক বাংলাদেশিকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। চোরাপথে ভারতে ঢুকে ওই ব্যক্তি কলকাতায় থাকছিল বলে অভিযোগ। এমনকি, এ দেশে এসে আধার কার্ড-সহ বেশ কিছু নথি সে বেআইনি ভাবে বানিয়েও নিয়েছিল বলে পুলিশ তদন্তে নেমে জানতে পারে। বাংলাদেশে হাসিনা সরকারের পতনের পরে লাগাতার অশান্তি চলছে। এর মধ্যে চোরাপথে সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে ঢোকার আশঙ্কা আরও কয়েক গুণ বেড়েছে। ফলে, কোনও অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে যে একই পথে কেউ কলকাতায় ঢুকবে না— সেই আশঙ্কা উড়িয়ে দিচ্ছেন না লালবাজারের কর্তারা।
শহরের নিরাপত্তা সংক্রান্ত চিন্তা আরও বাড়িয়েছে বর্তমানে পাকিস্তান ও বাংলাদেশের সখ্যতা। ইতিমধ্যেই বাংলাদেশ এবং পাকিস্তানের বাসিন্দাদের ভিসা আগের থেকে সহজ করে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ সরকার। ফলে সে ক্ষেত্রে পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশ এসে চোরাপথে ভারতে প্রবেশের আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। যা বড়দিন বা বর্ষশেষের আগে কিছুটা হলেও চিন্তায় রাখছে পুলিশ-প্রশাসনকে।
লালবাজার যদিও জানিয়েছে, নিরাপত্তা সংক্রান্ত কোনও রকম ঝুঁকি নেওয়া হবে না। জানা গিয়েছে, সীমান্ত এলাকা পুলিশের হাতে না থাকলেও কলকাতায় যাতে কোনও ভাবে অনুপ্রবেশকারী কেউ না ঢোকে, তা নিশ্চিত করতে চাইছেন লালবাজারের কর্তারা। তাই শহরের বিভিন্ন প্রবেশপথের পাশাপাশি বিভিন্ন হোটেলগুলিকে বছর শেষের কয়েক দিন আরও বাড়তি নজরে রাখছেন গোয়েন্দারা। বড়দিন এবং বর্ষবরণ ঘিরে যে হেতু পার্ক স্ট্রিট ও সংলগ্ন এলাকায় বিপুল জমায়েত হয়, তাই এই এলাকার জন্য লালবাজারের বাড়তি সতর্কতার ভাবনা রয়েছে।
সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই পার্ক স্ট্রিট এবং সংলগ্ন হোটেলগুলিতে কে বা কারা ওই এক সপ্তাহে থাকার জন্য ঘর বুক করেছেন, সেই তথ্য সংগ্রহ করেছে পুলিশ। তথ্য খতিয়ে দেখতে থানার এক নির্দিষ্ট আধিকারিককে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
পাশাপাশি, হোটেলে বা অতিথিশালাগুলিতে অনলাইন বা অফলাইনে ওই ক’দিনে কত বুকিং হয়েছে, কোথা থেকে আবাসিকেরা আসছেন— সেই সমস্ত তথ্য পুলিশকে দেওয়ার কথাও জানানো হয়েছে। লালবাজারের এক কর্তা বলেন, ‘‘বর্ষবরণের নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়ে আমাদের বিশেষ পরিকল্পনা রয়েছে। সেই তোড়জোড় চলছে। বাহিনীর বিভিন্ন বিভাগ একত্রে কাজ করবে। কোনও রকম ঝুঁকি ছাড়া নির্বিঘ্নে যাতে উৎসব শেষ করা যায়, তার সমস্ত বন্দোবস্ত থাকবে।’’