২০১৯ সালের ৯ অক্টোবর নৈহাটি হাজিনগর এলাকায় নিজের বাড়িতে খুন হন অমরনাথ। আসলে অমরনাথের বড় ছেলে আশুকে খুঁজতে গিয়েছিল দলটি। তাঁকে হাতের কাছে না- পেয়ে প্রৌঢ়কে গুলি করে খুন করে পালিয়ে যায় তারা। নৈহাটি থানার পুলিশ অভিযুক্তদের প্রত্যেককে গ্রেফতার করে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে খুনের মামলা এবং অস্ত্র আইনের মামলা রুজু হয়। ১৪ জনের সাক্ষ্যপ্রমাণের পর গত ১১ ডিসেম্বর ছ’জনকে দোষী সাব্যস্ত করেছে ব্যারাকপুর আদালতের এডিজে থার্ড কোর্টের বিচারক অয়ন বন্দ্যোপাধ্যায়। আদালতের রায়ে খুশি নিহত অমরনাথের পরিবার।
আদালত সূত্রে খবর, সে দিন অমরনাথের বড় ছেলেকে মারতে গিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। কিন্তু মাঝখানে অমরনাথ দাঁড়িয়ে যান। তখন তাঁকেই গুলি করে খুন করে পালায় তারা। ওই মামলা প্রসঙ্গে সরকারি আইনজীবী সত্যব্রত দাস বলেন, ‘‘২০১৯ সালের ৯ অক্টোবর রাত সাড়ে ১০টার সময় শ্যামবিহারী যাদব, অনিল যাদব, চন্দন যাদবেরা অমরনাথের বাড়িতে গিয়ে বলছিল, ‘তোর ছেলে আশুকে বার করে দে।’ আশু সংশ্লিষ্ট মামলার অভিযোগকারী। তাঁকে খুনের উদ্দেশ্য ছিল। আশুর বাড়িতে আক্রমণের আগে আরও এক জনকে খুন করে ওই ছ’জন। আশুর বাবা সেটা দেখে ফেলেন এবং বাড়ির দরজা বন্ধ করে দেন। কিন্তু দরজা ধাক্কা দিতে দিতে আশুকে বেরিয়ে আসতে বলে দলটি। তাঁকে না-পেয়ে শ্যামবিহারী রাগের চোটে গুলি চালিয়ে দেয়। গুলিটি অমরনাথের ডান দিকের গালের নীচের দিকে লেগে মাথার পিছনের দিক দিয়ে বেরিয়ে যায়। তখন অমরনাথের স্ত্রী রান্নাঘরে ছিলেন। আশু এবং তাঁর ভাই বাড়ির মধ্যে ছিলেন। অমরনাথকে গুলি করার পর ভয়ে এবং আতঙ্কে চিৎকার-চেঁচামেচি শুরু করেন তাঁরা। পরে পুলিশ দেহ উদ্ধার করে এবং দ্রুততার সঙ্গে অভিযুক্তদের শনাক্ত করে গ্রেফতার করে।’’ সরকারি আইনজীবী আরও বলেন, ‘‘আশুকে নিয়ে গিয়ে তোলাবাজির গ্রুপে ভিড়িয়ে দিতে চেয়েছিল দলটি। কিন্তু অপরাধের দুনিয়া থেকে বেরিয়ে একটি কাপড়ের দোকানে কাজ করছিলেন আশু। সেই রোষে ওই আক্রমণ।’’
মামলার বিচারপ্রক্রিয়ায় ১৫ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ হয়েছে। যাঁদের বাড়ি থেকে অস্ত্র পাওয়া গিয়েছে, তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। আসামিদের দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল আগেই। সোমবার তাঁদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।