রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমকে মহম্মদ আলি জিন্নার বংশধর বলে কটাক্ষ করলেন প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। সম্প্রতি সংখ্যালঘু-সংখ্যাগুরু নিয়ে ফিরহাদ যে মন্তব্য করেছিলেন, সেই ইস্যুতেই অধীর আক্রমণ শানান। বলেন, মহম্মদ আলি জিন্না নিজে পাকিস্তানে গিয়েছিলেন ঠিকই তবে তার কিছু বংশধরকে এখানে রেখে গেছে। তার মধ্যে একজন এই ফিরহাদ হাকিম।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে অধীর বলেন, 'পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূলের সাম্প্রদায়িক রাজনীতির একজন প্রবক্তা এই ফিরহাদ হাকিম। তিনি এই ধরনের মন্তব্য মাঝে মধ্যেই করে থাকেন। ২০১৯ সালে এখানে ভোটের প্রচারে এসে সংখ্যালঘুদের ভুল বুঝিয়েছিলেন। এই হল এদের মানসিকতা। এরা আসলে জিন্নার বংশধর। তিনি পাকিস্তানে গেছেন। মারাও গেছেন। তবে এই ফিরহাদ হাকিমের মতো বংশধরদের রেখে গেছেন। এই ধরনের মানুষদের পার্টি থেকে বের করে দেওয়া উচিত।'
ফিরহাদ হাকিমের মন্তব্যের বিরোধিতা করেছিলেন প্রাক্তন আইপিএস তথা ডেবরার বিধায়ক হুমায়ুন কবির। তিনি ফিরহাদ হাকিমের নাম না করে ফেসবুকে লিখেছিলেন, 'কোয়ালিটি নয়, কোয়ান্টিটি চাই।' অধীর এই মন্তব্যের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, 'হুমায়ুন কবির অপূর্ব কথা বলেছেন। কোয়ালিটি দরকার। এটাই মুসলমান সমাজের মূল কথা হওয়া দরকার। এরা নিজেদের ছেলেমেয়েদের কোটিপতি করবে, শিক্ষিত করবে কিন্তু লোককে মাদ্রাসায় পাঠাবে। লোককে বলবে, অনেক বাচ্চা নাও, রিক্সা চালক বানাও, সব্জিওয়ালা বানাও। অথচ নিজেদের বেলায় তা খাটাবে না। নিজের সন্তানদের বড় বড় স্কুলে পাঠাবে।'
প্রসঙ্গত, শুক্রবার সংখ্যালঘু পড়ুয়াদের একটি অনুষ্ঠানে নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন,'আমরা এমন একটা ধর্মের লোক, যাঁরা বাংলায় ৩৩ শতাংশ, আর ভারতে ১৭ শতাংশ। আমাদের সংখ্যালঘু বলা হয়। আমরা নিজেদের সংখ্যালঘু ভাবি না। আল্লাহর রহমত থাকলে একদিন আমরা সংখ্যাগরিষ্ঠের চেয়েও বেশি সংখ্যাগরিষ্ঠ হয়ে উঠব। আল্লার মেহেরবানিতে নিজেদের শক্তিতে সেটা হাসিল করব।'
এই মন্তব্যের ভিডিও ভাইরাল হয়। ফিরহাদ হাকিমের সমালোচনা করে বিজেপি। সন্ন্যাসীরাও হাকিমের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানান। চাপের মুখে পড়ে রবিবার রাজ্যের মন্ত্রী নিজেকে ধর্মনিরপেক্ষ দাবি করেন। এদিকে সোমবার তৃণমূল সাফ জানিয়ে দেয়, ফিরহাদ হাকিমের মন্তব্যকে সমর্থন করে না দল। এটা দলের অবস্থান নয়।