স্বচ্ছ ভারত প্রকল্পের জন্য কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যগুলির ক্ষেত্রে কিছু শর্ত আরোপ করেছিল কেন্দ্রীয় সরকার। পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে সেই সব শর্ত ইতিমধ্যেই পূরণ করা হয়েছে বলেই নবান্ন সূত্রের খবর। কেন্দ্রের শর্ত মেনে স্বচ্ছ ভারত প্রকল্পে ৮৭ শতাংশ অর্থ খরচে সফল হয়েছে রাজ্য। তাই আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই প্রথম পর্যায়ের কিস্তির টাকা এসে পৌঁছবে নবান্নের কাছে।
২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে জয়ী হয়ে প্রথম বার প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব নেওয়ার পর সেই বছর গান্ধীজয়ন্তীতে স্বচ্ছ ভারত প্রকল্পের সূচনা করেছিলেন মোদী। সেই প্রকল্পে উন্মুক্ত স্থানে মলত্যাগের অভ্যাস দূর করতে কেন্দ্রীয় সরকার উদ্যোগী হয়েছিল। প্রথম থেকেই এই প্রকল্পের ভাল কাজ দেখিয়ে এসেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। তাই ২০২৩-২৪ আর্থিক বছরে বাংলাকে ‘স্বচ্ছ ভারত মিশন’ প্রকল্পের পাঁচটি কিস্তির টাকা দিয়েছিল মোদী সরকার।
নবান্ন সূত্রের খবর, উৎসবের মরসুম কেটে যাওয়ার পরেই রাজ্য সরকারের তরফে খরচের হিসাব প্রদান-সহ প্রয়োজনীয় সমস্ত নথি কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে পাঠানো হয়। কেন্দ্রীয় সরকার হাতে পাওয়া নথি যাচাই করেই ২০০ কোটি টাকা ছাড়তে রাজি হয়েছে। গত দুই আর্থিক বছরে এই খাতে প্রায় ২৫০০ কোটি টাকা পেয়েছে নবান্ন। তবে সব কিছু এত মসৃণ ছিল না বলেই জানাচ্ছেন নবান্নের এক আধিকারিক। প্রকল্পের নাম নিয়ে বাংলার শাসকদল তৃণমূলের সঙ্গে বিবাদ হয়েছিল কেন্দ্রের শাসকদল বিজেপির। পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি নেতৃত্বের অভিযোগ ছিল, মোদীর মস্তিষ্কপ্রসূত ‘স্বচ্ছ ভারত’ প্রকল্প ‘নির্মল বাংলা’ নামে মুখ্যমন্ত্রীকে কৃতিত্ব দেওয়া ক্ষেত্রে প্রচার করছে রাজ্য সরকার। সেই বির্তকের রেশ পৌঁছেছিল দিল্লিতেও।
তবে ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের কথা মাথায় রেখেই যাবতীয় অভিযোগ দূরে সরিয়ে এ ক্ষেত্রে হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করতে চান বলেই মনে করছে প্রশাসনিক মহল। তাই এই প্রকল্পের প্রথম বরাদ্দ ডিসেম্বরের শেষ কিংবা জানুয়ারির প্রথম দিকেই রাজ্যকে দিতে চায় কেন্দ্র। আবাস এবং ১০০ দিনের কাজে দুর্নীতি হয়েছে বলেই রাজ্যে বরাদ্দ আটকে রেখেছ কেন্দ্র। তবে সব ক্ষেত্রে যদি প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হয়, তা হলে বাংলার গ্রামীণ জনতার কাছে ভুল বার্তা যেতে পারে। শাসকদল তৃণমূল ২০২৬ সালের বিধানসভা ভোটে প্রচারের বড় হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে পারে। তাই সহমতের ভিত্তিতেই আপাতত এই প্রকল্পের কাজ এগিয়ে নিয়ে যেতে চাইছে দু’পক্ষই।