• চোর ও ডাকাতের দৌরাত্ম্যে নাজেহাল আসানসোল ছোট বাজারের ব্যবসায়ীরা
    বর্তমান | ১৭ ডিসেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, আসানসোল: আসানসোল উত্তর থানার অন্তর্গত কেএস রোডের উপর রয়েছে আসানসোলের ছোট বাজার। ফ্রেট করিডর গড়ার জন্য সেই বাজার ভাঙতে মরিয়া রেল। তার প্রতিবাদে ৭৪৮ দিন ধরে অবস্থান বিক্ষোভ করে চলেছে ব্যবসায়ী মহল। দোকান কবে গুড়িয়ে দেবে রেল, সেই চিন্তায় যখন ঘুম উড়েছে তাঁদের। এই পরিস্থিতিতে গোদের উপর বিষফোঁড়া হয়ে দাঁড়িয়েছে দুষ্কৃতী তাণ্ডব। কখনও দোকানে সিঁদ কেটে চুরি হচ্ছে, কখনও আবার এটিএম থেকে টাকা ছিনতাই। এমনকী কেপমারি করে ব্যবসায়ীর ক্যাশ বাক্স লুটের ঘটনাও ঘটেছে। বাজারে থাকা এসবিআই এটিএমে বিশেষ প্লেট বসিয়ে গ্রাহকদের টাকা লুটের ঘটনাও ঘটেছে। একের পর এক চুরি, প্রতারণার ঘটনায় নাজেহাল এলাকার ব্যবসায়ীরা। তাঁদের মাথাব্যথা আরও বাড়িয়েছে রাত হলেই নেশাড়ুদের উৎপাত। রাতভর নেশা করতে ছেলেদের পাশাপাশি হাজির হচ্ছে মেয়েরাও। দুষ্কৃতীদের মুক্তাঞ্চল নিয়ে এলাকাবাসী ক্ষোভ বাড়ছে। এসিপি বিশ্বজিৎ নস্কর বলেন, বিভিন্ন ঘটনার পর রাতে বাজারে পুলিস মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়াও টহলদারি বাড়ানো হয়েছে। নেশাড়ুদের উৎপাত কমাতে অভিযান বাড়ানো হবে। 


    রামকৃষ্ণ ডাঙাল সহ আসানসোল রেলপার এলাকার মূল বাজার এই ছোট বাজার। ফ্রেট করিডর গড়তে গিয়ে বুলডোজার এনে সেই বাজার ভাঙার চেষ্টা করেছে রেল। ব্যবসায়ীরা বুলডোজারের সামনে শুয়ে পড়ে তা প্রতিরোধ করেন। তারপর থেকে প্রায় দু’ বছর ধরে টানা অবস্থান বিক্ষোভ চলছে। এবার সেই বাজারকেই টার্গেট করেছে দুষ্কৃতীরা। ধর্মেন্দ্র কুমারের মোবাইলের দোকানে প্রথমে দেওয়াল কেটে চুরি হয়। তারপর ধর্মেন্দ্র দোকানের দেওয়াল গেঁথে টিনের পাত দিয়ে মুড়ে দেন। তারপরও দুষ্কৃতীরা ব্লেড এনে টিনের পাত ও দেওয়াল কেটে ফের চুরি করে। তার পাশেই সেলুন গোপাল ভাণ্ডারির। তিনি বলেন, তাঁর সেলুনের দেওয়াল কেটে দু’টি ট্রিমার চুরি করেছে চোরেরা। শনিবার দিন নতুন করে চাঞ্চল্য ছড়ায় বাজারে। সেখানে এটিএম মেশিন থেকে টাকা বের হচ্ছে না, অথচ অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা কেটে যাচ্ছে। এলাকাবাসী জমায়েত হয়ে খুটিয়ে দেখেন এটিএমের টাকা তোলার জায়গায় বিশেষ পাত লাগিয়ে রাখা হচ্ছে। যার ফলে টাকা আটকে যাচ্ছে। অভিযোগ, প্রতারক পাশাপাশি থাকছে। কোনও গ্রাহক টাকা না পেয়ে বাইরে বেরিয়ে যেতেই সেই প্লেট খুলে টাকা বার করে নিচ্ছে প্রতারক। অভিযোগ, এই এটিএমে এক নাবালকের থেকে এক হাজার টাকা ছিনতাই করে পালায় এক ছিনতাইবাজ। খাবার দোকানের মালিক সুরজ গুপ্তা বলেন, শনিবার বাইরে হঠাৎই একটি আওয়াজ হয়। আমি বেরিয়ে কিছুই দেখতে পায়নি। ফিরে এসে দেখি ক্যাশবাক্স থেকে ১৭০০ টাকা গায়েব। যে ভদ্রলোক ছিলেন, তিনি মাছ ভাজা আছে কিনা জিজ্ঞাসা করেই দ্রুত চম্পট দেন। রেলপাড় ট্রেডার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের নেতা আশিসকৃষ্ণ চট্টোপাধ্যায়, পার্থ আচার্য বলেন, পুলিসকে বিষয়গুলি জানানোর পর রাতে দু’জন পুলিস থাকছে। আমরা আতঙ্কিত। শুধু ব্যবসায়ীরা নয়, আতঙ্কিত এলাকাবাসীও। অভিযোগ, পুরনো বরো অফিসের পাশ দিয়ে যে রাস্তাটি ঢুকে গিয়েছে, রাত হলেই সেখানে নেশার আসর বসছে। নেশার টাকা জোগাড় করতেই এই ধরনের উৎপাত কিনা তাও ব্যবসায়ীদের ভাবাচ্ছে।  -নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)