নিজস্ব প্রতিনিধি, রানাঘাট: অনুপ্রবেশ যেন আর থামছেই না। ফের কাঁটাতার পেরিয়ে ঢোকার পর পুলিসের জালে তিন বাংলাদেশি। তাদের মধ্যে একজন নাবালক। অভিযান চালিয়ে আন্তর্জাতিক মানব পাচার চক্রের পাঁচজন দালালকেও গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছে পুলিস। সোমবার ধৃতদের তোলা হয় রানাঘাট মহাকুমা আদালতে।
কোটাবিরোধী আন্দোলনের সময় থেকেই অশান্ত বাংলাদেশ। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে গদিচ্যুত করার পরেও শান্তি ফেরেনি সে দেশে। বর্তমানে পরিস্থিতি আরও ঘোরালো। আক্রান্ত হচ্ছেন সংখ্যালঘু হিন্দুরা। নিম্ন মধ্যবিত্ত এবং গরিব মানুষের রুটি রুজির ক্ষেত্রগুলিও সংকুচিত হয়েছে। সেই কারণেই প্রতিদিন ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে অনুপ্রবেশ লেগেই রয়েছে। পেটের দায়ে হাঁসখালি, ধানতলার মতো সীমান্ত এলাকাগুলি দিয়ে এপারে চলে আসছেন বাংলাদেশিরা। শনিবার গোপন সূত্রে খবর পেয়ে সীমান্ত পার করার কিছুক্ষণের মধ্যেই তিন বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীকে ধরে ফেলে পুলিস। সীমন্ত থেকে বেশ কিছুটা দূরে একটি মাঠ পার করে গ্রামে ঢোকার চেষ্টা করছিল তারা। ধৃতদের মধ্যে একজন পুরুষ, নাম তরুণ সানা, অন্যজন মহিলা, নাম প্রভাতী সানা এবং তাদের সন্তান। বাড়ি বাংলাদেশের খুলনা জেলার কৈরা থানা এলাকায়। পুলিসের দাবি, অশান্ত বাংলাদেশে কাজ নেই। কাজের খোঁজে এই দেশে এসেছিল এই দম্পতি।
ধৃত বাংলাদেশিদের জেরা করে আন্তর্জাতিক মানব পাচার চক্রের একাধিক দালালের খোঁজ পান তদন্তকারীরা। মোটা টাকার বিনিময়ে এরা নিয়মিত বাংলাদেশিদের এ দেশে বেআইনিভাবে নিয়ে আসার ব্যবস্থা করে। সেই তথ্যের ভিত্তিতে একাধিক জায়গায় অভিযান চালায় ধানতলা থানা। তাতেই ধরা পড়ে পাঁচজন। নাম, শেফালী বারুই, অমল বারুই, শাহরুখ মণ্ডল, গফফর মোল্লা এবং আলাউদ্দিন। এদের মধ্যে শেফালী এবং অমল উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁ থানা এলাকার বাসিন্দা। দীর্ঘদিন ধরেই তারা কাঁটাতারের ওপারের পাচার চক্রের নেটওয়ার্কের সঙ্গে যোগ রেখে লোকজন এ দেশে আনার ব্যবস্থা করত। পুলিসের এক কর্তা জানিয়েছেন, শুধুমাত্র বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী নয়, বর্তমানে আমরা পাচার চক্রের সঙ্গে যুক্তদের ধরার জন্যও একাধিক অভিযান চালাচ্ছি। ধৃত বাংলাদেশিদের জেরা করে এই দালাল চক্রের বেশ কয়েকজনের হদিশ মেলে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পরবর্তী তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে। তবে, কোন পথে বাংলাদেশি নাগরিকদের এই দেশে নিয়ে আসা হল, তা অবশ্য এখনও স্পষ্ট হয়নি। তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছে পুলিস। নিজস্ব চিত্র