• রক্ষণাবেক্ষণের অভাব নষ্ট হচ্ছে রানাঘাট পুরসভার স্টেডিয়াম
    বর্তমান | ১৭ ডিসেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, রানাঘাট: খেলাধুলো এবং শরীরচর্চার জন্য একসময় তৈরি হয়েছিল রানাঘাট পুরসভার স্টেডিয়াম। শহরের মধ্যে না হলেও, সংলগ্ন আনুলিয়াতে গ্যালারি সহ ফুটবল মাঠটির যেন আজ কদরই নেই। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে নষ্ট হচ্ছে ফেন্সিং, সীমানার প্রাচীর থেকে গ্যালারির রেলিং। আবার কখনও সমাজবিরোধীদের দৌলতে মাঠে জল দেওয়ার পাইপ থেকে নানা জিনিস চুরিও হয়ে যাচ্ছে বেমালুম। এমতাবস্থায়, মাঠের পরিস্থিতি নিয়ে বেজায় ক্ষুব্ধ সাধারণ মানুষ থেকে ক্রীড়াপ্রেমীরা। 


    ১৯৯২ সালের ৫ জুন, রানাঘাট স্টেডিয়ামের উদ্বোধন করেন তৎকালীন ক্রীড়ামন্ত্রী সুভাষ চক্রবর্তী। ভৌগোলিকভাবে রানাঘাট পুরসভার এলাকা আনুলিয়া বাজারে শেষ হয়ে গেলেও স্টেডিয়ামটি আরও ৫০০ মিটার দূরে। প্রশাসনিক মানচিত্র অনুযায়ী, জায়গাটি অনুলিয়া পঞ্চায়েতের অধীনস্থ। রানাঘাটের খেলাধুলোর উন্নতি এবং জেলা স্তরের ফুটবলারদের তুলে আনতে গ্যালারি সমেত এই স্টেডিয়ামটি তৈরি করেছিল তৎকালীন বাম সরকার। একটা সময় ছিল, যখন রাজ্যস্তরের বিভিন্ন খেলাও হতো এই স্টেডিয়ামে। সরকার পরিবর্তনের পরেও বেশ কিছু পরিকাঠামোগত উন্নয়ন করা হয় মাঠের। মাল্টিজিম, হাই মাস্ট আলোকস্তম্ভ, সজলধারা প্রকল্পের আওতায় পানীয় জলের সংযোগ ইত্যাদি ছিল সেই পরিকাঠামো উন্নয়নের তালিকায়।এখানেই থেমে যায় মাঠ এবং স্টেডিয়াম নিয়ে সরকারি উদ্যোগ। বর্তমানে মাঠ থেকে গ্যালারি, সাজঘর থেকে খেলার পরিকাঠামো, সবেতেই অবহেলার ছাপ স্পষ্ট। চারদিক দিয়ে ফেন্সিং ঘেরা থাকলেও দীর্ঘদিন তাতে রঙের ছিটে লাগেনি। ফলে জং পড়েছে বহু জায়গায়। অনেক জায়গাতেই ফেন্সিং নষ্ট হয়ে গিয়েছে। কোথাও আবার আগাছায় মুখ লুকিয়েছে ফেন্সিং। মাঠের চারপাশে আগাছার ভিড়, বহু বিষধর সাপের চারণভূমি। খেলাধুলোর পরিবর্তে মাঠে গবাদি পশু চরে বেড়ায়। গ্যালারি দর্শকদের বসার মতো অবস্থায় নেই। গ্যালারির কংক্রিট ও সংলগ্ন লোহার রেলিং নষ্ট হতে বসেছে। এর উপর আবার সমাজবিরোধীদের আখড়া তো রয়েছেই। মাঝেমধ্যে স্টেডিয়ামের আশপাশ থেকে বিভিন্ন জিনিস চুরি হয়ে যায়। কখনও মাঠে জল দেওয়ার পাইপ অথবা কখনও বিভিন্ন যন্ত্রাংশ। 


    অনেকেই নিয়মিত শরীরচর্চা এবং খেলাধুলা করেন। বহু উঠতি ফুটবলার রয়েছেন। তাই তাঁদের জন্য স্টেডিয়াম সংস্কারের প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করেন স্থানীয় মানুষ। আনুলিয়ার বাসিন্দা গৌরাঙ্গ বিশ্বাস বলেন, আমাদের মতো হাজার হাজার মানুষের ট্যাক্সের টাকায় লক্ষ-কোটি টাকা খরচ করে স্টেডিয়াম তৈরি হয়েছে। সেটা এভাবে নষ্ট হওয়া দুর্ভাগ্যের ব্যাপার।সংস্কার প্রয়োজন। পরিকাঠামো থাকলে তবে তো খেলাধুলো করার জন্য লোকজন মাঠমুখী হবে। এদিকে স্টেডিয়াম প্রসঙ্গে রানাঘাটের পুরপ্রধান কোশলদেব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, শহর থেকে কিছুটা দূরে স্টেডিয়াম। জায়গাটি এবার পুরসভার এলাকার মধ্যেও নয়। তাই নজরদারিতে একটু সমস্যা হয় বটে। সমাজবিরোধীদের অসাধু কার্যকলাপ রয়েছে। তবে সীমানা প্রাচীর এবং ফেনসিং সংস্কারের কাজ দ্রুত শুরু হবে। আগামী দিনে এই মাঠে বেশ কয়েকটি লিগের খেলা হওয়ার কথা রয়েছে।
  • Link to this news (বর্তমান)