করিমপুরে বহু সজলধারা প্রকল্প অকেজো, জলকষ্টে গ্রামবাসীরা
বর্তমান | ১৭ ডিসেম্বর ২০২৪
সংবাদদাতা, করিমপুর: বিভিন্ন গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় এবং সরকারি প্রতিষ্ঠানে সাধারণ মানুষকেবিশুদ্ধ পানীয় জল পৌঁছে দিতে গত কয়েক বছরে সরকারি টাকা ব্যয়ে বহু সজলধারা প্রকল্প তৈরি হয়েছিল। বর্তমানে সেগুলোর বেশিরভাগই অকেজো। পানীয় জল পাচ্ছেন না এলাকার মানুষরা। সেগুলো চালু করার ব্যাপারেও প্রশাসনের কোনও উদ্যোগ নেই বলে অভিযোগ।যমশেরপুরের বাসিন্দারা জানান, ২০২০-২১ অর্থবর্ষে করিমপুর ১ ব্লক স্থানীয় হাই স্কুল মাঠের পাশে একটি সোলার পাম্প সেট বসেছিল। খরচ হয়েছিল প্রায় চল্লিশ লক্ষ টাকা। সেখান থেকে এখন জল পাওয়া যায় না। হোগলবেড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের যাত্রাপুর আর্সেনিক অধ্যুষিত। ওই গ্রামে আর্সেনিকে আক্রান্ত হয়ে প্রায় ২৫ জন মানুষ মারা গিয়েছেন। গ্রামের সরোজ মণ্ডল বলেন, গ্রামের মানুষকে আর্সেনিক থেকে বাঁচাতে বছর দশেক আগে একটি সজলধারা তৈরি হলেও দুই-এক মাসের মধ্যেই তা খারাপ হয়ে যায়। বছর পাঁচেক আগে ওই গ্রামে আরও একটি সজলধারা তৈরি হলেও তার জল পানের অযোগ্য। তাই সবাইকেই জল কিনে হয়। কিন্তু গ্রামের বহু গরিব মানুষেরই সে ক্ষমতা নেই।তাঁদের বহু দূর থেকে জল আনতে হয়। করিমপুর গ্রামীণ হাসপাতাল চত্বরে ৫টি সজলধারার মধ্যে ৪টি খারাপ।শিকারপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রেওরয়েছে ৪টি সজলধারা। একেকটি সজলধারা তৈরি করতে সরকারের খরচ হয়েছিল চল্লিশ লক্ষ টাকা। অথচ সেগুলোর মধ্যে ৩টি সজলধারা অনেক দিন আগে থেকে খারাপ হয়ে গিয়েছে। করিমপুর ফার্মের মধ্যেও রয়েছে অকেজো সজলধারা। করিমপুরের নাটনা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একমাত্র সজলধারা অকেজো হয়ে আছে। ওই এলাকার অভিভাবকদের অভিযোগ, ওই সজলধারায় জল তো পাওয়া যায়ই না। কিন্তু অকেজো সজলধারার লোহার কাঠামোভেঙে যেকোনও সময়ে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। ওই স্কুল কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসনের খুব শীঘ্র ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।অভিযোগ, স্কুলকে বারবার জানিয়েওকাজ হয়নি। স্থানীয়রা জানান, শুধু এই স্কুল বা পঞ্চায়েত এলাকায় নয়, ব্লকের বিভিন্ন গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় বহু টাকা খরচ করে সরকার একসময় এই সজলধারা তৈরি করলেও তার বেশিরভাগইবন্ধ হয়ে পড়ে আছে। কোথাও বিদ্যুতের বিল জমা না দেওয়ার কারণে বন্ধ, কোথাও দেখভালের অভাবে। কারণ ওগুলো নির্দিষ্ট সময় অন্তর সার্ভিসিং করতে হয়। অথচ একবার তৈরি হলে আর সেগুলোর দিকে কেউ ঘুরেও তাকায় না। ফলে কোথাও সম্পূর্ণ বন্ধ আবার কোথাও জল পাওয়া গেলেও তা পানের অযোগ্য। সমস্যায় ভুগতে হয় আমজনতাকে। করিমপুর ১ বিডিও দেবদত্ত চক্রবর্তী বলেন, প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় বন্ধ হয়ে যাওয়া সজলধারার ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।