• রাজ্যে নজির, পড়ুয়ার চাপ সামলাতে দ্বিতীয় ক্যাম্পাস হচ্ছে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের
    বর্তমান | ১৭ ডিসেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: নজিরবিহীন। আর পাঁচটা সরকারি প্রাইমারি স্কুল যখন পড়ুয়ার অভাবে ধুঁকছে, ঠিক তখনই জলপাইগুড়ির সদর বালিকা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছাত্রীদের চাপ সামলাতে তৈরি হচ্ছে দ্বিতীয় ক্যাম্পাস। আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকেই ওই ক্যাম্পাসে ক্লাস শুরুর চেষ্টা চালানো হচ্ছে বলে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ সূত্রে খবর।


    বর্তমানে জলপাইগুড়ি সদর বালিকা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ুয়ার সংখ্যা ১৩০৬ জন। যা উত্তরবঙ্গ তো বটেই, গোটা রাজ্যে নজিরবিহীন বলে দাবি স্কুল কর্তৃপক্ষের। প্রাথমিক স্কুলের সঙ্গেই হাইস্কুল থাকায় পড়ুয়ার এই বাড়তি চাপ বলে দাবি শিক্ষা মহলের একাংশের। যদিও স্কুল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, ধরাবাঁধা নিয়মের বাইরে বেরিয়ে পাঠ দিয়ে থাকে তারা। সেকারণেই ছাত্রীর সংখ্যার নিরিখে বেসরকারি স্কুল কিংবা আর পাঁচটা সরকারি স্কুলকে টেক্কা দেয় জলপাইগুড়ি সদর বালিকা প্রাথমিক বিদ্যালয়।


    জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শক শ্যামলচন্দ্র রায় বলেন, জলপাইগুড়ি সদর বালিকা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১৩০০-র বেশি পড়ুয়া। অথচ, স্কুলে ক্লাসরুমের সংখ্যা ১৬টি। শিক্ষিকা রয়েছেন ৩৫ জন। যে সংখ্যক পড়ুয়া রয়েছে, তাতে আরও ক্লাসরুম প্রয়োজন। সেকারণেই দ্বিতীয় ক্যাম্পাস চালুর চেষ্টা চলছে। করলা নদীর একপাড়ে জলপাইগুড়ি সদর বালিকা প্রাথমিক বিদ্যালয়। নদীর অন্যপাড়েই রয়েছে শিশুমহল প্রাথমিক ও শিশুমহল জুনিয়র স্কুল। এগুলি ‘ডে স্কুল’। সেখানে মর্নিংয়ে সদর বালিকা প্রাথমিকের ক্লাস করানো যায় কি না, খতিয়ে দেখা হচ্ছে।


    সম্প্রতি জলপাইগুড়ি সদর বালিকা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আচমকা পরিদর্শন করেন হাইকোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু। সেসময় পড়ুয়ার সংখ্যার নিরিখে ক্লাসরুমের সঙ্কটের বিষয়টি নজরে পড়ে তাঁর। এরপরই ওই স্কুল কর্তৃপক্ষ সহ জেলার প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শক এবং প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যানকে বৈঠকে ডাকেন বিচারপতি। ছাত্রীদের সুবিধার্থে জলপাইগুড়ি সদর বালিকা প্রাথমিকের দ্বিতীয় ক্যাম্পাস তৈরির প্রস্তাব দেন তিনি। সেইমতো এগচ্ছে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ। ইতিমধ্যেই সংসদের চেয়ারম্যান লক্ষমোহন রায় সদর বালিকা প্রাথমিকের প্রস্তাবিত দ্বিতীয় ক্যাম্পাস পরিদর্শন করেছেন। তবে এ ব্যাপারে এখনই তিনি স্পষ্ট করে কিছু বলতে নারাজ। সোমবার বিষয়টি নিয়ে জানতে চাওয়া হলে লৈক্ষ্যমোহনবাবু বলেন, এখনও চূড়ান্ত কিছু হয়নি। জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শক অবশ্য বলেছেন, জেলায় প্রাথমিক স্কুলগুলিতে প্রধান শিক্ষক নিয়োগ চলছে। এ কাজ মিটলেই সদর বালিকা প্রাথমিকের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের বিষয়টি চূড়ান্ত করা হবে।


    তবে দ্বিতীয় ক্যাম্পাস নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে নারাজ জলপাইগুড়ি সদর বালিকা প্রাথমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক অরূপ দে। এদিন তিনি বলেন, এনিয়ে আমার কিছু বলার নেই। বিষয়টি জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শক ও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান দেখছেন।


    এদিকে সূত্রের খবর, সদর বালিকা প্রাথমিকের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের বিরোধিতা করে একাংশের অভিভাবক জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যানকে চিঠি দিয়েছেন।  নিজস্ব চিত্র।
  • Link to this news (বর্তমান)