হাওড়া-শিয়ালদহ মেট্রো চালু হলে যাত্রী কমে অর্ধেক হবে, চিন্তায় বাস মালিকরা
বর্তমান | ১৭ ডিসেম্বর ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: বউবাজারের জট কেটেছে। এবার ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো রুটের শিয়ালদহ থেকে এসপ্ল্যানেড যুক্ত হওয়া স্রেফ সময়ের অপেক্ষা। দেশের মধ্যে প্রথম নদীর নীচ দিয়ে চলাচল করে এই মেট্রো। এবার সেটি আরও একটি মাইল ফলকের দোরগোড়ায়। ভারতের অন্যতম ব্যস্ত দুই রেল স্টেশন হাওড়া ও শিয়ালদহের যোগসূত্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে চলেছে এই করিডর। সল্টলেক সেক্টর ফাইভ থেকে হাওড়া ময়দান রুটে যাত্রী পরিষেবা চালুর দিনক্ষণ ঘিরে যাত্রীদের আগ্রহ ইতিমধ্যেই তুঙ্গে উঠেছে। তবে মাথায় হাত পড়েছে বেসরকারি বাস মালিকদের। মেট্রোর জন্য যাত্রী কমে যাওয়ার আশঙ্কায় ভুগছেন তাঁরা। ওয়াকিবহাল মহলের বক্তব্য, যাত্রী কমতে থাকলে বাস রুটগুলি রুগ্ন হয়ে পড়বে। ধারাবাহিক লোকসান হবে। একাধিক বেসরকারি বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এর ফলে বহু পরিবহণ কর্মী ও শ্রমিক কর্মহীন হয়ে পড়বেন। এর পাশাপাশি জানা গিয়েছে, হাওড়া-শিয়ালদহ রুটে সরকারি বাসের সংখ্যাও আগামী দিনে কমিয়ে আনা হতে পারে। সরকারি কর্তাদের দাবি, কিছুদিন যাত্রী সংখ্যা ও আয়-ব্যয়ের হিসেব দেখে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
জানা গিয়েছে, হাওড়া-শিয়ালদহ এই দুই রেল স্টেশন জুড়েছে চার কিলোমিটার রাজপথ। এই রুটের সবথেকে পুরনো রুট ৪৪। তারপর ৭১, ৭২, ২৮ সহ একাধিক জনপ্রিয় রুট শুরু হয়। পরিবহণ দপ্তরের একটি সূত্রের দাবি, হাওড়া-শিয়ালদহ রুটে নতুন করে পারমিট দেওয়ার ঘোষণা হলে মালিকরা বাস নামানোর জন্য হামলে পড়েন। কারণ প্রতিদিন প্রায় ১০ লাখেরও বেশি যাত্রী হাওড়া-শিয়ালদহ স্টেশনে নেমে শহরের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়েন। ফের তাঁরা ট্রেন ধরতে দুই স্টেশনে ফিরে আসেন। ফলে এই রুটে কিংবা এই দুই স্টেশন হয়ে যাতায়াত করা রুটের বাসগুলিতে যাত্রী উপচে পড়ে। অন্যান্য রুটে যাত্রী কমে যাওয়ার ছবি প্রকট হলেও এই রুটে বাস চালিয়ে লাভ মোটামুটি নিশ্চিত। তাই এতদিন হাওড়া-শিয়ালদহ রুট ছিল অত্যন্ত জনপ্রিয়। কিন্তু মেট্রো চালু হলে এই রুট তার গৌরব হারাবে।
সিটি সাবার্বান বাস সার্ভিসেসের সাধারণ সম্পাদক টিটু সাহা বলেন, ‘করোনার পরের পরিস্থিতিতে বেসরকারি বাস প্রায় ২০ শতাংশ যাত্রী হারিয়েছে। এবার ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো পুরোপুরি চালু হয়ে গেলে আরও ৩০ শতাংশ যাত্রী কমবে। সব মিলিয়ে আগের তুলনায় প্রায় অর্ধেক যাত্রী হারাবে।’ তাঁর আশঙ্কা, বেসরকারি বাস পরিবহণ ব্যবস্থা কার্যত মুখ থুবড়ে পড়বে। রাজ্য সরকারকে বিকল্প পরিকল্পনা করার আর্জি জানিয়েছেন তিনি। প্রদীপের নীচে অন্ধকার গাঢ় হচ্ছে বলে আশঙ্কা।