• জঞ্জাল সাফ নিয়ে নিরুত্তাপ কেন বিরোধীরা, চুঁচুড়াজুড়ে উঠছে প্রশ্ন
    বর্তমান | ১৭ ডিসেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, চুঁচুড়া: সামান্য সুযোগ পেলেই রাজ্য সরকারের বিরোধিতায় রাস্তায় নামে বিরোধীরা। কিন্তু হুগলির চুঁচুড়ায় দেখা যাচ্ছে উলটপুরাণ। গত ১৬ দিন ধরে একটা শহর নরকে পরিণত হলেও শাসকপক্ষের মতোই নির্বিকার বিরোধীপক্ষ। সাফাই না হওয়ায় গোটা শহর আবর্জনায় ভরে গিয়েছে। বহু জায়গায় রাস্তাও চলে গিয়েছে আবর্জনার দখলে। এই অচলাবস্থা মিটবে কবে, তার স্পষ্ট ইঙ্গিত মেলেনি এখনও। এই অবস্থায় বিরোধী শিবির, বলা ভালো, রাম থেকে বাম কেউই রাস্তায় নেমে প্রতিবাদে শামিল হয়নি। এমনকী, নাগরিক পরিষেবার এই হাতেগরম ইস্যু থাকলেও আগামী দিনে যে তাদের আন্দোলনে নামতে দেখা যাবে, এমন আভাস কোনও শিবিরই দিতে পারেননি। শাসকদলের উদাসীনতা নিয়ে সরব হওয়া নাগরিক মহল বিরোধীদের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে।


    এ নিয়ে বিজেপি নেতৃত্ব সরাসরি মন্তব্য করতে চায়নি। তবে তাদের অন্দরমহল থেকে কিছু তথ্য উঠে এসেছে। চুঁচুড়া পুরসভায় অস্থায়ী কর্মীদের আন্দোলন পরিচালনা করছে বামেরা। সেকারণে নাগরিকদের সমস্যা নিয়ে মাথা ঘামাতে নারাজ বিজেপি। বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, পুরসভার সঙ্কটের মূলে আছে তৃণমূলের অন্দরের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। তাই গেরুয়া পার্টি সুযোগের অপেক্ষায় ওত পেতে বসে আছে। দলের নেতৃত্ব সদস্য সংগ্রহ অভিযান নিয়ে ব্যস্ততার অজুহাত খাড়া করছে। বিজেপির রাজ্য নেতা স্বপন পাল বলেন, দলের নেতাকর্মীরা এখন সদস্য সংগ্রহ অভিযানে ব্যস্ত। তাই এখনই হয়তো রাস্তায় নেমে আন্দোলনের অবস্থা নেই। নাগরিক সমস্যা ও পুরকর্মীদের আন্দোলনের প্রতি আমাদের সহানুভূতি আছে। তবে পুরসভা ও প্রশাসন বর্তমান পরিস্থিতিতে যে চূড়ান্ত ব্যর্থ, তা স্পষ্ট।


    সিপিএম নেতা মনোদীপ ঘোষ বলেন, পুরসভার সার্বিক ব্যর্থতা নিয়ে আন্দোলনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। পুরসভার অস্থায়ী কর্মীদের পেটে ভাত জুটছে না। তাই তাঁরা আন্দোলনে যেতে বাধ্য হয়েছেন। আবার, নাগরিকদেরও সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। পুরসভার ব্যর্থতার কারণেই সঙ্কট তৈরি হয়েছে। নাগরিকরা বলছেন, শাসকদল নির্বিকার। পাশাপাশি বিরোধীরাও রাজনৈতিক স্বার্থ নিয়ে ভাবছে। এর অর্থ নাগরিকদের প্রতি দায়বদ্ধতা, মূল্যবোধের রাজনীতির কথা কোনও পক্ষই ভাবে না। সোশ্যাল মিডিয়ায় ইতিমধ্যেই নাগরিক মঞ্চ তৈরির পরিকল্পনা চলছে। সেই মঞ্চের তত্ত্বাবধানেই পাল্টা আন্দোলন হবে।


    অস্থায়ী কর্মীদের ভাতা দিতে পারেনি চুঁচুড়া পুরসভা। তার জেরে গত ১ ডিসেম্বর থেকে কর্মবিরতি শুরু হয়েছে। ১৬ দিনের লাগাতার কর্মবিরতির জেরে পুরসভার অফিসে চূড়ান্ত অরাজকতা তৈরি হয়েছে। একইভাবে পুরসভা থেকে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন। সব মিলিয়ে ভাগাড়ে পরিণত হওয়া চুঁচুড়ায় বেনজির অরাজক অবস্থা তৈরি হয়েছে।  নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)