• নিম্নচাপে ফের আটকালো বাংলার শীত, সপ্তাহশেষে কলকাতা–সহ নয় জেলার বৃষ্টি
    এই সময় | ১৭ ডিসেম্বর ২০২৪
  • এই সময়: উত্তর–পশ্চিম ভারত দিয়ে অবাধে ঢুকে আসা ঠান্ডা এবং শুকনো বাতাসের পথ ফের আটকালো বঙ্গোপসাগরে। সমুদ্রের দক্ষিণ–পূর্ব প্রান্তে তৈরি নিম্নচাপই আরও একবার কাচের দেওয়ালের মতো বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে উত্তুরে হাওয়ার। তার প্রভাবেই সামনের কয়েক দিন দক্ষিণবঙ্গের সব জেলার রাতের তাপমাত্রা কয়েক ডিগ্রি বেড়ে যাওয়ার পূর্বাভাস দিয়েছেন আবহবিদরা।

    সপ্তাহের শেষ দিকে দক্ষিণবঙ্গের কলকাতা–সহ ন’টি জেলায় হা‍লকা বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে বলেও জানিয়েছেন আবহবিদরা। এই জেলাগুলোর মধ্যে রয়েছে হাওড়া, হুগলি, উত্তর ও দক্ষণ ২৪ পরগ‍না, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম এবং পূর্ব বর্ধমান। তবে বড়দিনের আবহে নতুন করে পারদপতন আশা করা হচ্ছে।

    মাত্র ২৪ ঘণ্টাতেই ভোলবদল। রবিবার ভোররাতে দক্ষিণবঙ্গের অন্তত দশটি জায়গার তাপমাত্রা নেমে এসেছিল সিঙ্গল ডিজিটে। কিন্তু একদিন পর অর্থাৎ সোমবার ভোররাতের যে তথ্য প্রকাশ করেছে আলিপুর হাওয়া অফিস, তাতে দেখা গিয়েছে, শুধুমাত্র পুরুলিয়া (৭.১ ডিগ্রি) এবং ঝাড়গ্রামের (৮ ডিগ্রি) সর্বনিম্ন তাপমাত্রাই সিঙ্গল ডিজিটে রয়েছে। একমাত্র দার্জিলিংয়ের সর্বনিম্ন তাপমাত্রাই রবিবার যে জায়গায় ছিল (৫.৬ ডিগ্রি), সেখান থেকে কিছুটা কমেছে (৪ ডিগ্রি)।

    দক্ষিণবঙ্গের রাতের তাপমাত্রা এমন ভাবে বেড়ে যাওয়ার পূর্বাভাস আগেই দিয়েছিল মৌসম ভবন। সোমবার সকালে সংস্থা যে উপগ্রহচিত্র প্রকাশ করেছে, তাতে দেখা গিয়েছে, বঙ্গোপসাগরের দক্ষিণ–পূর্ব প্রান্ত ঘন মেঘের আচ্ছাদনে ঢাকা পড়েছে। মৌসম ভবন জানিয়েছে, এই নিম্নচাপটিও কয়েক দিন আগের নিম্নচাপের মতোই পশ্চিম ও উত্তর–পশ্চিম দিকে মুখ ঘুরিয়ে তামিলনাডু উপকূলের দিকে এগোবে।

    ইতিমধ্যেই তামিলনাডুতে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টির সতর্কতা জারি করা হয়েছে। সমুদ্রে তৈরি বিপুল পরিমাণে জলীয় বাষ্পের প্রভাবেই উত্তর–পশ্চিমের ঠান্ডা ও শুকনো হাওয়া গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ দিয়ে আর সমুদ্রে ঢুকতে পারছে না। এই প্রসঙ্গে আবহাওয়া বিশেষজ্ঞ রবীন্দ্র গোয়েঙ্কা বলেন, ‘দেশের উত্তর–পশ্চিম প্রান্ত দিয়ে ঢুকে আসা ঠান্ডা হাওয়া পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, বিহার এবং ঝাড়খণ্ড পার করে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের উপর দিয়ে সমুদ্রের দিকে চলে যায়। সেই পথ আপাতত রুদ্ধ। সমুদ্র শান্ত হলেই ফের ঠান্ডা হাওয়ায় জাঁকিয়ে শীত অনুভূত হবে।’

    বাংলার — বিশেষ করে দক্ষিণবঙ্গের উপর থেকে আপাতত শীত নজর কিছুটা ঘোরালেও দেশের উত্তর–পশ্চিম, উত্তর ও মধ্য ভাগে এখনও তীব্র শৈত্যপ্রবাহ এবং শৈত্যপ্রবাহের সতর্কতা জারি রয়েছে। সোমবার ভোরে হরিয়ানার হিসারের তাপমাত্রা নেমে গিয়েছিল ০.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। এটাই ছিল এ দিন দেশের সমতলের শীতলতম তাপমাত্রা। উত্তর ভারতের কয়েক জায়গায় ‘শীতল দিন’–এর সতর্কতাও জারি হয়েছে।

    কোনও জায়গার রাতের তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নীচে এবং সর্বোচ্চ তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে ৪.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস কম থাকলে তাকে ‘শীতল দিন’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়।

  • Link to this news (এই সময়)