• যেখানে বাঘিনির ভয়...! টেস্ট নিয়ে চিন্তায় স্কুলপড়ুয়ারা
    এই সময় | ১৭ ডিসেম্বর ২০২৪
  • এই সময়, ঝাড়গ্রাম: পরীক্ষার ভয়ের চেয়েও বড় হয়ে দাঁড়িয়েছে বাঘের ভয়! ঝাড়খণ্ডের চাকুলিয়ার রাজাবাসা সমেত আশপাশের গ্রামের পড়ুয়ারা স্কুলে যাওয়া নিয়ে চিন্তায় পড়েছে। আট দিন পেরিয়ে গেলেও বাঘিনি জ়িনাতকে ধরতে ব্যর্থ বন দপ্তর। গত তিন দিন ধরে জ়িনাত আশ্রয় নিয়েছে রাজাবাসার জঙ্গলে।

    সোমবারও বন দপ্তরের কর্মীরা বাঘিনিকে বাগে আনতে পারেনি। জ়িনাত যেহেতু চাকুলিয়া ব্লকের কালিয়াম গ্রাম পঞ্চায়েতের রাজাবাসার শাল জঙ্গলে রয়েছে, তাই বন দপ্তরের পক্ষ থেকে, এলাকায় মাইকে প্রচার করা হচ্ছে, কেউ যাতে জঙ্গলের দিকে না যান। গবাদি পশুকেও জঙ্গলে পাঠানোর ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে বনদপ্তর। এমনকী, রাজাবাসা গ্রামের প্রধান রাস্তায় যান চলাচলও নিষিদ্ধ করা হয়েছে। যার ফলে ঘুরপথে যেতে হচ্ছে রাজাবাসা–সহ জামুয়া, হাতিভারী, সানমুনিয়া, মাঁচাডিহা, কালিয়াম, মুরবেদা গ্রামের মানুষজনদের।

    জ়িনাতের ভয়ে আশেপাশের স্কুল ও অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলিতে বেশির ভাগ পড়ুয়া অনুপস্থিত। ঝাড়খণ্ড রাজ্যের স্কুলগুলিতে দশম শ্রেণির বোর্ড পরীক্ষার টেস্ট চলছে। রাজাবাসা গ্রামের বাসিন্দা চাকুলিয়ার কেদারনাথ ঝুনঝুনওয়ালা উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির পড়ুয়া দুর্গাপদ নায়ক বলে, ‘গ্রাম থেকে স্কুলের দূরত্ব পাঁচ কিলোমিটার। স্কুলে টেস্ট চলছে। কিন্তু রাস্তা বন্ধ করে দেওয়ায় আমরা ঘুরপথে ক্যানাল পার দিয়ে যাতায়াত করছি। আমাদের এলাকার চার জন পড়ুয়া বোর্ডের পরীক্ষা দিচ্ছে। এ ছাড়াও অন্য ক্লাসের প্রায় ৪০–৫০ জন পড়ুয়া আর স্কুলে যাচ্ছে না বাঘের ভয়ে।’

    রাজাবাসা গ্রামের গৃহবধূ নিয়তি নায়ক বলেন, ‘বাঘ জঙ্গলে থাকায় বন দপ্তর ঘর থেকে বেরোতে নিষেধ করেছে। রুটি-রুজির সন্ধানে কেউ যেতে পারছে না। খুবই সমস্যায় আছি আমরা।’ কালাপাথর গ্রামের বাসিন্দা তথা অধ্যাপক নরেন্দ্র মুর্মু বলেন, ‘আমাদের বাড়ি থেকে এখন প্রায় আট কিমি দূরে রয়েছে জ়িনাত। রাজাবাসা জঙ্গলটি চাকুলিয়া ও কোকপাড়ার স্টেশনের মাঝে পড়ে। ওই জঙ্গলের সঙ্গে জামবনি, গিধনির জঙ্গলের লিঙ্ক রয়েছে। এ দিন গদারোশোল এলাকায় রয়েছে বলে পায়ের ছাপ দেখা গিয়েছে। জিপিএস দিয়ে দিনরাত বনকর্মীরা নজরদারি চালানোয় গতিবিধি বোঝা যাচ্ছে, এটাই রক্ষে!’

    সোমবার সকালে বাঘ ধরার জন্য বন দপ্তরের নতুন টিম রাজাবাসায় পৌঁছায়। তারপর ওই টিমের সদস্যরা সকালে জঙ্গলে প্রবেশ করলেও বিকেল পর্যন্ত তাঁরা জঙ্গল থেকে বের হয়নি।

  • Link to this news (এই সময়)