এই সময়, খড়্গপুর: ডিরেক্টরের অপসারণ চেয়ে বিক্ষোভে উত্তাল হলো খড়্গপুর আইআইটি। ডেপুটি ডিরেক্টর থেকে রেজিস্ট্রারেরও অপসারণ চাওয়া হলো। তা নিয়ে আইআইটি চত্বরে পড়ল পোস্টার। এমনকী, হুঁশিয়ারি দেওয়া হলো, সমাবর্তন অনুষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়ার।
কিন্তু দেশের নাম করা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হঠাৎ কেন এমন বিক্ষোভ?
খড়্গপুর আইআইটি-র মেন ক্যাম্পাসে রয়েছে বহু পুরনো বিসি রায় টেকনোলজি হাসপাতাল। যেখানে আইআইটি-র শিক্ষক, কর্মী থেকে ছাত্রছাত্রীদের চিকিৎসার ব্যবস্থা রয়েছে। পরে বলরামপুরে আইআইটি-র দ্বিতীয় ক্যাম্পাসে (যেটি মেন ক্যাম্পাস থেকে প্রায় ৩ কিলোমিটার দূরে) আরও একটি হাসপাতাল তৈরি করা হয়। যার নাম শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জী সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল।
সেখানে ২০২১ সাল থেকে শুধু আউটডোর চালু হয়েছিল। সেখানে দেখাতে পারেন সাধারণ মানুষও। চলতি মাসের ৩০ তারিখ সমাবর্তন অনুষ্ঠানের আগে সেই হাসপাতালটি পুরো দমে চালু করার উদ্যোগ নিয়েছেন আইআইটি কর্তৃপক্ষ। সূত্রের খবর, অত্যাধুনিক এই হাসপাতালে বি সি রায় টেকনোলজি হাসপাতাল থেকে কিছু সরঞ্জাম নিয়ে যাওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়। কয়েক জন চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীকেও স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এই ঘটনার প্রেক্ষিতেই এ দিনের বিক্ষোভ ও আন্দোলন। তাতে সামিল হয়েছেন পেনশনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরা। তাঁদের অভিযোগ, আসলে দু’টি হাসপাতালকে জুড়ে দেওয়া হচ্ছে। বি সি রায় পরে একেবারে বন্ধ করে দেওয়া হতে পারে। ফলে ক্যাম্পাসের লোকেদের চিকিৎসার জন্য দূরে যেতে হবে।
পেনশনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য অম্বরকান্তি কুমার বলেন, ‘এই ধরনের অন্যায় বরদাস্ত করব না। প্রয়োজনে সমাবর্তন অনুষ্ঠানও বন্ধ করে দেবো।’
অন্য দিকে, শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জী সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে আবার বিক্ষোভ দেখিয়েছেন স্থানীয়রা। তাঁদের মতে, আইআইটি দুই হাসপাতালকে এক করে দিলে, তাঁরা চিকিৎসার সুযোগ পাবেন না।
প্রেস বিবৃতি জারি করে আইআইটি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, বলরামপুরের হাসপাতালটিতে উন্নত যন্ত্রপাতি ও আধুনিক অপারেশন থিয়েটার রয়েছে। আপাতত ৫০ শয্যার এই হাসপাতালে স্থানীয়রা আগের মতোই চিকিৎসার সুযোগ পাবেন। যাঁদের বি সি রায় থেকে স্থানান্তরিত করা হবে, তাঁদের বেতন কাঠামো একই থাকবে। বি সি রায় বন্ধ করা হচ্ছে না। সেটি প্রাথমিক চিকিৎসাকেন্দ্র হিসেবে কাজ করবে। কর্তৃপক্ষের দাবি, দুই হাসপাতালের দূরত্ব বেশি নয়। ফলে যাতায়াতে খুব বেশি খরচ হবে না। সে জন্য টোটোরও ব্যবস্থা করবে আইআইটি। এই হাসপাতাল চালুর হলে সাধারণ অপারেশনের জন্য আর আগের মতো কলকাতা যেতে হবে না। তা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালেই হবে।