• নাইলনের ব্যাগ হাতে সন্দেহজনকভাবে ঘোরাঘুরি, চেপে ধরতেই উদ্ধার শিকারী ফ্যালকন...
    আজকাল | ১৭ ডিসেম্বর ২০২৪
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: চারটি বহুমূল্যের শিকারী ফ্যালকন উদ্ধার বর্ধমানে। শুক্রবার সকালে বর্ধমান স্টেশনে একটি ট্রেন থেকে তাদের উদ্ধার করা হয়। বর্তমানে বনদপ্তরের হেফাজতে রাখা হয়েছে পাখিগুলিকে। পর্যবেক্ষণে রাখার পর ছেড়ে দেওয়া হবে বলেই জানানো হয়েছে। এই ঘটনায় গ্রেপ্তার এক। 

    জানা গিয়েছে, বর্ধমান স্টেশনে নজরদারি চালানোর সময় পাঁচ নম্বর প্লাটফর্মে এক ব্যক্তিকে দু'হাতে দুটি নাইলনের ব্যাগ নিয়ে ঘুরতে দেখে আরপিএফ কর্মীদের সন্দেহ হয়। ওই ব্যক্তিকে আরপিএফ পোস্টে নিয়ে এসে ব্যাগ তল্লাশি করতেই দুটি ব্যাগের ভিতর দুটি খাঁচায় মোট চারটি পাখি দেখতে পাওয়া যায়। এরপর মোহম্মদ সোনু নামে ওই ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করে আরপিএফ জানতে পারে, বিহারের পাটনা থেকে ডাউন রাজেন্দ্র নগর এক্সপ্রেসে শুক্রবার সকাল ৫টা ১০ নাগাদ বর্ধমানে নামে সে। এখানেই হাতবদল করার কথা ছিল। কিন্তু তার আগেই পুলিশের জালে ধরা পড়ে সে। 

    প্রাণীপ্রেমিক অর্ণব দাস জানান, পেরিগ্রিন ফ্যালকন একটি বিরল প্রজাতির দ্রুতগতির শিকারী পাখি হিসেবেই পরিচিত। পৃথিবীর অনেক দেশে এদের পাওয়া যায়। এরা অনেক উঁচু জায়গায় বা গভীর জঙ্গলের উঁচু গাছে থাকে। এই পাখি মানব সভ্যতার যুগ যুগ ধরে ধর্মীয়, রাজকীয় বা জাতীয় প্রতীক হিসাবেও নানান দেশে ব্যবহৃত হয়েছে। পেরিগ্রিন ফ্যালকন তার গতির জন্য বিখ্যাত। এটি ঘণ্টায় ৩২০ কিমি বা ২০০ মাইল -এর বেশি গতিতে পৌঁছাতে পারে তার শিকারের সময়। এই সহজাত প্রবৃত্তির কারণে এই গ্রহের দ্রুততম প্রাণী হিসাবে পরিচিত এই পাখি।

    পেরিগ্রিন ফ্যালকন তার শক্তিশালী শিকার করার ক্ষমতা, উচ্চ প্রশিক্ষণযোগ্যতা, বহুমুখীতা এবং বন্দী প্রজননের জন্য একটি নামী ফ্যালকনি পাখি। পেরেগ্রিনরা মূলত শীতল তুন্দ্রা থেকে উষ্ণ মরুভূমিতে, সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে পাহাড়ের উচ্চতায় বাস করে। কিছু পেরিগ্রিন ফ্যালকন শীতকালে আর্কটিকের তাদের বাসা তৈরির মাঠ থেকে দক্ষিণ আমেরিকায় চলে যায়। সঙ্গম এবং ডিম পাড়ার সময় হলে আবার তারা উত্তরে ফেরার যাত্রা করে। পেরিগ্রিনরা বাসা বানায় না। তারা সাধারণত কিছু পাথরের মধ্যে একটি অগভীর জায়গা খুঁজে নেয়। স্ত্রী পেরিগ্রিন একবারে দুই থেকে চারটি ডিম পাড়ে। ডিম ফুটে বাচ্চা বের হওয়া পর্যন্ত বাবা-মা প্রায় একমাস ধরে ডিম ফুটিয়ে থাকে। পেরিগ্রিন ছানারা বাসাতেই ছয় সপ্তাহ পর্যন্ত থাকে, এই সময়ের মধ্যে তারা উড়তে শিখে যায়। বেশি দামের কারণেই এই প্রজাতির পাখির কেনাবেচা চলে।
  • Link to this news (আজকাল)