সারা রাজ্যে আবাস যোজনা প্রকল্পের প্রথম কিস্তির টাকা মঙ্গলবার উপভোক্তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পাঠানো শুরু হতে চলছে। জানা গিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নবান্ন সভাঘর থেকে আনুষ্ঠানিক ভাবে এই প্রকল্পের টাকা দেওয়ার সূচনা করবেন। এই অনুষ্ঠানে প্রতি জেলা থেকে দু’জন করে নির্বাচিত উপভোক্তা উপস্থিত থাকবেন। মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের হাতে এই প্রকল্পের প্রথম কিস্তির টাকা তুলে দেবেন।
এ দিন থেকেই রাজ্যের প্রায় ১২ লক্ষ উপভোক্তার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে আবাসের টাকা পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যাবে। রাজ্যের পঞ্চায়েত দপ্তরের এক আধিকারিক বলেন, ‘এ দিনই অনেকে টাকা পেয়ে যাবেন।’ জানা গিয়েছে, এর মধ্যে ১১ লক্ষ সরাসরি আবাস উপভোক্তা। বাকি এক লক্ষ হলেন তাঁরা, যাঁদের বাড়ি সাম্প্রতিক বিভিন্ন প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাঁদের বাড়ি তৈরির টাকা দেওয়ার কথা মুখ্যমন্ত্রীই ঘোষণা করেছিলেন।
গ্রামীণ এলাকার গরিব মানুষের জন্য বাড়ি তৈরি করে দিতে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার এই প্রকল্পের টাকা যদিও কেন্দ্রীয় সরকার দেয়নি। রাজ্য সরকার নিজের টাকায় এই প্রকল্প কার্যকর করছে। শহরঞ্চলের গরিব মানুষের জন্য ঘর তৈরি করে দিতে রাজ্য সরকারের ‘বাংলার বাড়ি’ প্রকল্প রয়েছে। আর এই প্রকল্পের নাম দেওয়া হয়েছে ‘বাংলার বাড়ি (গ্রামীণ)’।
আবাসের তালিকা পুনরায় যাচাইয়ের নির্দেশ দিয়েছিল নবান্ন। কোন কোন ক্ষেত্রে এই যাচাইয়ের কাজ করতে হবে তাও স্পষ্ট করা হয়েছিল। রাজ্যই এ ক্ষেত্রে এখন ১০০ শতাংশ টাকা দিচ্ছে। রাজ্যের সব জেলায় ব্লকে চলেছে সমীক্ষা। প্রশাসনের কর্তারা দিনরাত এক করে সেই কাজ করেছেন। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা প্রকল্পের তালিকায় ভুয়ো নাম থাকার অভিযোগ তুলে কেন্দ্র প্রায় দু’বছর ধরে বাংলার বরাদ্দ আটকে রেখেছে বলে অভিযোগ। রাজ্য নিজের বরাদ্দ থেকে গ্রামীণ এলাকায় গরিব মানুষের বাড়ি তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে। ওই কর্তা বলেন, ‘ভেরিফিকেশনের পর যাঁদের রেজিস্ট্রেশন হয়ে গিয়েছে, তাঁরা এ দিন টাকা পেয়ে যাবেন।’
তিনটি কিস্তিতে উপভোক্তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পাঠানো হবে। প্রথম কিস্তিতে ৬০ হাজার, দ্বিতীয় কিস্তিতে ৪০ হাজার এবং তৃতীয় ও শেষ কিস্তিতে ২০ হাজার টাকা। ২০ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রথম কিস্তির টাকা দেওয়ার টার্গেট নিয়েছে নবান্ন।
ট্যাব কাণ্ডের মতো এই টাকা বিলির ক্ষেত্রেও উপভোক্তারা যাতে প্রতারণার শিকার না হন, সে জন্য পঞ্চায়েত ও গ্রামান্নোয়ন দপ্তর বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করেছে। প্রতিটি উপভোক্তার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ভ্যালিডেট করানো হয়েছে। অর্থাৎ ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট যাচাই করা হয়েছে।