• ‘শুনানিতে থাকতে পারব? কেউ স্পষ্ট বলেনি’
    আনন্দবাজার | ১৭ ডিসেম্বর ২০২৪
  • এক মাসের বেশি সময় ধরে শিয়ালদহ আদালতে আর জি কর মামলার শুনানি চলছে। কিন্তু রুদ্ধদ্বার সেই শুনানিতে তাঁরা প্রতিদিন উপস্থিত থাকতে পারবেন কি না, তা নিয়ে সঠিক ভাবে কেউই তাঁদের কিছু বলেননি। বরং নিজেদের আইনজীবী এবং সিবিআই— উভয়পক্ষের কাছেই সেই প্রশ্নের সদুত্তরের বদলে যা মিলেছে, তাতে তাঁরা বিভ্রান্ত হয়েছেন। সোমবার দ্বিতীয় বারের জন্য শিয়ালদহ অতিরিক্ত দায়রা বিচারকের আদালত কক্ষে উপস্থিত হওয়ার আগে এমনই অভিযোগ করলেন তরুণী চিকিৎসকের বাবা। বললেন, ‘‘শুনানিতে উপস্থিত থাকতে না পারার কারণেই আমরা অনেকটা পিছিয়ে গিয়েছি। বুঝতেই পারিনি, ভিতরে ঠিক কী চলছে!’’

    এ দিন শুনানি কক্ষে উপস্থিত ছিলেন চিকিৎসক-পড়ুয়ার বাবা। আদালতে গেলেও শুনানি কক্ষে ঢোকেননি মা। সূত্রের খবর, এক মাস ধরে শুনানি পর্ব চললেও নির্যাতিতার মায়ের সাক্ষ্য নেওয়া হয়নি। গত ১১ নভেম্বর থেকে শিয়ালদহ আদালতে এই খুন ও ধর্ষণের মামলার শুনানি শুরু হয়েছে। প্রথম দিনেই নির্যাতিতার বাবাকে সাক্ষ্য দিতে আদালতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তাঁর দাবি, ‘‘পুলিশ সে সময়ে সঙ্গে যেতে চাইলেও সিবিআই বলে, ‘আমরাই পাহারা দিয়ে নিয়ে যাব।’ আমাকে ছাড়া আর কাউকে ওরা ভিতরে নিয়ে যায়নি।” কিন্তু তাঁদের মেয়ের মামলার শুনানিতে কেন তাঁরা উপস্থিত থাকতে পারছিলেন না? উত্তরে নির্যাতিতার বাবা বলেন, “সব সময়েই আমাদের পরোক্ষ ভাবে যেতে বারণ করা হত।”

    সিবিআই শুধু নয়, আগের যে আইনজীবীরা নিম্ন আদালতে মামলাটি লড়ছিলেন, তাঁরাও শুনানিতে উপস্থিত না থাকার পরামর্শই দিতেন বলে অভিযোগ নির্যাতিতার বাবার। এ দিন তিনি বলেন, “আমরা যে শুনানিতে উপস্থিত থাকতে পারি, সেটাই বুঝতে ও জানতে পারিনি। তাই প্রায় এক মাস ধরে রুদ্ধদ্বার শুনানিতে কী হয়েছে, কে কী বলেছেন, তা নিয়ে আমরা পুরোটাই অন্ধকারে।” সূত্রের খবর, শুনানিতে এমন কিছু তথ্য-প্রমাণ দেখানো হতে পারে, যা নির্যাতিতার বাবা-মা সহ্য করতে পারবেন না বলেই সিবিআই ও তাঁদের তৎকালীন আইনজীবীদের তরফে বলা হয়েছিল।

    গত ১১ ডিসেম্বর জানা যায়, নির্যাতিতার পরিবারের হয়ে আর মামলা লড়তে চান না বৃন্দা গ্রোভার। তখন সিনিয়র ও জুনিয়র চিকিৎসকদের তরফে নিম্ন আদালতের জন্যও নতুন আইনজীবী স্থির করা হয়। পরের দিন, অর্থাৎ ১২ ডিসেম্বর সেই নতুন আইনজীবী রাজদীপ হালদার ও অর্মত্য দে-র সঙ্গে শিয়ালদহ আদালতে হাজির হয়েছিলেন নির্যাতিতার বাবা-মা। নিজের সাক্ষ্যদান ছাড়া সে দিনই প্রথম শুনানিতে উপস্থিত ছিলেন বাবা। আর মায়ের ক্ষেত্রে সে দিনই প্রথম শুনানি কক্ষে ঢোকা। সূত্রের খবর, নতুন আইনজীবীদের তরফে বিচারকের কাছে নির্যাতিতার বাবা-মায়ের উপস্থিতির আবেদন জানানো হয়। বিচারক সেটি মঞ্জুর করেন। যদিও বিচারের স্বার্থে রুদ্ধদ্বার শুনানির কোনও বিষয় তাঁরা বাইরে বলতে পারবেন না বলেও এ দিন স্পষ্ট জানিয়ে দেন নির্যাতিতার বাবা-মা। সঠিক পথে তদন্ত ও ন্যায় বিচারের জন্য দেশের সর্বোচ্চ তদন্তকারী সংস্থা ও বিচার ব্যবস্থার উপরে তাঁরা এখনও আশা ও ভরসা রাখছেন বলেও জানিয়েছেন।

  • Link to this news (আনন্দবাজার)