গত কয়েক বছরে শহরের বায়ুদূষণের মাত্রা ক্রমশ ভয় ধরিয়েছে। শহরের রাস্তায় গাড়ির সংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বাতাসে কার্বন কণা, ধূলিকণা ও ক্ষতিকর গ্যাসের পরিমাণ বিপজ্জনক ভাবে বেড়েছে বলে অভিযোগ। শহরের এই বায়ুদূষণের মাত্রা কমাতে তথা কলকাতার ‘ফুসফুস’ ময়দানকে সুরক্ষিত রাখতে কলকাতা পুরসভার তরফে ‘ওয়াটার স্প্রিঙ্কলার’ ব্যবহার করা শুরু হয়। আনা হয় ‘ওয়াটার ক্যানন’। মূলত, ধুলো কমাতে রাস্তায় ধোঁয়া দেওয়ার পাশাপাশি বাতাসে জলের কণা মিশিয়ে দেওয়া হয় এই দুই যন্ত্রের সাহায্যে। কয়েক হাজার লিটার জল ভর্তি ট্যাঙ্কার থেকে বিশেষ প্রযুক্তির মাধ্যমে ‘কামানের’ মতো জলের ছোট ছোট কণা বাতাসে ছেটানো হয়। শহরের বড় রাস্তার পাশাপাশি ময়দান এলাকায় নিয়মিত অন্তত দু’বার এই গাড়ি ঘুরতে দেখা যায়।
ময়দান এলাকায় বাইকচালক থেকে শুরু করে কর্তব্যরত পুলিশকর্মীরা জানাচ্ছেন, দিনের ব্যস্ত সময়ে ওই এলাকা দিয়ে পুরসভার গাড়িগুলি চালানো হয়। সেগুলি থেকে বাতাসে জলের কণা ছেটানো হলেও সেই জলে রাস্তা ভিজে যায়। এ দিকে, খটখটে রোদের মধ্যে ময়দানের বিস্তৃত রাস্তা দিয়ে দ্রুত গতিতে আসা বাইকগুলি হঠাৎ ভিজে রাস্তায় এসে পিছলে গিয়ে দুর্ঘটনার মুখে পড়ে। কর্তব্যরত এক পুলিশকর্মীর কথায়, ‘‘ছোটখাটো দুর্ঘটনা বলে বহু ক্ষেত্রে তা নথিভুক্ত হয় না। আমাদের সামনেও বহু সময়ে দুর্ঘটনা ঘটলেও কিছু করার থাকে না।’’
যদিও পুলিশকর্মী থেকে বাইকচালকদের একাংশ এই ধরনের দুর্ঘটনার জন্য দিনের ব্যস্ত সময়ে পুরসভার এই উদ্যোগকেই দায়ী করছেন। তাঁদের অভিযোগ, যে সময়ে শহরের রাস্তায় গাড়ির চাপ বেশি, তখনই নিয়ম করে এই জল ছেটানোর কাজ করা হয়। এক বাইকচালক সুশান্ত মণ্ডলের কথায়, ‘‘সকালের দিকে রাস্তায় গাড়ির চাপ কম থাকে। দুপুরেও একই অবস্থা থাকে। কিন্তু গাড়ির চাপ যখন বেশি, তখনই ময়দান বাঁচানোর কাজ চলে। অন্য সময়ে তা করলে মনে হয়, দুর্ঘটনা এড়ানো যেত।’’
পুরকর্তারা যদিও জল ছেটানোর কারণে দুর্ঘটনার কোনও অভিযোগ পাননি বলে জানাচ্ছেন। এমনকি, রাস্তায় যখন গাড়ির চাপ অপেক্ষাকৃত কম থাকে, তখনই এই কাজ করা হয় বলে দাবি তাঁদের। এক মেয়র পারিষদের কথায়, ‘‘এই ধরনের অভিযোগ কানে আসেনি। তবে চেষ্টা করা হয়, রাস্তায় গাড়ির ব্যস্ততা যখন কম থাকে, তখনই এই কাজগুলি করতে। রাস্তা গাড়িহীন করে তো এই কাজ করা সম্ভব নয়।’’