মঙ্গলবার থেকে বাংলা আবাস প্রকল্পের টাকা দেওয়া শুরু হলো। এ দিন নবান্ন থেকে এই প্রকল্পের উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আনুষ্ঠানিকভাবে ৪২ জনের হাতে অনুমোদনপত্র তুলে দেন তিনি। বাংলার বাড়ি (গ্রামীণ) প্রকল্পে রাজ্যের মোট ১২ লক্ষ যোগ্য পরিবারকে বাড়ি তৈরির জন্য প্রথম কিস্তির ৬০ হাজার টাকা করে দেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি। সঙ্গে বাকিরাও (আবেদনকারী) কবে টাকা পাবেন, তাও জানাতে ভোলেননি মুখ্যমন্ত্রী। কথা দিয়ে যে এই সরকার কথা রাখে তা আরও এক বার মনে করিয়ে দিয়েছেন তিনি।
মমতা বলেন, ‘যাঁরা এখনও পাননি, তাঁরা দুঃখ পাবেন না। আরও ১৬ লক্ষ বাকি আছে। আজ ১২ লক্ষ দেওয়া হলো। এই ১৬ লক্ষের টাকা ২০২৬-এর আগে পৌঁছে দেবো।’ মুখ্যমন্ত্রী জানান, উপভোক্তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরাসরি টাকা যেতে শুরু করেছে। ৬০ লক্ষ টাকা করে দু’বারে মোট ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে। এর জন্য রাজ্যের খরচ হবে ১৪ হাজার ৭৭৩ কোটি টাকা। মমতার কথায়, ‘বাংলার বাড়ির একটাই উদ্দেশ্য, গরিব মানুষকে আশ্রয় দেওয়া।’
এ দিন কেন্দ্রীয় সরকারকেও এক হাত নেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আবাসে বাংলা এক নম্বরে থাকলেও টাকা দেয়নি বলে জানান তিনি। উল্টে সবেতেই সেস বসিয়ে দেয়। তাঁর কথায়, ‘গত ৩ বছর ধরে আবাসের টাকা দেয় না কেন্দ্র। ১০০ দিনের কাজেরও প্রায় ৫৯ লক্ষ লোককে আমরা টাকা দিয়েছি। টাকার অঙ্কটা প্রায় ২ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। আমরা আমাদের অল্প সাধ্যের মধ্যেই মানুষের জন্য কাজ করব।’
সম্পূর্ণ স্বচ্ছতার সঙ্গে তালিকা তৈরির জন্য রাজ্যজুড়ে আবাসের সার্ভের উপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে বলেও জানান মমতা। বলেন, ‘২৭ হাজারেরও বেশি টিম ৩৫ লক্ষ লোকের বাড়ি গিয়েছে। জেলাশাসক, পুলিশসুপার, এসিডও, বিডিও, আইসি, ওসি সবার নজরদারিতে স্বচ্ছ ভাবে তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। খসড়া তালিকা প্রকাশ করে দাবিদাওয়া শোনা হয়েছে।’
প্রথম ধাপে প্রায় ১২ লক্ষ উপভোক্তা ঘরের টাকা পাচ্ছেন। কেন্দ্র টাকা না দিলে, এর পর মে জুনের মধ্যে আরও ৮ লক্ষের কাছে টাকা যাবে। ডিসেম্বর-জানুয়ারির মধ্যে বাকি ৮ লক্ষকে টাকা দেবে রাজ্য। ৬০ হাজার করে দুই কিস্তিতে পাবেন তাঁরাও। মুখ্যমন্ত্রী জানান, প্রথম ১১ লক্ষের কাছে হিসাব হলেও পরে বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগে ঘরহারাদের তালিকাভুক্ত করায় সংখ্যাটা প্রায় ১২ লক্ষ হয়ে গিয়েছে।