• আবাসের পরে পাট্টা, অনিয়মের অভিযোগে তদন্তের নির্দেশ মন্ত্রীর
    এই সময় | ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪
  • বিশ্বদেব ভট্টাচার্য, আসানসোল

    আবাস নিয়ে দুর্নীতির ভূরি ভূরি অভিযোগের তদন্ত চলছে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায়। এ বার পাট্টা বিলিতেও অনিয়মের ঘটনা প্রকাশ্যে এল। পশ্চিম বর্ধমানের সালানপুরে বিত্তশালীদের পাট্টা পাইয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ জানানো হয় রাজ্যের শ্রম ও আইনমন্ত্রী মলয় ঘটকের কাছে। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে বিষয়টি তদন্ত করে দেখার জন্য জেলাশাসক এস পোল্লাবলমকে লিখিত ভাবে জানান মন্ত্রী।

    এর পর জেলাশাসকের নির্দেশে সালানপুরের ওই পাট্টা বিলি নিয়ে ওঠা অভিযোগের তদন্ত শুরু করে বিডিও, বিএলআরও ও পুলিশ। তদন্ত শুরুর পরেই পাট্টার তালিকায় নাম থাকা এক ব্যক্তির নির্মাণকাজ বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন বিএলআরও সুমন সরকার। সালানপুর ব্লকের বিডিও দেবাঞ্জন বিশ্বাস বলেন, ‘তদন্ত শুরু হয়েছে। পুরো বিষয়টি নিয়ে ফের আলোচনার জন্য আমরা পঞ্চায়েত সমিতির ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তরের স্থায়ী সমিতির বৈঠক ডেকেছি।’

    জানা গিয়েছে, সালানপুরের আছড়ায় সরকারি খাসজমির পাট্টা প্রাপকদের যে তালিকা নিয়ে জেলাশাসক তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন, তাতে প্রাক্তন এক প্রধানের স্ত্রী, ওই প্রাক্তন প্রধানেরই শ্যালক, দু’টি সোনার দোকানের মালিকের স্ত্রীর নাম রয়েছে। এ ছাড়া নাম রয়েছে আরও একাধিক ব্যক্তির যাঁরা দোতলা বাড়ি, গাড়ি সমেত প্রভূত সম্পত্তির মালিক বলে অভিযোগ।

    মন্ত্রী মলয় ঘটকের কাছে এমনই ৯ জন নির্দিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে বিস্তারিত তথ্য দিয়ে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছিলেন এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা। একই ভাবে জেলার ভূমি রাজস্ব দপ্তর ও বিডিও–র কাছে তালিকা দিয়ে অভিযোগ জানায় সিপিএমের কৃষকসভা। অভিযোগকারীদের দাবি, অবিলম্বে এই তালিকা বাতিল করে প্রকৃত প্রাপকদের হাতে পাট্টা তুলে দেওয়া হোক।

    বিএলআরও সুমন সরকার জানান, তদন্তে নেমে প্রাপ্ত তথ্য নিয়ে একটি রিপোর্ট তিনি পাঠিয়েছেন জেলার ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দপ্তরের অতিরিক্ত জেলাশাসককে। তিনি বলেন, ‘একটি জায়গায় নির্মাণকাজ বন্ধের নির্দেশ দিয়েছি। সেটা পুলিশকে আমাদের পক্ষ থেকে লিখিত ভাবে জানানো হয়েছে। এর পর উপর মহল থেকে যেমন নির্দেশ আসবে সে ভাবে কাজ করব।’

    বিডিও দেবাঞ্জন বিশ্বাস বলেন, ‘পঞ্চায়েত সমিতির ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দপ্তরের স্থায়ী সমিতিতে সিদ্ধান্ত হয় কারা পাট্টা পাবেন। এই অভিযোগের তদন্ত শুরু হওয়ার পরে আমরা ফের বৈঠক ডাকার জন্য পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিকে বলেছি। সেখানে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

    প্রসঙ্গত, দিনকয়েক আগে জেলায় পুকুর ভরাট, খাস জমি দখল নিয়ে একাধিক অভিযোগ খতিয়ে দেখার জন্য প্রশাসনকে জানান মন্ত্রী মলয় ঘটক। তার পরেই এ নিয়ে তদন্ত শুরু করে জেলা প্রশাসন। পুকুর ভরাট ও জমি দখলে অনিয়মের অভিযোগে তদন্ত করে আসানসোলের পলাশডিহা, দক্ষিণ ধাদকা, নরসিংহবাঁধ, সালানপুর, হিরাপুর, কুলটি সমেত বিভিন্ন থানা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় কয়েকজনকে।

  • Link to this news (এই সময়)