সংবাদদাতা, লালবাগ: মঙ্গলবার থেকে শুরু হল নবগ্রামের শতাব্দী প্রাচীন কিরীটেশ্বরী পৌষমেলা। এদিন মেলার প্রথম দিনে দর্শনার্থীদের পাশাপাশি মায়ের পুজো দিতে প্রচুর ভক্ত সমাগম হয়। স্থানীয়দের পাশাপাশি জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত কয়েকশো পুরুষ-মহিলা মায়ের উদ্দেশ্যে পুজো ও অঞ্জলি নিবেদন করেন। সকাল, দুপুর এবং রাত তিনবেলা মায়ের উদ্দেশ্যে ভোগ নিবেদন করা হয়। পুজো দেওয়ার পাশাপাশি দুপুর গড়িয়ে বিকেল নামতেই মেলায় প্রচুর মানুষের সমাগম হয়। প্রথমদিন থেকেই মেলায় প্রচুর মানুষের সমাগম হওয়ায় হাসি ফুটেছে ব্যবসায়ীদের মুখে।
৫১ পীঠের অন্যতম সতীপীঠ মুর্শিদাবাদের নবগ্রাম থানার কিরীটেশ্বরী। সতীর কিরীট বা মাথার মুকুট পড়েছিল বলে এই স্থানের নাম হয় কিরীটকণা। পরে এই জায়গার নাম হয় কিরীটেশ্বরী। কয়েকশো বছরের প্রাচীন এই পৌষমেলা বলে দাবি স্থানীয়দের। পৌষ মাসের প্রতি মঙ্গলবার ও শনিবার মায়ের উদ্দেশ্যে পুজো দিতে ভক্তদের ঢল নামে। মায়ের পুজো উপলক্ষ্যে হাজার হাজার ভক্ত সমাগমের ফলে মন্দিরের সামনের মাঠে একমাস ব্যাপী মেলা বসে। এক মাস ব্যাপী এই মেলা কিরীটেশ্বরী পৌষমেলা নামে পরিচিত। দিন দিন এই কিরীটেশ্বরী মেলার শ্রীবৃদ্ধি ঘটছে বলে গ্রামবাসীদের দাবি। কিরীটেশ্বরী মেলার মিষ্টি ও বিন্নি ধানের খই বিখ্যাত। খাবার, বাচ্চাদের খেলনা ও সাংসারিক জিনিসের স্টল বসেছে। ছোটদের বিনোদনের নাগরদোলা, ড্রাগন ট্রেন, মিকি মাউস, চরকি সহ একাধিক উপকরণ এসেছে। মন্দির কমিটি সূত্রে জানা গিয়েছে, সারা বছর ধরেই অল্পবিস্তর দর্শনার্থী ও ভক্ত সমাগম হয় এখানে। কিন্তু পৌষমেলা উপলক্ষ্যে জেলা, রাজ্য ও দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মায়ের উদেশ্যে পুজো দিতে এবং মায়ের রাজ রাজেশ্বরী রূপ দর্শন করতে হাজার হাজার মানুষের সমাগম হয়। মঙ্গলবার সপ্তাহের একটা দিন মাকে রাজ রাজেশ্বরী বেশে সাজিয়ে পুজো করা হয়। তাই শনিবারের তুলনায় মঙ্গলবারে ভক্ত সমাগম বেশি হয়। নদীয়ার ঘূর্ণি থেকে পরিবার নিয়ে পুজো দিতে এসেছিলেন বিপ্লব রায়। তিনি বলেন, মাসের প্রথম দিন মঙ্গলবার পড়েছে। এদিকে তৃতীয় সপ্তাহ থেকে খুব ভিড় হয়। তাই কালবিলম্ব না করেই চলে এলাম। পুজো নেওয়ার পাশাপাশি মায়ের রাজরাজেশ্বরী রূপ দর্শন করলাম। মন্দির কমিটির সম্পাদক সৌমিত্র দাস বলেন, কিরীটেশ্বরী তথা নবগ্রামের মানুষ বছরভর এই মেলার দিকে তাকিয়ে থাকেন। এই সময়ে জেলা এবং জেলার বাইরে থেকেও প্রচুর মানুষের সমাগম হয়। ফলে স্থানীয়দেরও আয়ের সুযোগ থাকে। মন্দিরের সেবাইত দিলীপ ভট্টাচার্য বলেন, প্রথম দিন ভালোই ভক্ত সমাগম হয়েছে। আশা করছি, মেলার বাকি দিনগুলিতেও ভক্তের ঢল নামবে।