সংবাদদাতা, নবদ্বীপ: বারবার বিভিন্ন মহল থেকে আশঙ্কা প্রকাশ করা সত্ত্বেও নবদ্বীপ স্টেট জেনারেল হাসপাতাল চত্বরে বিপজ্জনক অবস্থায় দাঁড়িয়ে রয়েছে একটি পরিত্যক্ত জলের ট্যাঙ্ক। নতুন ভবন থেকে পুরনো ভবনে যাতায়াতের রাস্তার ধারে অবস্থিত এই সুউচ্চ জলাধারটি যে কোনও সময়ে ভেঙে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। নীচ দিয়ে চলাচলকারী মানুষদের উপর জলাধারটি ভেঙে পড়লে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। অথচ ট্যাঙ্কটি সরানোর বিষয়ে কোনও হেলদোল নেই প্রশাসনের। স্থানীয় বাসিন্দা থেকে শুরু করে হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে আসা রোগীর পরিবার এবং হাসপাতালের স্বাস্থ্যকর্মীদের দাবি, অবিলম্বে এই বিপজ্জনক জলাধারটি ভেঙে দেওয়া হোক।
উল্লেখ্য, অনেক রোগীকে এই জীর্ণ জলাধারের পাশের রাস্তা দিয়ে হাসপাতালের নতুন ভবন থেকে পুরনো ভবনে এক্স রে করাতে নিয়ে যাওয়া হয়। এই জলাধারের নীচ দিয়েই প্রতিদিন যাতায়াত করতে হয় হাসপাতালের কর্মীদের। পাশেই রয়েছে হাসপাতালের নার্সিং কোয়ার্টার ও কিচেন। কিছুটা দূরে গ্রুপ ডি এবং সুইপার্স কোয়ার্টার। ওই কোয়ার্টারের বাসিন্দারাও এই রাস্তাটি দিয়ে যাতায়াত করেন। একটা সময়ে পিএইচই দপ্তরের এই রিজার্ভার থেকে গোটা হাসপাতাল এবং স্টাফ কোয়ার্টারে জল সরবরাহ হতো।
জানা গিয়েছে, প্রায় ২০ বছরের বেশি সময় ধরে জলাধারটি জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়ে রয়েছে। বছর তিনেক আগে এখানে সারানোর কাজ হবে বলে কাঠামো বাঁধা হয়েছিল। কিন্তু সে কাজ আর হয়নি। ট্যাঙ্কটি আগাছায় ঘেরা। কিছুটা দূরে নার্সিং স্টাফদের হস্টেল।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালে এক নার্স জানালেন, আমরা অনেক সময়ে এই রাস্তা দিয়েই কোয়ার্টারে যাই। করি। পূর্ব বর্ধমানের সাতগাছিয়ার বকপুরের খোকন মণ্ডল জানান, আমার শ্বশুরমশাই সুবোধ সাঁতরা তিনদিন ভর্তি আছেন। আজকে ওঁকে আউটডোরে নিয়ে যেতে বলেছে। এই রাস্তা দিয়েই আউটডোরে যেতে খুবই ভয় লাগছে। জলের ট্যাঙ্কটি যে অবস্থায় রয়েছে যে কোনও মুহূর্তে ভেঙে পড়বে। নবদ্বীপ নেতাজি সুভাষ রোডের বাসিন্দা সুকান্ত ভট্টাচার্য বলেন, ট্যাঙ্কটি জরুরি ভিত্তিতে ঠিক করা উচিত। না হয় পুরো ভেঙে ফেলা উচিত।
নবদ্বীপ স্টেট জেনারেল হাসপাতালের সুপার অনঘ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ইতিমধ্যে পিডব্লিউডিকে দু’ বার জানানো হয়েছে। বিশেষ করে বর্ধমানে একটা দুর্ঘটনা হওয়ার পরে বেশি করে কর্তৃপক্ষের নজরে আনা হয়েছিল। ওরা সরানোর জন্য হিসেব নিকাশ করে দিয়েছে। এটার জন্য বড় ফান্ডের প্রয়োজন। সরকারের কাছে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পেলেই ওরা কাজ শুরু করবে।