বেথুয়াডহরি কলেজে ছাত্রীকে কটূক্তি ঘিরে সংঘর্ষ, জখম ৩
বর্তমান | ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি কৃষ্ণনগর: ছাত্রীকে কটূক্তি করা ঘিরে ছাত্রদের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হল। মঙ্গলবার দুপুরে নাকাশিপাড়ার বেথুয়াডহরি কলেজে এঘটনা ঘটেছে। তৃণমূল ছাত্র পরিষদ ও এবিভিপি সদস্যরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। ঘটনায় তিনজন ছাত্র জখম হয়েছেন। তাঁদের বেথুয়াডহরি গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে দু’জনকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয়। বাকি একজন গুরুতর জখম অবস্থা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। নাকাশিপাড়া থানার পুলিস গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। কলেজের অধ্যক্ষ দিলীপকুমার কারক এবিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
সূত্রের খবর, বেথুয়াডহরি কলেজে ভর্তি হওয়া নতুন ছাত্রদের মানসিক নির্যাতন ও ছাত্রীদের কটূক্তি করত একদল ছাত্র। এনিয়ে কলেজে মাঝেমধ্যেই ঝামেলা লেগে থাকত। এবিভিপি’র অভিযোগ, তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সদস্যরা বাঁশ, লাঠি ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে তাদের সদস্যদের উপর চড়াও হয়ে ব্যাপক মারধর করেছে। ঘটনার পর থেকে অভিযুক্তরা পলাতক। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের তরফে অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে।
পুলিস জানিয়েছে, মঙ্গলবার কলেজে সেমিনার ছিল। এক তরুণ-তরুণী আলাদাভাবে বসে গল্প করছিল। এক ছাত্রী লুকিয়ে তাদের ভিডিও বানাচ্ছিল। ওই তরুণ-তরুণী তা দেখে ফেললে আপত্তি জানায়। ওই ছাত্রীকে কটূক্তি করার পাশাপাশি চড় মারা হয় বলে অভিযোগ। তখন অপর একদল ছাত্র এসে প্রতিবাদ করে। এরপরই তাদের মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। নাকাশিপাড়া থানার পুলিস একজনকে আটক করেছে।
কলেজপড়ুয়া এবিভিপি সদস্য কৃশাণু রায় বলেন, আমরা মাঠে বসে ছিলাম। তখন দেখি তৃণমূলের কিছু ছেলে আমাদের কিছু বন্ধুকে ব্যাপক মারধর করছে। সেইসঙ্গে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করছিল। আমরা গিয়ে প্রতিবাদ করি। তখন আমাদের বাঁশ, লোহার রড দিয়ে মারধর করা হয়। দিনের পর দিন কলেজে এরকম ঘটনা ঘটে চলেছে।
অপর পড়ুয়া রাকেশ বিশ্বাস বলেন, পাঁচ-ছয় বছর ধরে বেথুয়াডহরি কলেজে একই জিনিস ঘটে চলেছে। কলেজে যে নতুন ছাত্রছাত্রীরা ভর্তি হয়, তাদের একদল ছাত্র র্যাগিং করে। মেয়েদের উপরও মানসিক নির্যাতন হয়। এদিন তাতে বাধা দিতে যাওয়ায় বেশ কয়েকজন ছাত্রকে ব্যাপক মারধর করা হয়েছে। আমরা বিষয়টি কলেজের অধ্যক্ষ ও পুলিসকে জানিয়েছি।
আক্রান্ত ছাত্র বিক্রম সরকার বলেন, মঙ্গলবার কলেজে সেমিনারের জন্য গিয়েছিলাম। গিয়ে দেখি, একটা ছেলে একটি মেয়েকে থাপ্পড় মারল। আমরা দু’তিনজন মিলে প্রতিবাদ করি। এরপরই আমাদের বাঁশ ও রড দিয়ে মারধর শুরু হয়। মেরে আমার মাথা ফাটিয়ে দিয়েছে। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নদীয়া উত্তর সংগঠনিক জেলা সভাপতি সম্রাট পাল বলেন, এঘটনার সঙ্গে রাজনীতির যোগ নেই। সংগঠনকে বদনাম করার জন্য রাজনীতির রং দেওয়া হচ্ছে। ব্যক্তিগত ঝামেলাকে ঘিরে অশান্তি হয়েছিল। এর সঙ্গে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ যুক্ত নয়।