নিজস্ব প্রতিনিধি, কৃষ্ণনগর: নদীয়া জেলার হস্তশিল্প মেলায় আট কোটি টাকার সামগ্রী বিক্রি হল। দিনে গড়ে ৫০ লক্ষ টাকার বেচাকেনা হয়েছে। সোমবার মেলা শেষে জেলা শিল্পকেন্দ্র খরচের হিসেব করলে এই তথ্য উঠে আসে। খরচের পরিসংখ্যান দেখে প্রশাসনের আধিকারিকরা খুশি। তাঁরা জানান, যে উদ্দেশ্যে নদীয়া জেলায় এবছর হস্তশিল্প মেলার আয়োজন করা হয়েছিল, তা অনেকটাই ফলপ্রসূ হয়েছে। হস্তশিল্প মেলা থেকে এক লক্ষের বেশি টাকার সবংয়ের মাদুর বিক্রি হয়েছে। করোনার আগে শেষবার এই হস্তশিল্প মেলা হয়েছিল। পাঁচবছর পর রাজ্য সরকারের তরফে নদীয়া জেলায় ফের হস্তশিল্প মেলা আয়োজিত হয়।
অতিরিক্ত জেলাশাসক প্রলয় রায়চৌধুরী বলেন, এবছর হস্তশিল্প মেলায় আমরা ভালো সাড়া পেয়েছি। দূরদূরান্ত থেকে প্রতিদিন বহু মানুষ মেলায় এসেছিলেন। হস্তশিল্পীদের গড়া নানারকম সামগ্রী দেখতে মানুষ উৎসুক ছিলেন। শিল্পীরাও বেশ লাভের মুখ দেখেছেন।
৩০ নভেম্বর কৃষ্ণনগর গভর্নমেন্ট কলেজের মাঠে এই মেলা শুরু হয়। ১৭দিন ধরে মেলা চলে। নদীয়ার পাশাপাশি রাজ্যের সমস্ত জেলা থেকেই হস্তশিল্পীরা এই মেলায় অংশ নিয়েছিলেন। তাঁদের হাতে তৈরি বিভিন্ন সামগ্রী এই মেলায় বিক্রি করেছেন। নদীয়ার কাঁসা-পিতলের সামগ্রী, ঘূর্ণির মাটির পুতুল, কারুশিল্প, মুর্শিদাবাদের শোলার কাজ, পাটের সামগ্রী, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার মাদুর, শিংয়ের কাজ, গয়না, পটচিত্র, বীরভূমের কাঁথা স্টিচের কাজ, বাঁকুড়া জেলার টেরাকোটা, ডোকরার গয়না, বিভিন্ন জেলার সিল্ক, জরি, বুটিক ও ফ্যাব্রিকের কাজ, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগণার ড্রাই ফ্লাওয়ার, বাধনি, মালদার বাঁশের কাজ সহ নানা শিল্পকর্ম এই মেলায় দেখা যায়।
সবমিলিয়ে, ১২০০ শিল্পী এই মেলায় অংশ নিয়েছিলেন। মেলার জন্য ২৬টি প্যাভিলিয়ন তৈরি করা হয়েছিল। প্রতিটি প্যাভিলিয়নে ৫০জন করে শিল্পী ছিলেন। মাঠের মাঝখানে তিনটি হাট তৈরি করা হয়েছিল। সেখানে শিল্পসামগ্রীর পসরা সাজিয়ে বসেছিলেন ক্ষুদ্র শিল্পীরা। কাঠের তৈরি বিভিন্ন ডিজাইনের আসবাবপত্র কিনতে আমজনতার ঝোঁক ছিল চোখে পড়ার মতো।
নদীয়া জেলা শিল্পকেন্দ্রের জিএম পুষ্পেন্দু মল্লিক বলেন, মেলার শুরুর দিকে বেচাকেনা একটু কম ছিল। তবে দিন যত গড়িয়েছে, মেলায় উৎসাহী ক্রেতাদের ভিড় বেড়েছে। দিনে গড়ে ৫০লক্ষ টাকার বেচাকেনা হয়েছে। প্রশাসনের তরফে হস্তশিল্পীদের নানা কাজে উৎসাহিত করা হচ্ছে।