• ছিটেবেড়ার ঘরে মেয়ে জুটছে না, পাকাবাড়ি চেয়ে বিডিওকে আবদার প্রৌঢ়ের
    বর্তমান | ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪
  • সংবাদদাতা, বহরমপুর: প্রৌঢ়ত্বে এসে নতুন ঘরবাঁধার স্বপ্ন। কিন্তু, স্ত্রীকে নিয়ে এসে উঠবেন কোথায়? ছেলেপুলেরা যে যাঁর মতো ঘর করে নিয়েছেন। নিজে থাকেন ছিটেবেড়ার ঘরে। পাকা ঘর নেই বলে মেয়ে দিতে রাজি হচ্ছেন না কোনও বাবা-মা। অবশেষে সটান বিডিওর চেম্বারে। গিয়ে বললেন, ‘হুজুর বিয়ে করব। একটা পাকা ঘর দিন।’ বছর পঞ্চান্নর এক ব্যক্তির এহেন আবদার শুনে হকচকিয়ে গেলেন বেলডাঙা-১ ব্লকের বিডিও রথীন্দ্রনাথ অধিকারী। পরে প্রৌঢ়ের মুখে সব শুনে আশ্বস্ত করলেন তিনি। বিডিওর কাছে আশ্বাস পেয়ে খুশি হয়েই বাড়ি ফিরলেন বেলডাঙা-১ ব্লকের বেগুনবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের কাজিশাহের বাসিন্দা আবদুর শুকুর মোল্লা। বিডিও বলেন, ‘বাংলা আবাস তালিকায় ওঁর নাম আসেনি। আবেদন করতে বলেছি। সরকারি নিয়ম মেনেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’


    বছর দশেক আগে আবদুরের স্ত্রী গত হয়েছেন। ছেলেরা বাবাকে দেখেন না। ছিটেবেড়ার ঘরে কোনওরকমে মাথা গুজে দিন গুজরান করেন। নিজের রান্না নিজেই করেন। একাকিত্বের জীবন দূর করতে ফের বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। কিন্তু পাকা ঘর না থাকার কারণে মেয়ে দিতে রাজি হচ্ছেন না কেউই। এদিকে, বাংলা আবাস যোজনার তালিকায় নাম আসেনি তাঁরা। 


    শেষে যখন হতাশ হয়ে বসেছিলেন, তখনই আবদুরের সহায় হয় পড়শি এক শুভাকাঙ্খী। তাঁর পরামর্শ মেনেই চলে আসেন বিডিও অফিসে। আবদুরের  এই কাহিনি এখন বেলডাঙা ছাড়িয়ে জেলার মানুষের মুখেমুখে ঘুরছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় বহু মানুষের সহানুভূতি কুড়িয়েছেন তিনি। কেউ কেউ বলেছেন, ‘একাকিকত্বের জ্বালা সত্যিই বড্ড যন্ত্রণার!’


    মুর্শিদাবাদে বাংলা আবাসের তালিকা থেকে প্রচুর নাম বাদ গিয়েছে। যা নিয়ে জেলাজুড়ে শোরগোল পড়েছে। নামের তালিকা নতুন করে খতিয়ে দেখতে শুরু করেছে প্রশাসন। বাদের তালিকায় একজন কাজিশাহের আবদুর। 


    বিডিওর কাছে বাড়ি চেয়ে শিরোনামে চলে এসেছেন তিনি আবদুর শুকুর বলছিলেন, ‘খুব কষ্ট সহ্য করে বেঁচে রয়েছি। এই বয়সে একজন সঙ্গি দরকার। পাকা ঘর না থাকলে সঙ্গি জুটছে না। তাই বিডিও সাহেবের কাছে দরবার করেছিলাম। আমাদের বিডিও মাটির মানুষ। খুব ভালো ব্যবহার করেছেন। ওঁর পরামর্শে আবেদন করেছি। আশা করি ঘর বাঁধার স্বপ্ন সফল হবে।’
  • Link to this news (বর্তমান)