নিজস্ব প্রতিনিধি, ঝাড়গ্ৰাম: বিনপুরে সাতসকালে রোমহর্ষক লুটপাটের ঘটনায় শোরগোল পড়েছে। ঘরে ঢুকে অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষিকার গলায় ধারালো ছুরি ঠেকিয়ে আড়াই লক্ষ টাকার সোনারুপোর গয়না ও নগদ হাজার টাকা নিয়ে চম্পট দিল দুষ্কৃতী। মঙ্গলবার সকাল ৯টার সময় বিনপুর গ্ৰামের শিবমন্দির চকে এঘটনা ঘটে। স্থানীয়রা এলাকার নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। বিনপুর থানার পুলিস তদন্ত শুরু করেছে।
বিনপুরের শিবমন্দির চক জনবহুল এলাকা। সেখান থেকে মিনিট পাঁচেক হাঁটলেই রাস্তার বাঁদিকে অবসরপ্রাপ্ত প্রাথমিক শিক্ষিকা স্নিগ্ধা মাণ্ডি সোরেনের একতলা পাকা বাড়ি। লুটের খবরে মঙ্গলবার সকালে সেখানে ভিড় জমে যায়। স্নিগ্ধাদেবী বলেন, ষাঁড়পুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহ-শিক্ষিকার দায়িত্ব সামলেছি। অবসর নেওয়ার পর চারবছর ধরে এই বাড়িতে বসবাস করছি। আমার স্বামী সকাল ৭টায় বাড়ি থেকে বের হন। সকাল ৯টার সময় বাড়ির বাগানে জল দিচ্ছিলাম। সেসময় মাথায় মাফলার জড়ানো প্রায় বছর পঁচিশের একটা ছেলে বাড়ির উত্তরদিক দিয়ে ঘরে ঢোকে। আমার কাছে খাওয়ার জন্য মুড়ি চায়। ছেলেটাকে দেখে মায়া হয়। উত্তরদিকের দরজা দিয়ে ঘরে ঢুকে রান্নাঘরে যাই। হঠাৎ খেয়াল করি, ছেলেটা আমার পিছু পিছু চলে এসেছে। আচমকা পিছন থেকে আমার মুখ চেপে ধরে। গলায় ছুরি ঠেকিয়ে শোওয়ার ঘরে নিয়ে যায়। আলমারিতে রাখা টাকা-গয়না বের করে দিতে বলে। আলমারির লকারে আড়াই লক্ষ টাকার গয়না ও নগদ হাজার টাকা ছিল। সেগুলো দিতেই যে দরজা দিয়ে ঢুকেছিল সেদিক দিয়ে বেরিয়ে চলে যায়। পরে আমি স্বামীকে ফোন করে বিষয়টি জানাই।
ওই শিক্ষিকার স্বামী উপেন্দ্রনাথ সোরেন বলেন, খবর পেয়েই বাড়িতে আসি। স্ত্রী তখনও কথা বলতে পারছিল না। পরিচিত লোকজনও আসেন। চারপাশে পড়শিদের বাড়িঘর রয়েছে। রাস্তায় লোকজন যাতায়াত করছে। বাড়ির সামনে চায়ের দোকানেও ভালোই ভিড় ছিল। তার মধ্যেই ঘটনাটি ঘটে। রবিবার বিকেলে একজন বয়স্ক লোক বাড়িভাড়া নিতে এসেছিল। সেসময় আমি ঘরে ছিলাম না। মনে হচ্ছে, চুরির সঙ্গে এই ঘটনার যোগ আছে। থানায় লিখিত অভিযোগ করেছি।
ওই পরিবারের পরিচিত শিক্ষক দেবব্রত মণ্ডল বলেন, স্নিগ্ধাদেবীর বোন নিজের কিছু গয়না তাঁর কাছে রেখে গিয়েছিলেন। আগাম পরিকল্পনা করে লুট করা হয়েছে বলে সন্দেহ করছি। প্রতিবেশী শেখ সফিক আহমেদ বলেন, বাড়ির পাশে সকালবেলায় এ ঘটনায় আমি আতঙ্কিত। আমার বাড়িতে অনেকসময় মহিলারা একাই থাকেন। পুলিস এলাকায় নিরাপত্তা বাড়াতে পদক্ষেপ করুক-এটাই চাইছি।