নতুন সমীকরণের ইঙ্গিত! পুরসভায় হাজির পার্থ, পা ছুঁয়ে প্রণাম রবিকে
বর্তমান | ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, কোচবিহার: কোচবিহারে তৃণমূল কংগ্রেসের রাজনীতিতে কি ‘কাকা-ভাইপো’র নয়া সমীকরণ তৈরি হচ্ছে! যে কাকা-ভাইপোর মুখ দেখাদেখি, প্রকাশ্যে বাক্যালাপ দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল, তাঁরাই একদিনের ব্যবধানে একে অন্যের অফিসে পৌঁছে গেলেন! মাঝের একদিনও তাঁদের একসঙ্গে দীর্ঘক্ষণ দেখা গিয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে সটান কোচবিহার পুরসভার চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ ঘোষের চেম্বারে পৌঁছে যান উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগমের চেয়ারম্যান পার্থপ্রতিম রায়। রবিবাবুর পাশের চেয়ারে বসেন। উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগমের কাছে কোচবিহার পুরসভা দীর্ঘদিন ধরে কর বাবদ ৮৩ লক্ষ ৬৮ হাজার ৬৪০ টাকা পায়। সেই বকেয়া কর পরিশোধের কথা পুরসভার চেয়ারম্যানকে জানান তিনি। প্রায় এক ঘণ্টা সেখানে ছিলেন তিনি। সেই সময়েই ‘কাকা’ রবীন্দ্রনাথ ঘোষ ‘ভাইপো’ পার্থপ্রতিম রায়কে উত্তরীয় পরিয়ে দেন।পিতলের মদনমোহন মূর্তি প্রদান করেন। পরে পার্থবাবু পায়ে হাত দিয়ে রবিবাবুকে প্রণাম করেন।
যে কাকা-ভাইপোর লড়াইয়ের কারণে কোচবিহারের রাজনীতি একসময় জমজমাট হয়ে উঠেছিল, সেই দু’জনই গত কয়েকদিন ধরে ক্রমশ ঘনিষ্ঠ হচ্ছেন। সামনে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে রবিবাবুর মতো দুঁদে নেতা কেন পার্থবাবুর মতো অপেক্ষাকৃত নবীন প্রজন্মের নেতাকে সব ভুলে কাছে টেনে নিচ্ছেন তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে।
বেশ কিছুদিন ধরেই রাজনীতিতে পার্থবাবু ও রবিবাবুর সময়টা ভালো যাচ্ছে না। একদা উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ এখন শুধুই কোচবিহার পুরসভার চেয়ারম্যান। দলের জেলা সভাপতির পদও খুঁইয়েছেন কয়েক বছর আগে। যে পার্থবাবুর হাতে এক সময় অনেকগুলি সরকারি পদের দায়িত্ব ছিল এখন তাঁর হাতে একমাত্র উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগম। উল্টো দিকে জেলা রাজনীতিতে উত্থান ঘটেছে অভিজিৎ দে ভৌমিকের। দলের জেলা সভাপতির দায়িত্ব পাওয়ার পাশাপাশি তিনি এখন দু’টি সরকারি দায়িত্ব সামলাচ্ছেন। ফলে সব দিক দিয়েই চাপে রয়েছেন গুরু রবীন্দ্রনাথ ঘোষ ও শিষ্য পার্থপ্রতিম রায়। এই পরিস্থিতিতে দুই নেতার কাছাকাছি আসা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।
রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, আমাদের সব সময়ই দেখা হয়। ঘনিষ্ঠতা আছে। ও আমার সন্তানসম। আমরা একই সরকারের অধীনে কাজ করছি। সরকারের জনকল্যাণমূলক কাজগুলি গুরুত্ব দিয়ে করছি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে কাজ করছি। এখানে কোনও দ্বিমত নেই।
পার্থপ্রতিম রায় বলেন, পুরসভা বারবার জানিয়েছিল। কিন্তু আমাদের কাছে এমন কোনও ফান্ড ছিল না। পরিবহণ দপ্তর এক লপ্তে আড়াই কোটি টাকা দিয়েছে। তাই পুরসভার ৮৪ লক্ষ টাকা সাতদিনের মধ্যে মিটিয়ে দেব। বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা হয়েছে। আমরা একে অপরের পরিপূরক হিসেবে মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বেই কাজ করি।