নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি: ঘটনা-১ শিলিগুড়ির ভারতনগরের বাসিন্দা এক গৃহবধূর স্বামীর চিকিৎসার জন্য হঠাৎ কলকাতা যাওয়ার প্রয়োজন পড়ে। ট্রেনে টিকিট না পেয়ে বাসের খোঁজ করতে শিলিগুড়ি জংশনে গিয়ে রীতিমতো মাথায় হাত তাঁর। ১০০০ টাকা ভাড়ার টিকিট ১৫০০-১৭০০ টাকায় বিকোচ্ছে। পকেটে টান থাকলেও একপ্রকার বাধ্য হয়েই সেই টিকিট কেটে বাসে চাপেন তিনি।
ঘটনা-২ শিলিগিড়ির সুকান্তনগরের বাসিন্দা এক ব্যক্তি শিলিগুড়ি থেকে ছেলের পড়াশুনার জন্য কলকাতায় গিয়েছিলেন। সোমবার ফেরার জন্য ট্রেনের টিকিট না পেয়ে বাসের টিকিটের খোঁজ করতেই চক্ষু চড়কগাছ তাঁর। টিকিট কাটতে গিয়ে তিনি জানতে পারেন অন্যান্য সময়ে ১৫০০-১৭০০ টাকার টিকিটের দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২২০০-২৫০০ টাকা। কলকাতা-শিলিগুড়ি ও শিলিগুড়ি-কলকাতার বেসরকারি বাসে যাত্রা করতে অনিয়ন্ত্রিত ভাড়ার দাপটে নাকাল হচ্ছেন যাত্রীরা। লাগামহীন ভাড়ার কারণে প্রয়োজন থাকলেও অনেক সময় যাত্রা বাতিল করতে বাধ্য হচ্ছেন যাত্রীরা। এজন্য প্রশাসনিক নজরদারির অভাবকে দায়ী করেছেন অনেকেই। যদিও এনিয়ে কোনও অভিযোগ আসেনি বলে জানিয়েছে পরিবহণ দপ্তর। শিলিগুড়ি আঞ্চলিক পরিবহণ দপ্তরের আধিকারিক বিশ্বজিৎ দাস বলেন, দূরপাল্লার বাসের অনিয়ন্ত্রিত ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ পাইনি। তবুও বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।
বর্তমানে শিলিগুড়ি-কলকাতা রুটে প্রচুর বিলাসবহুল এসি বাস যাতায়াত করে। এই বাসগুলিতে সিটার এবং স্লিপার দু’রকম পরিষেবা রয়েছে। অভিযোগ, এই বাসের ভাড়া অনেকটা শেয়ার বাজারের মতো। যদি কেউ সিটার অর্থাৎ বসে যাতায়াতের টিকিট কাটেন তাহলে ভাড়া হওয়া উচিত ৯০০-১০০০ টাকা। কিন্তু সেখানে নেওয়া হচ্ছে ২০০০-২৫০০ টাকা।
স্লিপারের ক্ষেত্রে সচরাচর ভাড়া হয়ে থাকে ১২০০ টাকা। তবে সময় বিশেষে সেই ভাড়া বেড়ে দাঁড়ায় তিন থেকে চার হাজার টাকা। স্বাভাবিকভাবেই এই ভাড়ার নিয়ন্ত্রণ কার হাতে থাকছে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এই বাড়তি ভাড়ার বিষয়টি শিলিগুড়ি-কলকাতা বাস ওনারর্স সংগঠনের তরফে মেনে নেওয়া হলেও এবিষয়ে তারা দোষ চাপিয়েছে ওয়েবসাইটের উপরে। তাদের দাবি, বাসের মালিকরা নন, ওয়েবসাইট কর্তৃপক্ষ নিজেদের খেয়ালখুশি মতো এই দর বাড়ানোর খেলা চালায়। আইএনটিটিইউসি’র শিলিগুড়ি-কলকাতা বাস শ্রমিক সংগঠনের সম্পাদক শঙ্কর ঘোষ বলেন, এই সমস্যাটা রয়েছে। তবে যেসমস্ত ওয়েবসাইট বাসের টিকিট অনলাইনে দিয়ে থাকে তারাই এই ফ্লেক্সি ফেয়ার বা সময় অনুযায়ী ভাড়া বাড়িয়ে থকে। বিষয়টি পরিবহণ দপ্তরের নজরে রয়েছে কি না, জানা নেই।