নিজস্ব প্রতিনিধি, হাওড়া: ওয়েস্ট বেঙ্গল যোগা অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত রাজ্য সিনিয়র যোগা স্পোর্টস চ্যাম্পিয়নশিপে সোনার পদক জিতলেন সাঁকরাইলের যুবক রাহুল সাহা। সেইসঙ্গে আগামী জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপে রাজ্যের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ পেলেন তিনি। এরাজ্যে ন্যূনতম পরিকাঠামো থাকা সত্ত্বেও আগামী দিনে নতুন প্রজন্মকে যোগাসনের প্রতি আকৃষ্ট করতে চান রাহুল।
হাওড়ার সাঁকরাইলের দরগাতলা এলাকার বাসিন্দা রাহুল সাহা। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক শেষ করে বর্তমানে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগাসনের উপর ডিপ্লোমা করছেন। মাত্র তিন বছর বয়সেই যোগাসনে ভর্তি হন রাহুল। পড়াশোনা করতে করতেই যোগার উপর ভালোবাসা জন্মায় তাঁর। ২০১৫ সাল পর্যন্ত জেলা পর্যায়ের বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নিলেও স্কুল গেমসের মাধ্যমে নিজেকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন তিনি। বাকসাড়ার একটি ব্যায়াম সমিতিতে দিনের পর দিন কঠোর অনুশীলনের পর বেঙ্গল স্কুল গেমসে প্রথম স্থান অধিকার করেন। কিন্তু উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য অংশ নিতে পারেননি ন্যাশনালে। এরপর শুরু হয় ইউনিভার্সিটি ভিত্তিক প্রতিযোগিতার মাধ্যমে নিজেকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার পর্ব। অল ইন্ডিয়া ইন্টার ইউনিভার্সিটি যোগা চ্যাম্পিয়নশিপে পরপর দু’বছর অংশ নেন রাহুল। কিন্তু আচমকা প্রশিক্ষকের মৃত্যুতে বিপর্যয় নেমে আসে। রাহুল বলেন, ‘এরপর কীভাবে এগিয়ে যাব, বুঝতে পারছিলাম না। একাই প্র্যাকটিস করে গিয়েছি।’ এভাবেই গত বছর রাজস্থানের যোধপুরে আয়োজিত ন্যাশনাল যোগা চ্যাম্পিয়নশিপের ১৮ থেকে ২১ বছর বয়সি বিভাগে সোনা জেতেন রাহুল।
কলকাতার বউবাজার ব্যায়াম সমিতিতে গত রবিবার রাজ্য সিনিয়র যোগা স্পোর্টস চ্যাম্পিয়নশিপের ২১ থেকে ২৫ বছর বয়সি বিভাগে প্রতিযোগিতা হয়। সেখানে পশ্চিমবঙ্গ পুলিসের সঙ্গে হাওড়া জেলার হয়ে যোগ প্রদর্শন করেন রাহুল সহ তিন যুবক। নিখুঁতভাবে পরপর দশটি যোগাসন প্রদর্শনের পর প্রথম হন রাহুল। আগামী বছর ফেব্রুয়ারিতে কেরলে ন্যাশনাল চ্যাম্পিয়নশিপে রাজ্যকে প্রতিনিধিত্ব করবেন তিনি। রাহুলের কথায়, ‘অন্যান্য রাজ্যে স্পোর্টস হিসেবে যোগাসনকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু এখানে সেই সুযোগ নেই। ন্যূনতম পরিকাঠামোর মধ্যেও আমি নতুন প্রজন্মকে যোগাসন শেখাতে চাই।’ গত কয়েক মাস ধরে রাহুল খুদেদের যোগ প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু করেছেন। তাঁর এই সাফল্য আর এগিয়ে চলার প্রয়াসকে সাধুবাদ জানাচ্ছেন জেলার ক্রীড়াপ্রেমীরা।-নিজস্ব চিত্র