নিজস্ব প্রতিনিধি, চুঁচুড়া: মুখ্যমন্ত্রীর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্য প্রশাসনকে জেলায় জেলায় নিয়ে গিয়েছেন। সেই আদলেই জেলা থেকে ব্লকে গিয়ে উন্নয়ন নিয়ে পর্যালোচনা বৈঠক করলেন হুগলি প্রশাসনের শীর্ষকর্তারা। মঙ্গলবার জেলাশাসক মুক্তা আর্য, জেলার সমস্ত দপ্তরের শীর্ষকর্তাদের নিয়ে হুগলির বলাগড় ও পাণ্ডুয়া ব্লকে গিয়ে বৈঠক করেন। সেখানে দপ্তর ধরে ধরে উন্নয়নের খতিয়ান নিয়ে আলোচনা হয়েছে। পাশাপাশি, পাণ্ডুয়ায় মাঠে বসে আদিবাসী মানুষজনের সমস্যার কথা শুনেছেন জেলাশাসক। যা নিয়ে আদিবাসী কলোনিতে ব্যাপক সাড়া পড়েছে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মূলত শিক্ষাদপ্তরের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ জেলাশাসক। সম্প্রতি একাধিক বিষয়ে জেলা শিক্ষাদপ্তর নিয়ে জেলা প্রশাসনের শীর্ষকর্তাদের অসন্তোষ প্রকাশ্যে এসেছে। এদিকে, ব্লক প্রশাসনের সঙ্গে ‘মতভেদ’-এর অভিযোগ তুলে বলাগড়ের বৈঠকে এদিন একজন ছাড়া কোনও গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান উপস্থিত হননি। সেই ঘটনাকে ঘিরে প্রশাসন ও শাসকদলের অন্দরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। ওই ঘটনায় ঘনিষ্ঠ মহলে অসন্তোষ ব্যক্ত করেছেন জেলাশাসক। বৈঠকের মধ্যেই কটাক্ষের সুরে তিনি বলেন, এবার তাহলে প্রধানদের কাছে আমি নিজেই যাব। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই প্রধানদের মধ্যে অস্বস্তি তৈরি হয়েছে। পরে অবশ্য এনিয়ে জেলাশাসক কোনও মন্তব্য করেননি। বলাগড়ের বিডিওকে এনিয়ে দফায় দফায় ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি। বলাগড়ের জিরাট গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান তপন দাস বলেন, ব্লক বা জেলা প্রশাসনের সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত কোনও সমস্যা নেই। কিন্তু ১৩ জনের মধ্যে ১২ জন প্রধান যেখানে অনুপস্থিত থাকবেন বলে স্থির করেছেন, সেখানে আমার একা যাওয়াটা দৃষ্টিকটু। তাই যাইনি। এদিনের বৈঠকে জেলা পরিষদের সভাধিপতি রঞ্জন ধাড়া ছিলেন না। জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে সমন্বয়ের দায়িত্ব পালন করেন শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ সুবীর মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, প্রধানদের অনুপস্থিতি নিয়ে জেলাশাসক ক্ষুব্ধ হয়েছেন। আমিও মনে করি, মানুষের উন্নয়ন নিয়ে সমঝোতার কোনও জায়গা নেই। তাঁদের সমস্যার কথা জানতে চেয়েই বৈঠক। বিষয়টিকে আরও গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন ছিল। আমার দপ্তরের কাজ নিয়েও জেলাশাসক ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। আমি মনে করি, সেই ক্ষোভ যুক্তিযুক্ত। শিক্ষাদপ্তরের অফিসারদের আরও তৎপর হওয়া প্রয়োজন। এদিনও শিক্ষা সংক্রান্ত একাধিক সমস্যা প্রকাশ্যে এসেছে। জেলা থেকে ব্লকে গিয়ে আমরা ধারাবাহিকভাবে বৈঠক করব।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার প্রথমে বলাগড়ে বৈঠক করতে গিয়েছিলেন জেলাশাসক সহ প্রশাসনের শীর্ষকর্তারা। সেখানে ব্লক প্রশাসন ও পঞ্চায়েত স্তরের সমস্যা নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয়। তারপরে পাণ্ডুয়ায় যান তাঁরা। পাণ্ডুয়ার বৈঠকের পর মাঠে বসে স্থানীয় আদিবাসী মহিলাদের সঙ্গে কথা বলেন জেলাশাসক মুক্তা আর্য।-নিজস্ব চিত্র