• জল জমে খেলার মাঠ এখন পানাপুকুর
    এই সময় | ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪
  • সুপ্রকাশ চক্রবর্তী, বামুনগাছি

    মাঠে বেশির ভাগ সময়ে জল জমে থাকে। দেখলে মনে হবে ঝিল কিংবা পানাপুকুর। ভরে রয়েছে কচুরিপানা। আশপাশে অনেক জায়গায় জল নেমে গেলেও মাঠের জমা জল এখনও নামেনি। উওর হাওড়ার বামুনগাছি রেল কলোনি এলাকার এই খেলার মাঠটির এমনই অবস্থা।

    এই মাঠটি এলাকার ছেলেমেয়েদের একমাত্র খেলাধুলোর জায়গা। মানুষ এই মাঠেই প্রাতর্ভ্রমণে আসেন। আবার এই মাঠের পাশেই রয়েছে স্কুল। গত কয়েক বছর ধরে বামুনগাছি রেলওয়ে ইনস্টিটিউট মাঠ সংলগ্ন খেলার মাঠটিতে বছরের প্রায় বেশির ভাগ সময় জল জমে থাকে। ফলে সমস্যায় পড়েছেন এলাকার বাসিন্দারাও।

    বর্ষা চলে গিয়েছে প্রায় দেড় মাস আগে। কিন্তু এখনও বামুনগাছি সেন্ট্রাল স্কুলের পাশে প্রায় ৬ বিঘা খেলার মাঠ জলমগ্ন। এর জেরে এলাকার ছেলেমেয়েরা খেলতে পারছেন না। জলের জন্য বাড়ছে মশা–মাছির উপদ্রব। ঘুরে বেড়াচ্ছে সাপ। হাওড়া পুরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বামুনগাছি ঘাটাপাড়া সংলগ্ন এই রেলওয়ে ইনস্টিটিউট মাঠের পাশে একটি শিশুদের স্কুল ছিল।

    কিন্তু বছরের বেশির ভাগ সময়ে মাঠে জল থাকায় স্কুলটি উঠে যায়। পাশে খেলার মাঠ হওয়ায় সেন্ট্রাল স্কুলকে এখানে নিয়ে আসা হয়। পড়ুয়ারা যাতে খেলাধুলো করতে পারে তাই এই ব্যবস্থা করা হয়েছিল। কিন্তু মাঠ আর খেলার উপযুক্ত নয়।

    স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, হাওড়া পুরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বেশির ভাগ এলাকা নিচু। বর্ষাকাল তো বটেই, বছরের অন্য সময়েও ওই মাঠে জল জমে থাকে। ভোগান্তি হয় রেল কোয়ার্টারে থাকা মানুষজনেরও। তাঁদের হাঁটু সমান জলে ভেঙে মাসের পর মাস যাতায়াত করতে হয়। রেলে কর্মরত অনেকেই ওই কোয়ার্টারে থাকতে চান না শুধু জমা জলের আতঙ্কে। রেল কোয়ার্টারের বহু ঘর পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। রেলকর্মীরা জানান, যাঁরা ওই কোয়ার্টারে থাকেন তাঁদের জন্য সরু উঁচু রাস্তা করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু মাঠ থেকে জল নামানোর চেষ্টা করা হয়নি।

    মাঠের পাশে স্কুল হওয়ায় ভয়ে ভয়ে ওই রাস্তা দিয়ে বাচ্চাদের নিয়ে আসেন অভিভাবকরা। কারণ, রাস্তাগুলিও সারানো হয়নি। এবড়ো খেবড়ো রাস্তা দিয়ে যেতে অসুবিধায় পড়তে হয় তাঁদের। এক অভিভাবক নয়না দাস বলেন, ‘মাঠটা কচুরিপানায় ভর্তি। বেশির ভাগ সময়ে জল জমে থাকে। রাস্তাগুলির খোয়া উঠে গিয়েছে। বাচ্চারা স্কুলে যেতে গিয়ে হোঁচট খায়। ভয়ে ভয়ে স্কুলে নিয়ে আসি।’

    ওই এলাকার বাসিন্দা দেবাশিস মণ্ডল বলেন, ‘নিয়মিত আমরা মাঠে হাঁটতাম। ছেলেমেয়েগুলো মাঠটায় খেলত। জলের জন্য সব বন্ধ।’ বাসিন্দারা জানান, এই মাঠ ঘিরে বহু পুরোনো স্মৃতি রয়েছে। প্রায় ছয় বছর ধরে দেখা যাচ্ছে বছরে প্রায় ৮ মাস মাঠে জল থাকে। আগে বর্ষার সময় জল জমলেও তা পরে নেমে যেত। এখন শীতকালেও জল জমে রয়েছে।

    হাওড়া পুরসভার প্রশাসক মণ্ডলীর চেয়ারম্যান সুজয় চক্রবর্তী বলেন, ‘বামুনগাছি রেলওয়ে কলোনি এলাকায় যে সব ভাঙা রাস্তা রয়েছে, সেগুলি সারানো ও নিচু এলাকায় জল জমার সমস্যা রেলের দেখার কথা। রেল কলোনির আশপাশের যে এলাকা পুরসভার অন্তর্ভুক্ত, সেই সব জায়গায় আমরা রাস্তা সংস্কার করে দিয়েছি।’ জমা জল নিয়ে তিনি রেলকে চিঠি লিখবেন বলেও জানান সুজয়।

  • Link to this news (এই সময়)