দলে রদবদলের প্রস্তুতি প্রায় সেরে ফেলেছে তৃণমূল। লোকসভা ভোটের আগে থেকেই সাংগঠনিক স্তরে সমীক্ষা এবং তার ভিত্তিতে মূল্যায়নও হয়েছে দু’তিন ভাগে। কিন্তু ঘোষণার পরে নির্দিষ্ট সময় পেরিয়ে গেলেও সেই কাজে ‘সবুজ সঙ্কেত’ দেননি তৃণমূল নেত্রী। দলীয় সূত্রে খবর, এই মুহূর্তে সেই ঝাড়াই-বাছাইয়ের কাজ প্রায় শেষ। রাজ্য সরকারের আবাস প্রকল্প ‘বাংলার বাড়ি’ নিয়ে বেশ কয়েক মাস ধরেই প্রশাসনিক স্তরে ব্যস্ততা রয়েছে। ফলে, বিষয়টি নিয়ে প্রয়োজনীয় সময় দিতে পারেননি তৃণমূল নেত্রী। আপাতত ঠিক হয়েছে, ১৫ জানুয়ারির পরে এই রদবদলের কাজ শুরু করা হবে। সাংগঠনিক রদবদলের পাশাপাশি পঞ্চায়েত ও পুরসভা স্তরেও প্রস্তাবিত নতুন মুখ আনার প্রক্রিয়া চলবে। কাজের মূল্যায়নের মতোই পূর্বঘোষিত ‘এক ব্যক্তি, এক পদ’ নীতি কতটা কার্যকর করা যায়, খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
ধর্মতলায় ২১শে জুলাইয়ের সমাবেশ থেকে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় রদবদলের পরিকল্পনা ঘোষণা করেছিলেন। তিনি জানিয়েছিলেন, তিন-চার মাসের মধ্যে দলে এই প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করে ফেলা হবে। প্রাথমিক ভাবে তাঁর তরফে দল ও স্থানীয় প্রশাসনে মূল্যায়ন শেষ করে সুপারিশ জমা দেওয়া হয়েছে নেত্রী মমতার কাছে। তবে মমতা তা পুরোপুরি গ্রহণ করেননি ও কয়েক দফায় পর্যালোচনার পরে বিষয়টি চূড়ান্ত করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সীকে। দলীয় সূত্রে খবর, বক্সী এই নিয়ে অভিষেক ও মমতার সঙ্গে আলোচনা করেছেন। শেষ পর্যন্ত গোটা প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে মমতার বিবেচনার জন্য। কিছু ক্ষেত্রে রদবদলে সমস্যা চিহ্নিত করে মমতা নিজের মত দিয়েছেন। ভারসাম্য রক্ষা করতে কিছু ক্ষেত্রে নাকচও করেছেন।
দলের অন্দরেও নানা গুঞ্জন তৈরি হয়েছে। কোথায় কার জায়গায় কে আসতে পারেন, সেই চর্চা ঘিরে নানা রকম ‘সক্রিয়তা’ও শুরু হয়েছে তৃণমূলের জেলা ও ব্লক স্তরের নেতা-কর্মীদের মধ্যে। কারণ, এই পর্বে জেলা ও ব্লক স্তরেও পদাধিকারী বদলের ভাবনা রয়েছে দলীয় নেতৃত্বের। জানুয়ারি জুড়ে দল একগুচ্ছ কর্মসূচি নিয়েছে। দলীয় নেতৃত্বের একটি সূত্রের ইঙ্গিত, প্রায় চূড়ান্ত হয়ে গেলেও এক বারে নয়, রদবদল চলবে কয়েকটি দফায়। তার পরে নতুন সাংগঠনিক কাঠামোতেই রাজ্য জুড়ে বড় ধরনের জনসংযোগ কর্মসূচিতে নামার কথা রয়েছে অভিষেকের।