• ঝাড়গ্রামে চালু বহু প্রতীক্ষিত রুরাল হাট, মিলবে স্থানীয় হস্তশিল্প সামগ্রী  
    বর্তমান | ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, ঝাড়গ্ৰাম: প্রতীক্ষার অবসান। বুধবার শহরের ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে ঝাড়গ্রাম রুরাল হাটের উদ্বোধন হল। জেলার কুটিরশিল্পজাত সামগ্রী ও হস্তশিল্প সামগ্ৰীর প্রসার ঘটাতেই প্রশাসনের এই উদ্যোগ। উদ্বোধনে মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা, জেলাশাসক সুনীল আগরওয়াল, জেলা পরিষদের সভাধিপতি চিন্ময়ী মারান্ডি, চেয়ারম্যান কবিতা ঘোষ ও প্রশাসনের অন্যান্য আধিকারিকরা উপস্থিত ছিলেন।


    জঙ্গলমহলের কুটিরশিল্পজাত ও হস্তশিল্প সামগ্ৰীর স্বতন্ত্র পরিচিত আছে। জেলা ও জেলার বাইরে যার চাহিদাও আছে। পর্যটকরা বেড়াতে এসে জেলার কুটিরশিল্পজাত ও হস্তশিল্পের জিনিস কিনে নিয়ে যান। এইসব জিনিস এতদিন বাজারে, মেলায় ও দু’-একটি সরকারি ভবনে বিচ্ছিন্ন ভাবে বিক্রি হতো। রাজ্য সরকার এইসব জিনিসপত্রের উৎপাদন বৃদ্ধি ও বিপণনের সামগ্ৰিক পরিকল্পনা নেয়। প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে রুরাল হাট তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়। শহরের ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে দোতলা রুরাল হাট ভবন তৈরি করা হয়। তবে আইনি জটিলতায় গত পাঁচ বছর ধরে ভবনটি পরিত্যক্ত অবস্থায় ছিল। জেলা প্রশাসনের তরফে নতুন করে রুরাল হাট ভবনের সংস্কার করা হয়। রুরাল ভবনে চল্লিশের বেশি স্টল, দুটো মিটিং হল ও ভবনের সামনে অনুষ্ঠান মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে। জেলার ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি উদ্যোগীদের বিনামূল্যে স্টল দেওয়া হয়েছে। তাঁদের অবশ্য জল ও বিদ্যুতের ব্যয় বহন করতে হবে। প্রশাসনের সহযোগিতায় ঝাড়গ্রাম রুরাল হাট বেনিফিশিয়ারিস সোসাইটি হাটের ব্যবস্থাপনা পরিচালনা করবে। জেলাশাসক সুনীল আগরওয়াল বলেন, অবিভক্ত মেদিনীপুর জেলা পরিষদের উদ্যোগে এই রুরাল হাট তৈরি করা হয়েছিল। গত কয়েক বছর ধরে আইনি জটিলতায় হাট চালু করা যায়নি। আগামী দিনে জেলার কুটিরশিল্পজাত দ্রব্য ও হস্তশিল্পের বিকাশে এই হাট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে। পর্যটকরা যাতে এই হাট সম্বন্ধে অবহিত হন, তারজন্য জেলা প্রশাসন প্রচার চালাবে। মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা হাট উদ্বোধনে এসে খুশি চেপে রাখতে পারেননি। তিনি বলেন, রুরাল ভবনটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে এতদিন দেখে মন খারাপ হতো। এই হাট চালু হওয়ায় খুবই ভালো লাগছে। জেলার স্ব উদ্যোগী মহিলারা এবার উপকৃত হবেন। যাঁরা এখানে স্টল পেয়েছেন তাঁরা নিজেদের তৈরি জিনিসপত্র বিক্রি করুন। পর্যটকরা এসে জিনিসপত্র কিনে নিয়ে গেলে সামগ্ৰিকভাবে জেলার আর্থিক বিকাশ ঘটবে। জেলার বাসিন্দাদের হাতের তৈরি জিনিসের স্বতন্ত্র পরিচিতি মিলবে। সেইসঙ্গে তিনি বলেন, এই হাটের প্রচারে জেলার হোটেল ও পর্যটন ব্যবসায়ীদের যুক্ত করতে হবে। সুমনা দাস বলেন, এই হাটে স্টল পেয়েছি। চট ও বাবুই ঘাস দিয়ে হস্তশিল্প তৈরি করে দীর্ঘদিন ধরে বিক্রি করছি। এতদিন বিভিন্ন  মেলায় বিক্রি করতে যেতাম। এবার স্থায়ী স্টলে বসে বিক্রি করতে পারব। আমরাও চাই জেলার নিজস্ব কুটিরশিল্প, হস্তশিল্প সামগ্ৰীর পরিচয় সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ুক। নিতা চট্টোপাধ্যায় বলেন, পাট, উল, কাঁথাস্টিচের জিনিসপত্র তৈরি করে বিক্রি করি। এখানকার মহিলাদের হাতে তৈরি জিনিসে জঙ্গল, পশুপাখি, মানুষের জীবনযাত্রার কথা ফুটে ওঠে। জেলার কুটির ও হস্তশিল্পের প্রসারে প্রশাসনের ধারাবাহিক উদ্যোগ প্রশংসনীয়।


    (ঝাড়গ্রাম রুরাল হাটের উদ্বোধনে মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা।-নিজস্ব চিত্র)
  • Link to this news (বর্তমান)