রাজ্যের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বাড়ি পাচ্ছে পঃ মেদিনীপুর
বর্তমান | ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪
রাজদীপ গোস্বামী, মেদিনীপুর: মাথার উপর শক্তপোক্ত ছাদ তৈরিই ছিল স্বপ্ন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে বাংলার বাড়ি প্রকল্পে রাজ্যের মধ্যে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সবচেয়ে বেশি বাড়ি পাচ্ছে। জেলায় ২লক্ষ ৭৬হাজার ৫১০জনের বাড়ি তৈরি হবে। এতে খুশি জেলার প্রত্যন্ত এলাকার বাসিন্দারা। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রথম ধাপে বাড়ি পাবেন ১লক্ষ ৫৮৭জন। ইতিমধ্যেই তাঁদের জন্য মোট ৬০৩ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। প্রশাসনিক অধিকারিকরা জানাচ্ছেন, জেলায় তিন লক্ষের বেশি বাড়িতে হয়েছে সার্ভের কাজ হয়েছে। স্বচ্ছতার দিকে বিশেষ নজর দেওয়া হয়েছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে জেলায় কয়েক লক্ষ বাসিন্দা উপকৃত হবেন। ধাপে ধাপে জেলায় বাংলার বাড়ি প্রকল্পের সুবিধা একশো শতাংশ যোগ্য মানুষের কাছেই পৌঁছে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে জেলা প্রশাসনের।
জেলাশাসক খুরশিদ আলি কাদরি বলেন, জেলায় বহু মানুষ বাংলার বাড়ি প্রকল্পে বাড়ি পাচ্ছেন। বন্যা বা প্রাকৃতিক দুর্যোগের জেরে বহু মানুষের বাড়ি ভেঙে পড়েছিল। তাঁদের মধ্যে অনেকেই বাড়ি পাচ্ছেন। প্রশাসনের আধিকারিকরা অনেক পরিশ্রম করে কাজ করেছেন। জেলার মানুষের পাশে প্রশাসন সর্বদা থাকবে।
কেন্দ্রীয় সরকার আবাস যোজনার প্রকল্পের টাকা আটকে দিয়েছে। তাই সমস্যায় পড়েছিল বহু দুঃস্থ পরিবার। তবে রাজ্য সরকারের লক্ষ্য, সকলের জন্য স্থায়ী বাসস্থান তৈরি করা। তাই রাজ্য সরকার দ্রুত গৃহহীনদের সমস্যার সমাধান করতে চাইছে। স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিভিন্ন প্রশাসনিক বৈঠক থেকে এই প্রকল্পের কাজ দ্রুত এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা বলেছেন। এমনকী সম্পূর্ণ কাজটি যাতে স্বচ্ছতার সঙ্গে করা হয় সেদিকেও বিশেষ নজর দিতে বলা হয়েছে। অর্থাৎ প্রকৃত গরিব মানুষই যাতে এই প্রকল্পের সুবিধা পান তা দেখতে বলেছেন। উপভোক্তাদের তালিকা ভালোভাবে তৈরি করতে বলা হয়েছে। জানা গিয়েছে, রাজ্যজুড়ে ১২ লক্ষ মানুষ বাংলার বাড়ি প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছেন। এর ফলে উপকৃত হবেন বহু প্রত্যন্ত এলাকার মানুষ।
প্রশাসনের আধিকারিকরা জানাচ্ছেন, ২০২১-’২২ সালে তৈরি হওয়া উপভোক্তাদের তালিকার উপর জেলায় ৩ লক্ষের বেশি বাড়িতে সার্ভে করার কাজ শুরু করে প্রশাসন। মোট ১৭৫৬টি টিম সার্ভে করেছে। মহকুমা শাসক থেকে বিডিওরাও সার্ভের কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। একইসঙ্গে এই প্রকল্পের কাজে স্বচ্ছতা রাখতে প্রায় ৬০ হাজার বাড়িতে সুপার চেকিং করা হয়েছে।
প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, মেদিনীপুর বিধানসভা উপনির্বাচন থাকায় সার্ভের কাজ অনেকটাই দেরিতে শুরু হয়। তাই দ্রুততার সঙ্গে কাজ শেষ করাই বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাড়িয়েছিল। এনিয়ে প্রশাসনিক স্তরে দফায় দফায় বৈঠকও হয়েছে। অনেক এলাকায় দেখা গিয়েছে, বাড়ির বাইরের দেওয়ালে সিমেন্টের আস্তরণ আছে। দেখে মনে হয়েছে পাকা বাড়ি। কিন্তু আধিকারিকরা খতিয়ে দেখেছেন সেটি মাটির বাড়ি। কেশপুরের বাসিন্দা স্বপন মণ্ডল বাংলার বাড়ি প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছেন। তিনি বলেন, মাটির বাড়িতে থাকার অনেক সমস্যা আছে। বিশেষ করে বর্ষার সময় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হওয়ায় সমস্যার মধ্যে পড়েছিলাম। আমরা মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।