SSC-র প্রায় ২৬ হাজার জনের চাকরি বাতিলের মামলার শুনানি চলছে সুপ্রিম কোর্টে। প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার ডিভিশন বেঞ্চে শুরু হয়েছে শুনানি। কলকাতা হাইকোর্টের রায় বহাল রেখে ২০১৬ সালের পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়াই বাতিল করা হবে, না যোগ্য-অযোগ্য চাকরি প্রাপকদের আলাদা করার নির্দেশ দেবে শীর্ষ আদালত, সে দিকেই তাকিয়ে সকলে। বৃহস্পতিবার শুনানি চলাকালীন প্রধান বিচারপতি প্রশ্ন করেন, ‘এটা কি সত্যি যে বেশ কয়েকজনের (ফাঁকা) ব্ল্যাঙ্ক ওএমআর শিট থাকা সত্ত্বেও অযোগ্য প্রার্থীদের নিয়োগ করা হয়েছে?’ রাজ্যের আইনজীবী রাকেশ দ্বিবেদী জানান, গ্রুপ ডি-তে ৪৮ শতাংশ লোক দুর্নীতির মাধ্যমে নিয়োগ হয়েছে৷ অন্যান্য শ্রেণিতে এই দুর্নীতির হার কমেছে৷ সিবিআই এটা বলেনি যে ব্ল্যাঙ্ক ওএমআর শিট থাকা প্রার্থীদের নিয়োগ করা হয়েছে৷ সিবিআই বলেছে , নম্বর বাড়ানো হয়েছে। ৯৫২ জন প্রার্থীর দুর্নীতি প্রমাণিত হয়েছে, বলেছে সিবিআই। প্রধান বিচারপতি শুনানি চলাকালীন SSC-র আইনজীবীকে বলেন, ‘আপনারা সুপারিশ না করলে লোকে নিয়োগপত্র পেল কী করে? ম্যানুপুলেশন বুঝতে পারছি, কিন্তু এটা বুঝতে পারছি না যে কী ভাবে দুর্নীতিগ্রস্তদের নিয়োগপত্র জারি করা হলো? এটা খুব উদ্বেগের বিষয়।’
এ দিনের শুনানিতে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘CBI যা বলছে তার সঙ্গে SSC-র হিসেবের মিল নেই। নম্বর কারচুপি হয়েছে। লিখিত পরীক্ষার নম্বর বাড়ানো হয়েছে।’ প্রধান বিচারপতি এ দিন প্রশ্ন করেন, ‘আপনারা কি চান, হাইকোর্টের রায়ের উপর স্থগিতাদেশ খারিজ করা হোক?’ রাকেশ দ্বিবেদী বলেন, ‘আমরা কোনও প্রার্থীকে নিয়োগ করিনি। হাইকোর্ট এক জনকে মানবিকতার খাতিরে নিয়োগের কথা বলে, একমাত্র তাঁকেই নিয়োগ করা হয়েছিল৷’ প্রধান বিচারপতির প্রশ্ন, ‘রাজ্য সরকার কি এটা সমর্থন করছে যে যোগ্য-অযোগ্য পৃথক করা সম্ভব নয়?’ রাকেশ দ্বিবেদী জানান, এখানে পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়েই প্রশ্ন তোলা হচ্ছে৷ আদালত পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়ার বিষয়টি এড়িয়ে যেতে পারে না।' প্রধান বিচারপতির সংযোজন,
‘আমি জানি না ডাল মে কালা হ্যায়, না সব কুছ হি কালা হ্যায়’
প্রধান বিচারপতি প্রশ্ন করেন, ‘মার্কশিট আপলোড করার সময়ে নম্বর বাড়ানো হয়েছে, এটাই তো দেখা গিয়েছে। গ্রুপ ডি-র রেকমেন্ডশেন কি ছিল? সুপার নিউমেরারি পদ তৈরি করে নিয়োগ হয়েছে...।’
উল্লেখ্য, গত ২২ এপ্রিল ২০১৬ সালের এসএসসির নিয়োগ প্রক্রিয়ার সম্পূর্ণ প্যানেল বাতিল করে দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি মহম্মদ শব্বর রশিদির ডিভিশন বেঞ্চ ওই রায় দিয়েছিল। তার ফলে ২৫,৭৫৩ জন শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মীর চাকরি বাতিল হয়। হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে আপিল মামলা করে রাজ্য। মধ্যশিক্ষা পর্ষদ ও চাকরিহারাদের একাংশও আপিল মামলা করে। হাইকোর্টের রায়ের উপর স্থগিতাদেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট।