• শ্রীরামপুর হেরিটেজ উৎসব: আজ ভার্চুয়াল সূচনা মুখ্যমন্ত্রীর
    এই সময় | ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪
  • এই সময়, শ্রীরামপুর: আজ, বৃহস্পতিবার বিকেলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভার্চুয়াল মাধ্যমে শ্রীরামপুর হেরিটেজ উৎসবের সূচনা করবেন। বুধবার নবান্নে মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তর থেকে শ্রীরামপুর পুর প্রশাসনকে এ কথা জানানো হয়েছে।

    বড়দিন উপলক্ষে পার্ক স্ট্রিটের আদলে হেরিটেজ উৎসবের আয়োজন করেছে শ্রীরামপুর। উৎসবকে ঘিরে স্থানীয়দের মধ্যে উন্মাদনার শেষ নেই। শহরবাসীর এই আগ্রহ দেখে শ্রীরামপুর পুর প্রশাসন চেয়েছিল, মুখ্যমন্ত্রীর হাত দিয়ে শ্রীরামপুরের এই বড়দিনের কার্নিভালের সূচনা হোক। সেই মতো সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় এ ব্যাপারে মুখ্যমন্ত্রীকে অনুরোধ করেন।

    শ্রীরামপুরবাসীর আবেগকে মর্যাদা দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী আজ ভার্চুয়াল মাধ্যমে ওই উৎসবের সূচনা করতে চলেছেন। বুধবার বিকেলে মুখ্যমন্ত্রীর অফিস থেকে বিষয়টি নিশ্চিত করার পর শ্রীরামপুর পুর প্রশাসনে সাজ সাজ রব। শ্রীরামপুরের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে আমরা কৃতজ্ঞ। শ্রীরামপুর হেরিটেজ উৎসবের সূচনা করে মুখ্যমন্ত্রী আমাদের সমৃদ্ধ করবেন।’

    শ্রীরামপুর আদালত লাগোয়া ঐতিহাসিক সেন্ট ওলাভ গির্জাকে কেন্দ্র করে হেরিটেজ উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত, উৎসবের ওই মঞ্চেই ভার্চুয়াল মাধ্যমে উৎসবের সূচনা করে বার্তা দেবেন মুখ্যমন্ত্রী। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মঞ্চে থাকবেন রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী, শ্রীরামপুর পুরসভার পুরপ্রধান গিরিধারী শাহ, উপ–পুরপ্রধান উত্তম নাগ, চেয়ারম্যান পারিষদ সন্তোষকুমার সিং এবং অন্য কাউন্সিলররা।

    পুর প্রশাসন সূত্রে খবর, শিক্ষার প্রসারে অক্ষর শহর শ্রীরামপুরের ভূমিকা, শহরের কৃষ্টি -সংস্কৃতি ও পরম্পরার ইতিহাস ও প্রাচীন এই শহরের বহু ঐতিহ্যের কথা সাধারণ মানুষের সামনে তুলে ধরতেই হেরিটেজ উৎসবের আয়োজন। গোটা শ্রীরামপুর শহরকে ইতিমধ্যেই রকমারি আলোকসজ্জায় সাজিয়ে তোলা হয়েছে। শ্রীরামপুর পুরসভা, সেন্ট ওলাভ গির্জা, ডেনিশ গভর্নর হাউস, দ্য ডেনমার্ক ট্যাভার্ন, শ্রীরামপুর আদালতের উত্তর-দক্ষিণ প্রবেশদ্বার, শ্রীরামপুর ফেরিঘাট— এ সব জায়গায় গেট তৈরি হয়েছে মোট ৩৮টি। ইতিহাসের চিহ্ন রয়েছে যেখানে যেখানে, শহরের এমন ১২টি জায়গা— যেমন মাহেশের রথের অবস্থানস্থল, শ্রীরামপুর কলেজঘাট, নেতাজি সুভাষ অ্যাভিনিউয়ে তৈরি হয়েছে সেল্ফি জোন।

    হেরিটেজ উৎসবে হেরিটেজ শহর শ্রীরামপুরের সড়কপথের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে জলপথকে। ভূতল পরিবহণ নিগমের ব্যবস্থাপনায় হুগলি নদীতে চলবে আলোর মালা পরানো ভেসেল। যা চলবে শ্রীরামপুর থেকে চুঁচুড়া পর্যন্ত। ভেসেলের যাত্রীরা শ্রীরামপুরের সেন্ট ওলাভ গির্জা, চন্দননগরের গির্জা ও ব্যান্ডেল চার্চ ঘুরে দেখার সুযোগ পাবেন। শ্রীরামপুর শহরের বিভিন্ন দ্রষ্টব্য ও ঐতিহাসিক স্থান ঘুরে দেখার সঙ্গে পুরোনো–নতুন সব ধরনের খাবার–দাবারের স্বাদ পাওয়ারও সুযোগ থাকছে।

    মোগলাই পরোটা, মোচার চপ, ভেটকি মাছের রকমারি আইটেম থেকে বিরিয়ানি এবং কন্টিনেন্টাল কিছু আইটেমও পাওয়া যাবে শ্রীরামপুর কার্নিভালে। ওই সব খাবারের মোট ৪০টি স্টল সাজিয়ে বসবে ছোট–বড় ইটারি বা দোকান যেমন, তেমনই দামি রেস্তোরাঁগুলো। হেরিটেজ উৎসবে আয়োজন করা হয়েছে বিভিন্ন ধরনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেরও।

    শ্রীরামপুরের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মাহেশকে পর্যটনকেন্দ্রের আওতায় আনা থেকে তারকেশ্বরের মন্দির ও ফুরফুরা শরিফের যে উন্নয়ন করেছেন, সে রকম আগে কখনও হয়নি।’ শ্রীরামপুরের পুরপ্রধান গিরিধারী শাহ বলেন, ‘হেরিটেজ উৎসব নিয়ে শহর জুড়ে উন্মাদনা তৈরি হয়েছে। আলো দিয়ে সাজানো হয়েছে গোটা শহর। আমরা চাই, সবাই মিলেমিশে উৎসবের আনন্দ উপভোগ করুক।’

    শ্রীরামপুর পুরসভার চেয়ারম্যান পারিষদ সন্তোষকুমার সিংয়ের কথায়, ‘এই উৎসবে ভ্রমণপিপাসুরা নৌকোবিহার করতে পারবেন। তা ছাড়া, শিক্ষার প্রসারে ব্যাপ্টিস্ট মিশনের ভূমিকা, শ্রীরামপুরের ছাপাখানার ইতিহাসের মতো বিষয় নিয়ে আলোচনাসভা হবে উৎসবে। ওই সব আলোচনার ভিডিয়ো করে রেকর্ডিং করে সে সব সংরক্ষণ করা হবে।’

  • Link to this news (এই সময়)