• মোবাইল কেড়েছে মাঠ, পড়ুয়াদের ফুটবলমুখী করতে উদ্যোগী জেলা
    এই সময় | ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪
  • আশিস নন্দী, বারাসত

    বিকেল হলেই ছেলেরা মাঠে যাওয়ার জন্য অস্থির হয়ে পড়ত। মা ঘুমাচ্ছে। সেই ফাঁকে চুপি চুপি জার্সি পরে মাঠের দিকে রওনা দিত ছোট ছেলেগুলিও। মাঠের আশেপাশের বাড়িগুলি শুনতে পেত ফুটবল খেলার হইহই আওয়াজ। এমনকী বাধ সাধত না বৃষ্টিও। কিন্তু সে সব এখন আর দেখা যায় না বললেই চলে। ফুটবলের সেই মান ফিরিয়ে আনতে উদ্যোগী জেলা পরিষদ। নিখরচায় আন্তর্জাতিক মানের ফুটবল প্রশিক্ষণ দিতে চাইছে জেলা পরিষদ।

    বিদেশি কোচ এবং ফুটবল খেলোয়াড়দের এনে জেলার প্রায় শতাধিক কিশোরকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ইতিমধ্যে সেই প্রস্তুতি শেষ পর্যায়ে। শুধু ঝাড়াই বাছাই করে নতুন বছরের শুরুতে ফুটবল কোচিং শুরু করা হবে বলে দাবি জেলা পরিষদের।

    উত্তর ২৪ পরগনা জেলা জুড়ে এক সময় ফুটবল খেলার চর্চা ছিল। স্কুল এবং কলেজ স্তরের পড়ুয়ারাও ফুটবল খেলত। বিকেল হতেই ফুটবল নিয়ে মাঠমুখী হতো গ্রাম এবং শহরতলির ছেলেরা। কিন্তু সে সব এখন অতীত। মোবাইলের আসক্তিতে মাঠে গিয়ে ফুটবল খেলার আগ্রহ অনেকটা কমে গিয়েছে নতুন প্রজন্মের ছেলেদের মধ্যে। অনলাইন গেমে তাদের আগ্রহ বেশি। তা দূর করে গ্রাম এবং শহরতলির ছেলেদের মাঠমুখী করতেই জেলা পরিষদের এই উদ্যোগ।

    জেলা পরিষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, বেলজিয়াম, ফ্রান্স, জাপান, আর্জেন্টিনা–সহ ফুটবলের তারকা দেশের একাধিক কোচের সঙ্গে কথা বলেছেন সভাধিপতি নারায়ণ গোস্বামী৷ তাদের নিয়ে এসে কোচিং করানোর ভাবনা নিয়েছে জেলা পরিষদ। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বয়স অনুযায়ী পাঁচটি গ্রুপ করা হয়েছে। জেলার ৪৭টি সার্কেলের স্কুলকে নিয়ে প্রথমে প্র্যাকটিস ম্যাচ হবে। যেখানে উপস্থিত থাকবেন আন্তর্জাতিক মানের কোচেরা। সেখান থেকেই হবে ঝাড়াই বাছাই। শতাধিক কিশোর খেলোয়াড়কে চিহ্নিত করে তাঁদের কোচিং করানো হবে।

    নারায়ণ বলেন, ‘ফুটবল প্রায় হারিয়ে যেতে বসেছে। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাবনায় আবার সেই খেলা প্রাণ ফিরে পাচ্ছে। জেলাশাসকের সঙ্গে আমি বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে আন্তর্জাতিক মানের কোচ দিয়ে ১০০-এর বেশি কিশোরকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। তাদের প্রোটিন যুক্ত খাবারও দেওয়া হবে। আমরা আশাবাদী এই দল কলকাতা নয় দেশের নাম উজ্জ্বল করবে।’

  • Link to this news (এই সময়)