• ছল–ছুতোয় অশান্তি পাকানো রোজনামচা পলাতক ফক্করের
    এই সময় | ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪
  • অভ্র বন্দ্যোপাধ্যায়, কাটোয়া

    অশান্তি যেন তাঁর রক্তে। সেই ‘রোগ’ সংক্রামিত পরিবারের বাকি সদস্যদের মধ্যেও। সেই অশান্তিই ‘ধর্ম’ আপাতত পলাতক ফকিরুদ্দিন মল্লিক ওরফে ফক্করের।

    ফক্করউদ্দিন ও তাঁর দাদা জাহাঙ্গির মল্লিক সেনাকর্মী। দুই ভাই গ্রামে ফিরলেই তটস্থ হয়ে থাকেন গ্রামবাসী। ফক্কররা বাড়ি ফিরেছেন, অথচ তাঁরা কোনও অশান্তি পাকাবেন না, এ যেন হতেই পারে না। মদ্যপ অবস্থায় কাউকে চড় থাপ্পড় মারা, এমনকী গুলিও করে দেওয়া— সবই সম্ভব তাঁদের পক্ষে।

    কেতুগ্রামের মোড়গ্রাম বাগানপাড়া বীরভূম ও মুর্শিদাবাদ জেলা লাগোয়া। শুধুমাত্র কেতুগ্রাম নয়, জেলার সীমানা পেরিয়ে ওই দুই জেলাতেও অশান্তি পাকিয়ে আসতেন তাঁরা। স্থানীয়রা বলছেন, ‘শান্তি এঁদের কাছে অসহ্য। না নিজেরা ভালো ভাবে থাকবেন না অন্যদের থাকতে দেবেন।’

    দিনকয়েক আগে একটি কাঠামোর দেওয়াল তোলা নিয়ে বচসা বাধে এলাকায়। তার জেরেই ফক্কর শূন্যে গুলি ছুড়েছিলেন বলে অভিযোগ। খবর পেয়ে পুলিশ যখন তাঁকে ধরতে যায়, পরিবারের লোকজন ঝাঁপিয়ে পরে পুলিশের কাছ থেকে ছিনতাই করে নেয় ফক্করকে। পরে বিশাল ফোর্স নিয়ে পুলিশ ফক্করের স্ত্রী–সহ ১০ জনকে গ্রেপ্তার করে। তবে ফক্কর পলাতক।

    এই পরিস্থিতিতে গ্রামে কান পাতলে শোনা যাচ্ছে নানা খবর। ফক্কররা পাঁচ ভাই। বড় ভাইয়ের ব্যবসা, মেজ ভাই কন্ট্রাক্টর, সেজ ভাই জাহাঙ্গির সিআরপিএফ কর্মী ছিলেন। তবে বর্তমানে চাকরি হারিয়ে তিনি গ্রামেই থাকেন বলে খবর। আর এক ভাই ফেরিওয়ালা। ফক্কর কাজ করেন বিএসএফ–এ।

    জানা গিয়েছে, ২০১৯ সালে এক ব্যক্তিকে গুলি করে খুন করার অভিযোগ আছে ফক্কর ও জাহাঙ্গিরের বিরুদ্ধে। পুলিশের হাতে গ্রেপ্তারও হয় তাঁরা। ফক্করের এক ভাইপো মাটির নীচে পোঁতা বোমা তুলতে গেলে বিস্ফোরণে মারা যান। আর এক দাদার হাতেও বোমা ফাটার আঘাত রয়েছে। কিন্তু, ফক্কর এঁদের সবার উপরে। এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, ‘ও আসলে ঝামেলা ছাড়া থাকতেই পারে না। ঝামেলা করাটাই ওর স্বভাব। ওর সঙ্গে কেউ ঝামেলায় না গেলে ও পায়ে পা লাগিয়ে অশান্তি করবে।’

    আর এক গ্রামবাসীর বক্তব্য, ‘ওই বাড়ির বেশির ভাগ মানুষই এমন। ওরা প্রায় সবাই কোনও না কোনও ঝামেলায় জড়িয়ে।’ পুলিশ এখন খুঁজে বেড়াচ্ছে ফক্করকে। কাটোয়ার এসডিপিও কাশীনাথ মিস্ত্রি বলেন, ‘আমরা ফক্করের খোঁজ চালাচ্ছি। আশা করছি, দ্রুত ওকে গ্রেপ্তার করা যাবে।’

  • Link to this news (এই সময়)