পশ্চিম মেদিনীপুরের আলু মূলত ঝাড়খণ্ড ও ছত্তীসগঢ়ে যায়। কিন্তু এ বছর বাজারদর বেশি থাকায় আলু বাইরের রাজ্যে পাঠানোয় রাজ্য সরকার কড়াকড়ি শুরু করেছে বলে দীর্ঘ দিনের অভিযোগ ব্যবসায়ীদের। অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রী মমতাই এক বার আলু ‘রফতানি’ বন্ধ করার কথা বলেছিলেন বাজারে আলুর দাম নিয়ন্ত্রণের উপায় হিসাবে। তার পর থেকেই রাজ্যের সীমানায় আলুর গাড়ি আটকানো শুরু হয়। এ নিয়ে আলু ব্যবসায়ীরা রাজ্য সরকারের সঙ্গে বৈঠকেও বসেছিলেন। কিন্তু সুরাহা হয়নি বলেই দাবি। সেই কারণেই এ বার বাধ্য হয়েই পশ্চিম মেদিনীপুরের ব্যবসায়ীরা মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ হয়েছেন বলে জানিয়েছেন তাঁরা। জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছে তাঁরা সেই বার্তা পৌঁছেও দিয়েছে ওই ব্যবসায়ীদের সংগঠন।
ওই ব্যবসায়ীদের বক্তব্য, পশ্চিম মেদিনীপুরে হিমঘরে এখনও ১ লক্ষ ৬৫ হাজার মেট্রিক টন আলু মজুত রয়েছে। ৩১ ডিসেম্বর হিমঘর বন্ধ হয়ে যাবে। ফলে ওই মজুত আলু অবিলম্বে বার করতে হবে। অন্য দিকে, ওই পরিমাণ আলু রাজ্যের চাহিদার তুলনায় অনেক বেশি। তাই ‘রফতানি’তে বাধা থাকার কথা নয়। তা সত্ত্বেও রাজ্যের সীমানায় গাড়ি আটকে দেওয়া হচ্ছে।
আলু ব্যবসায়ী সমিতির পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক বরুণ পণ্ডিত বলেন, ‘‘জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারের মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে দাবি পৌঁছনোর চেষ্টা করেছি। হিমঘরে এখনও যে পরিমাণ আলু মজুত রয়েছে, তাতে আর মাত্র ১০ দিন সময় রয়েছে। সেই আলু বার না-করতে পারলে মাথায় হাত পড়বে চাষিদের।’’
ব্যবসায়ীরা জানান, পশ্চিম মেদিনীপুরে যে ধরনের আলু উৎপাদন হয়, তা কলকাতার বাজারে যায় না। যায় মূলত ঝাড়গ্রামের সীমানা হয়ে ঝাড়খণ্ড এবং ছত্তীসগঢ়ে। সেই কারণে ওই আলু ‘রফতানি’ করা জরুরি। এ দিকে কোনও নির্দেশিকা ছাড়াই আলুর গাড়ি যেতে দেওয়া হচ্ছে না। বুধবার ঝাড়গ্রাম দিয়ে নিয়ে যাওয়া ২০টি আলুর গাড়ি ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ ব্যবসায়ীদের। তার পরেই মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আর্জি জানান তাঁরা। বরুণ জানান, জেলাশাসক তাঁদের আবেদন খতিয়ে দেখার পর রাজ্য সরকারের কাছে রিপোর্ট পাঠাবেন বলে জানিয়েছেন।