সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে আদালতে মিথ্যা কথা বলার অভিযোগ তুলেছিলেন আগেই। এ বার আরজি করকাণ্ডে নিহত মহিলা চিকিৎসকের বাবা-মা সরাসরি তদন্তকারী কেন্দ্রীয় সংস্থার বিরুদ্ধে প্রমাণ লোপাটের অভিযোগ তুললেন। সেই সঙ্গে জানিয়েছেন, সিবিআইয়ের তদন্তে তাঁদের কোনও আস্থা নেই। বৃহস্পতিবার দুপুর নির্যাতিতার পরিবার হাই কোর্টকে জানায় বিচার প্রক্রিয়ায় অনেক খুঁত রয়েছে।
হাই কোর্টের নির্দেশের পরে ধর্ষিতা ও নিহত চিকিৎসকের বাবা বলেন, ‘‘সিবিআই ইচ্ছাকৃত ভাবেই ছেড়ে দিল বলে আমাদের মনে হল।’’ তবে সেই সঙ্গেই জানান, হতাশ হলেও সিবিআইয়ের কাছে যাওয়া ছাড়া তাঁদের সামনে কোনও পথ খোলা নেই। অন্য দিকে, নির্যাতিতার মা বলেন, ‘‘রাতে ও যে চার জনের সঙ্গে ছিল, তাদের কাউকে গ্রেফতার করেনি। দু’জনকে সাক্ষী রেখেছে, দু’জনকে রাখেনি।
সিবিআই তদন্ত নিয়ে নির্যাতিতার বাবা-মায়ের ক্ষোভের আঁচ মিলেছিল গত ১০ ডিসেম্বর। সে দিন সুপ্রিম কোর্টে আরজি কর মামলার শুনানি ছিল। প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্না এবং বিচারপতি সঞ্জয় কুমারের বেঞ্চে আরজি করের ওই মহিলা চিকিৎসক-পড়ুয়ার ধর্ষণ এবং খুনের বিচারপ্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। প্রধান বিচারপতিই জানতে চান, কত দিনে বিচারপ্রক্রিয়া শেষ হবে? সিবিআইয়ের আইনজীবী তুষার মেহতা আদালতে জানান, দ্রুতই বিচারপ্রক্রিয়া শেষ হবে। এমনকি, নির্যাতিতার পরিবারের আইনজীবী বৃন্দা গ্রোভারও জানান, নিম্ন আদালতে প্রায় প্রতি দিন বিচারপ্রক্রিয়ার শুনানি হচ্ছে। শীর্ষ আদালত আগেই এই মামলার শুনানিতে সিবিআইকে বলেছিল, নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে যেন যোগাযোগ রাখেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারীরা। নির্যাতিতার বাবা-মা সে দিন সুপ্রিম কোর্টে অভিযোগ করেছিলেন, সিবিআই তাঁদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করে না।
নির্যাতিতার বাবা সে দিন বলেছিলেন, ‘‘আদালতে দাঁড়িয়ে এ ভাবে মিথ্যা বলা যায়, তা আমরা জানতাম না। সেই মিথ্যার উপর সুপ্রিম কোর্ট নজরদারি চালাচ্ছে। সিবিআই আদালতে বলছে, তারা আমাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে। কিন্তু আমরা কিছুই জানতে পারি না।’’ আরজি করের মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় তথ্যপ্রমাণ লোপাট এবং কর্তব্যে গাফিলতি মামলায় ৯০ দিন পেরিয়ে গেলেও চার্জশিট দিতে পারেনি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। চার্জশিট না দেওয়ায় এই মামলায় ধৃত আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ এবং টালা থানার প্রাক্তন ওসি অভিজিৎ মণ্ডলের জামিন মঞ্জুর করে আদালত, যা নিয়েও ক্ষুব্ধ নির্যাতিতার পরিবার। ন্যায়বিচারের দাবিতে তাঁরা একটি ফেসবুক পেজও চালু করেছেন ইতিমধ্যেই। নির্যাতিতার পরিবারের আইনজীবী গার্গী গোস্বামী জানান, তদন্ত এবং নিম্ন আদালতে বিচার প্রক্রিয়ায় খুঁত রয়েছে বলে হাই কোর্টের নজরদারির জন্য আবেদন জানিয়েছেন তাঁরা।