সংবাদদাতা বেলদা: স্বাধীনতার আগে তৈরি হয়েছিল স্কুল, কিন্তু সেই স্কুলের ছিল না কোনও নিজস্ব জায়গা। অন্যের জায়গায় স্কুল তৈরি হওয়ায় স্কুল উন্নয়নে টাকা বরাদ্দ করতে সমস্যা হচ্ছিল শিক্ষাদপ্তরের। অবশেষে সেই জায়গা স্কুলের নামে হস্তান্তরিত করলেন জমিদাতারা। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যানের সহযোগিতায় দাঁতনের মালপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মিটল জমি সংক্রান্ত সমস্যা। এতে খুশি স্কুল কর্তৃপক্ষ থেকে এলাকাবাসীরা।
স্বাধীনতার পূর্বে ১৯৪৫ সালে দাঁতনের মালপাড়া গ্রামে গড়ে উঠেছিল মালপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়। বিদ্যালয়টি গড়ে উঠলেও সেই বিদ্যালয়ের জমির হস্তান্তর হয়নি এতদিন। এই স্কুলের ওপর নির্ভর করে থাকেন সুবর্ণরেখা নদী তীরবর্তী মালপাড়া ও মোয়ারুই দু’টি মৌজার বাসিন্দারা। তৎকালীন সময় গ্রামের ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের প্রাথমিক শিক্ষাদানের উদ্দেশ্যে এই বিদ্যালয়ে গড়ে তোলার উদ্যোগ নেন স্থানীয়রা। তখনই মৌখিকভাবে জমি দান করেন ওই এলাকার বর্ধিষ্ণু প্রধান পরিবার। প্রয়াত রাম প্রধানের মৌখিক দানের ভিত্তিতে ওই জমিতেই গড়ে উঠেছিল প্রাথমিক বিদ্যালয়। কিন্তু দীর্ঘদিন পেরিয়ে গেলেও ওই ১৮১ নম্বর দাগের জমিটি স্কুলের নামে হস্তান্তরিত হয়নি। কেউই উদ্যোগী না হওয়ায় সেই জটিলতা থেকে যায়। সম্প্রতি সব পক্ষ এগিয়ে এলে সেই জট কাটে। রাম প্রধানের চতুর্থ পুরুষরা শেষ পর্যন্ত জমিটি দানপত্র দলিল দিলেন বিদ্যালয়কে। গ্রামের প্রধান পরিবারের মোট সাতজন শিবনারায়ণ প্রধান, মাধব প্রধান, গীতা প্রধান, প্রফুল্ল প্রধান, অমূল্য প্রধান, রবীন্দ্রনাথ প্রধান ও অমল প্রধান জমি দান করেন। বিদ্যালয়টি মোয়ারুই মৌজার অন্তর্ভুক্ত হলেও মালপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয় নামে পরিচিত। দুই মৌজার মানুষের প্রয়াসে গড়ে ওঠে বিদ্যালয়টি। বর্তমানে ১১০ জন পড়ুয়া ও ৪ জন শিক্ষক। দাতা পরিবারের সদস্য শিবনারায়ণ প্রধান বলেন, ‘বিদ্যালয়ের পরিবেশ, পঠনপাঠন ভালো। আমাদের পূর্বপুরুষ এই বিদ্যালয়কে মৌখিকভাবে জমি দিয়ে গিয়েছিলেন।
তবে বিষয়টি নিয়ে পরে তেমন কোনও তদ্বির না থাকায় আমরাও গুরুত্ব দিইনি। বর্তমানে গ্রামের মানুষজন ও বিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ জানালে আমরা সম্মত হই।’
তবে জমিটি কেন এতদিন হস্তান্তর হয়নি সে বিষয়ে বলতে গিয়ে প্রধান শিক্ষক রবীন্দ্রনাথ রাজ বলেন, আমি ২০০৬ সাল থেকে এই স্কুলে থাকলেও ১৬ সালে প্রধান শিক্ষক নিযুক্ত হই। সীমানা প্রাচীর মিড ডে মিলের কক্ষ নির্মাণের সময় আর্থিক অনুদানের বিষয়ে সমস্যার মধ্যে পড়তে হয়। আর তখনই হস্তান্তরের কথা বলি। এরপর প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান অনিমেষ দে এ বিষয়ে সহযোগিতা করেন। বর্তমানে স্কুলের জন্য এই ৭ ডেসমিল জমি হস্তান্তরিত করেছে প্রধান পরিবার।-নিজস্ব চিত্র