• ঝাড়গ্রামে পর্যটকদের নতুন আকর্ষণ চিল্কিগড়ের ‘ডুংরি’
    বর্তমান | ২০ ডিসেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, ঝাড়গ্ৰাম: সবুজ অরণ্যের মাঝে বড় বড় সাদা পাথরের চাঁই। স্থানীয় ভাষায় যার নাম ‘ডুংরি’। ঝাড়গ্রামের এই ডুংরি এখন পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণ। স্থানীয় বাসিন্দারা এই এলাকাকে পবিত্র মনে করেন। ঝাড়গ্রাম শহর থেকে ১৯ কিমি দূরে কনকদুর্গা মন্দির যাওয়ার পথে চিল্কিগড় বাজার থেকে দক্ষিণ দিকে বাহিরগ্রামের রাস্তা দিয়ে জামবনি ব্লকের রানিপাল গ্ৰাম লাগোয়া ডুংরিতে পৌঁছনো যায়। এই জঙ্গলে খরগোশ, বুনো শুয়োর ও নানা জাতির পাখি দেখা যায়। মাঝেমধ্যে হাতির পালও ঢুকে পড়ে। ঘন এই জঙ্গল স্থানীয় বাসিন্দারা এড়িয়েই চলেন। সবুজ শাল জঙ্গলের মাঝে সাদা পাথরের বড় বড় চাই এলাকার সৌন্দর্য বাড়িয়ে তুলেছে। সাধারণত পর্যটকরা চিল্কিগড় কনকদুর্গা মন্দির, জীব বৈচিত্র্য পার্ক, চিল্কিগড় রাজবাড়ি দেখেই সন্তুষ্ট থাকতেন। ডুংরি ছিল প্রায় অজানা। মূলত ট্রেকাররাই এতদিন এখানে আসতেন। কিন্তু ক্রমে লোকমুখে ডুংরির পরিচিত বাড়তেই সাধারণ পর্যটকেরও ভিড় বাড়ছে। এই এলাকায় যাওয়ার ভালো রাস্তা, বসার জায়গা ও অনান্য পরিকাঠামো গড়ে তুললে পর্যটক আরও বাড়বে। এলাকার মানুষ কাজ পাবেন। আর্থিক উন্নতি হবে। এই বছর শীতের পড়তেই বেলপাহাড়ী, নয়াগ্রামের তপোবন, গোপীবল্লভপুরের ঝিল্লির পাখিরালয়, ঝাড়গ্রাম রাজবাড়ি বেড়ানোর পাশাপাশি চিল্কিগড় কনকদুর্গা মন্দির ও অর঩ণ্যের টানে বাইরে থেকে পর্যটক আসা শুরু হয়ে গিয়েছে। রানিপাল গ্ৰামের বাসিন্দা সুদর্শন মাহাত বলেন, সবুজ জঙ্গলের মধ্যে সাদা পাথরের বড় বড় চাই রয়েছে। এলাকার মানুষ জায়গাটিকে পবিত্র স্থান হিসেবে মানেন। আগে এই এলাকায় পর্যটকদের সেভাবে দেখা যেত না। সম্প্রতি পর্যটকরা আসতে শুরু করেছেন। জায়গাটিকে পর্যটনস্থল হিসেবে গড়ে তোলার দাবিও উঠছে। পর্যটক এলে হোটেল, রিসর্ট, হোম স্টে তৈরি হবে। স্থানীয় মানুষ কাজ পাবেন। এলাকার আর্থিক উন্নতি হবে। জামবনির এক বাসিন্দা অবশ্য বলেন, স্থানীয় লোকেরা জায়গাটি পবিত্র স্থান হিসেবে মানেন। পবিত্রতা বজায় রেখে মানুষজন যদি ঘোরাঘুরি করেন তাহলে কোনও অসুবিধা নেই। পর্যটন স্থান হিসেবে জায়গাটি গড়ে উঠুক। কলকাতার গড়িয়ার বাসিন্দা অভিজ্ঞান রায়চৌধুরী বলেন, পরিচিত পর্যটনস্থলে ভিড় হয়। অপরিচিত জায়গায় ঘুরতে ভালো লাগে। গত বছর তিন-চারজন বন্ধু মিলে বাইকে করে এখানে এসেছিলাম। এবারও এসেছি। প্রকৃতির এমন সৌন্দর্য সব জায়গায় দেখা যায় না। ঝাড়গ্রামের অরণ্যে এমন অনেক জায়গা আছে যা সাধারণ পর্যটকদের অজানা। ঝাড়গ্রাম হোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক শিবাশিস চট্টোপাধ্যায় বলেন, শীত পড়তেই পর্যটকের ভিড় বাড়ছে। পর্যটকদের মধ্যে অজানা জায়গা যাওয়ার ট্রেন্ড দেখছি। বেলপাহাড়ীর গোহম বাঁধ, চিল্কিগড়ের ডুংরি তাদের মধ্যে অন্যতম। রাস্তাঘাট, শৌচালয়, বসার পরিকাঠামো গড়ে উঠলে আরও পর্যটক আসবে। জামবনি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মধুসূদন মুর্মু বলেন, ডুংরিকে পর্যটনস্থল হিসেবে গড়ে তোলা হোক। ব্লক প্রশাসনকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। পর্যটক এলে এলাকার আর্থিক উন্নতি হবে। -নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)