প্রসূতি ও সদ্যোজাতদের চিকিৎসায় চালু হচ্ছে মাদার অ্যান্ড চাইল্ড হাব
বর্তমান | ২০ ডিসেম্বর ২০২৪
সংবাদদাতা, রামপুরহাট: প্রসূতি ও সদ্যোজাতদের উন্নত চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়ার লক্ষ্যে খুব শীঘ্রই রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মাদার অ্যান্ড চাইল্ড হাব চালু হতে চলেছে। সেইসঙ্গে বেড না পেয়ে মুমূর্ষু রোগীকে বর্ধমান অথবা কলকাতায় নিয়ে যেতে হবে না। এই মেডিক্যালেই চালু হতে চলেছে ক্রিটিক্যাল কেয়ার ব্লক(সিসিবি)। বৃহস্পতিবার নবনির্মিত দু’টি ভবন নির্মাণ সংস্থার পক্ষ থেকে মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষকে হস্তান্তর করা হয়। বীরভূম তো বটেই, লাগোয়া মুর্শিদাবাদ ও ঝাড়খণ্ড এলাকার মা ও শিশু এবং মুমূর্ষু রোগীদের চিকিৎসার ক্ষেত্রে এই হাব ও সিসিবি আগামী দিনে উল্লেখযোগ্য হয়ে উঠবে বলে আশাবাদী মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষ।
জেলার বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে রোগীদের এখানে রেফার করা হয়। এছাড়া লাগোয়া মুর্শিদাবাদ ও ঝাড়খণ্ডের বহু গ্রাম থেকে রোগীরা মেডিক্যালের উপরই ভরসা করেন। রাজ্য সরকার প্রসূতি ও সদ্যোজাত শিশুদের কথা মাথায় রেখে এই হাসপাতালে মাদার অ্যান্ড চাইল্ড হাব তৈরির উদ্যোগ নেয়। যার জন্য রাজ্য সরকার ১৬ কোটিরও বেশি টাকা বরাদ্দ করে। গতবছর ফেব্রুয়ারি মাসে ১৫০ বেডের এই হাব তৈরির কাজ শুরু হয়। যা সম্প্রতি শেষ হয়েছে।
মেডিক্যালের পুরনো বিল্ডিংয়ে মাত্র ১২টি বেডের সিসিইউ ইউনিট রয়েছে। বেড না পেয়ে অনেক মুমূর্ষু রোগীকে বর্ধমান অথবা কলকাতায় রেফার করতে হয়। সেখানে রোগীকে নিয়ে যাওয়া অনেকটাই ব্যয়সাপেক্ষ। সেইসমস্ত রোগীদের কথা চিন্তা করে পৃথক ক্রিটিক্যাল কেয়ার ব্লকের অনুমোদন করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেইমতো রাজ্য স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দপ্তর প্রায় ১৮কোটি টাকা বরাদ্দ করে। গতবছর আগস্টে যার ভার্চুয়ালি শিলান্যাস করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। চারতলা সেই বিল্ডিং নির্মাণের কাজও শেষ হয়েছে। বৃহস্পতিবার দু’টি বিল্ডিংই নির্মাণকারী সংস্থা মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষকে হস্তান্তর করে। মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষের দাবি, এই সিসিবি মেডিক্যালের স্বাস্থ্য পরিষেবায় আমূল পরিবর্তন আনতে চলেছে। এই এলাকাতেই বহু মরণাপন্ন রোগী বিনামূল্যে উন্নত চিকিৎসা পাবেন। তাছাড়া রোগীর চাপের কারণে সবসময় প্রসূতিদের বেড দেওয়া যেমন সম্ভব হয় না, তেমনই উন্নত পরিষেবা দিতে সমস্যা হচ্ছিল। মাদার অ্যান্ড চাইল্ড হাব হওয়ায় সেখানে উন্নত পরিকাঠামোর পাশাপাশি বাড়তি ডাক্তার-নার্স মিলবে। ফলে আরও ভালো পরিষেবা দেওয়া সম্ভব হবে। এক ছাতার তলায় চলে আসবে শিশু ও মা।
জানা গিয়েছে, সিসিবি বিল্ডিংয়ে আইসিইউ, এইচডিইউ, নিউবর্ন ক্রিটিক্যাল কেয়ার, মেটারনিটি ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট থাকবে। পাশাপাশি থাকবে সিটি স্ক্যানের সুবিধাযুক্ত রেডিওলজি বিভাগ। থাকবে অপারেশন থিয়েটারও।
মেডিক্যালের এমএসভিপি পলাশ দাস বলেন, আপাতত মাদার অ্যান্ড চাইল্ড হাবে মা ও শিশুদের আউটডোর বিভাগ সরিয়ে আনা হবে। সিসিবিতে এক্সরে ও সিটিস্ক্যান বিভাগ সরিয়ে আনা হবে। এরপর ধীরে ধীরে দু’টি বিল্ডিংয়েই বাকি বিভাগগুলিও সরিয়ে আনার পাশাপাশি নতুন পরিষেবা চালু করা হবে।
এলাকার বিধায়ক তথা এই মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের গভর্নমেন্ট নমিনি আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, স্বাধীনতার পর রামপুরহাট সহ বিস্তীর্ণ এলাকার জন্য এত বড় স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর প্রকল্প আগে হয়নি। প্রসূতি ও সদ্যোজাতদের সমস্ত ধরনের চিকিৎসা হবে। জটিল ও মুমূর্ষু রোগীদের আর বর্ধমান বা কলকাতার উপর ভরসা করতে হবে না। এজন্য মুখ্যমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানাচ্ছি।