সংবাদদাতা, মাথাভাঙা: মর্মান্তিক ঘটনা মাথাভাঙা-১ ব্লকের জোরপাটকি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার হাসেনের ঘাটে। বৃহস্পতিবার ধরলা নদীতে শামুক-ঝিনুক কুড়োতে নেমে একই পরিবারের তিন ভাই-বোনের মৃত্যুর ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। মামাতো ভাইয়ের সঙ্গে নদীতে শামুক-ঝিনুক কুড়োতে গিয়েছিল দুই বালক-বালিকা। আচমকা তিনজন গভীর জলে চলে যায়। স্থানীয়রা এসে তিনজনকে জল থেকে তোলেন। কিন্তু ততক্ষণে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। একজনকে তড়িঘড়ি মাথাভাঙা মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও চিকিৎসক মৃত বলে জানান। কান্নায় ভেঙে পড়েছে গোটা পরিবার। ঘনঘন মূর্ছা যান তাদের মা মাধবী বর্মন ও পূরবী অধিকারী। পুলিস মৃত তিনজনের দেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়।
স্থানীয় ও মৃতদের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতরা হল— সুস্মিতা অধিকারী (১৩), অঙ্কুশ অধিকারী (১১) ও আকাশ বর্মন (১২)। সুস্মিতা ও অঙ্কুশ ভাই-বোন। তাদের বাড়ি শীতলকুচি ব্লকের বড়কৈমারিতে। তারা মায়ের সঙ্গে মামা অনুকূল বর্মনের বাড়িতে বেড়াতে এসেছিল। এদিন পূরবী ও মাধবী ধরলায় শামুক-ঝিনুক কুড়োতে যান। দুপুরে মামাতো ভাই আকাশের সঙ্গে সুস্মিতা ও অঙ্কুশ যায় নদীর ধারে। সকলে একসঙ্গে শামুক-ঝিনুক কুড়োচ্ছিল। কিছু সময়ের মধ্যেই তিন ভাই-বোন এগতে এগতে গভীর জলে চলে যায়। পূরবী ও মাধবী সন্তানদের জলে ডুবতে দেখে চিৎকার শুরু করেন। তাঁদের চিৎকার শুনে ছুটে আসেন স্থানীয়রা। তাঁরা অনেক খুঁজে তিনজনকে জল থেকে তুলে নিয়ে আসেন।
সুস্মিতা ও অঙ্কুশ ঘটনাস্থলেই মারা যায়। আকাশকে মাথাভাঙা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন। ছেলেমেয়ের মৃত্যুতে কান্নায় ভেঙে পড়েন পূরবী। খবর পেয়ে চলে আসেন সুস্মিতার বাবা যোগেন অধিকারী। তিনিও কান্নায় ভেঙে পড়েন। ধরলা নদীর হাসেনের ঘাটে প্রচুর মানুষের জমায়েত হয়। পরে পুলিস এসে মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠায়।
এ ব্যাপারে মাথাভাঙার এসডিপিও সমরেন হালদার বলেন, হাসেনের ঘাটে ধরলা নদীতে তিনজন কিশোর-কিশোরীর মৃত্যু হয়েছে জলে ডুবে। মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য হামিদা বিবি বলেন, খুবই মর্মান্তিক ঘটনা। ভাই-বোন সহ তিনজনের মৃত্যু কোনওভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। আমরা পরিবারটির পাশে রয়েছি।