নিজস্ব প্রতিনিধি, চুঁচুড়া: ট্রাক্টর উল্টে মারা গেলেন তিন শ্রমিক। বৃহস্পতিবার দুপুরে পাণ্ডুয়ায় এই দুর্ঘটনার পর ওই শ্রমিকদের স্থানীয় এক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সন্ধ্যায় তাঁদের তিনজনকেই মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিত্সকরা।
সূত্রের খবর, এদিন দুপুরে ধান তোলার জন্য ট্রাক্টরে চেপে মাঠে গিয়েছিলেন ওই তিন শ্রমিক। রাস্তা থেকে মাঠে নামার সময় ট্রাক্টরটি উল্টে গেলে তিনজনই ছিটকে নীচে পড়ে যান। গুরুতর জখম হন তাঁরা। মৃত তিন ব্যক্তি হলেন অঞ্জন হেমব্রম, বিশ্বজিত্ বাস্কে ও উত্তম হাঁসদা। জানা গিয়েছে, অঞ্জন হেমব্রম নিজেই ট্রাক্টরটি চালাচ্ছিলেন।
পাণ্ডুয়ার জামনা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে। মৃত তিন শ্রমিকই পিরা গ্রামের বাসিন্দা বলে জানা গিয়েছে। তাঁরা মূলগ্রামে ধান তুলতে যাচ্ছিলেন। স্থানীয় বাসিন্দা শিবনাথ সোরেন বলেন, ‘মূলগ্রাম ব্রিজ থেকে নেমে মাঠের দিকে যাওয়ার সময় ট্রাক্টরটি উল্টে যায়। এই তিনজনই ধান কাটার কাজ করেন।’ মৃতদের বয়স ২৮ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে বলে অনুমান পুলিসের। স্থানীয় সূত্রে খবর, এই তিনজনের মধ্যে অম্লান ট্রাক্টর চালাচ্ছিলেন। বাকি দু’জন বসেছিলেন ট্রাক্টরের ভিতরে। রাস্তা থেকে মাঠের নামার মুহূর্তে ট্রাক্টরটি উল্টে গেলে তাঁরা ছিটকে মাঠে পড়ে যান। ট্রাক্টরের নীচে চাপা পড়ে যান তিন শ্রমিক। তীব্র আওয়াজে ছুটে আসেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁরাই জখম শ্রমিকদের উদ্ধার করার চেষ্টা করেন।
খবর দেওয়া হয় পুলিসে। খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে আসেন পাণ্ডুয়া ও বৈঁচি ফাঁড়ির পুলিস আধিকারিকরা। সেখান থেকে তাঁদেরকে পাণ্ডুয়া গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সূত্রের খবর, এই তিনজনই তাঁদের পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী। অঞ্জন হেমব্রম এতদিন সহায়ক হিসেবে কাজ করলেও এই প্রথম নিজে এই কাজের বরাত পেয়েছিলেন। বিশ্বজিত্ বাস্কে ও উত্তম হাঁসদা ছিলেন তাঁর সহযোগী। এই ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমেছে।
স্থানীয় তৃণমূল নেতা সঞ্জয় ঘোষ বলেন, ‘অত্যন্ত মর্মান্তিক ঘটনা। আরও সাবধানে ট্রাক্টর চালানো দরকার। এই সময় আমাদের গ্রামে ধান তোলার সময়। চারদিকে আনন্দের আবহ থাকে। কিছুদিন আগেই নবান্ন উত্সব হয়ে গেল। তার মধ্যেই এই মর্মান্তিক খবরে গোটা গ্রামে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।’