মৈপীঠের গ্রামে বাঘের আতঙ্ক চলছেই, এবার আক্রান্ত পড়ুয়া
বর্তমান | ২০ ডিসেম্বর ২০২৪
সংবাদদাতা, বারুইপুর: রাতভর টানা উত্তেজনার পর বাঘ জঙ্গলে ফিরে যাওয়ায় স্বস্তি ফিরেছিল গোটা গ্রামে। কিন্তু তা দীর্ঘস্থায়ী হল না। সন্ধ্যায় ফের এক ছাত্র বাঘের আক্রমণের মুখে পড়ল মৈপীঠের ভুবনেশ্বরী পঞ্চায়েতের দেবীপুর নকুলের মোড়ে। আক্রান্তের নাম রাহুল হালদার। বাঘ তার পিঠে আঁচড় দিয়েছে। খবর পেয়ে ফের বনদপ্তরের কর্মীর সেখানে গিয়েছে। এর আগে বুধবার সন্ধ্যায় মৈপীঠের ভুবনেশ্বরী গ্রাম পঞ্চায়েতের গুড়গুড়িয়া এলাকায় বাঘের আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। দুই যুবক বাইক চেপে জঙ্গলের পাশের রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় একটি বাঘ দেখতে পেয়েছিলেন। বনদপ্তরের কর্মীরা এলাকায় এসে নজরদারি শুরু করেন। রাতভর বাজি ফাটানো হয়। বৃহস্পতিবার ভোরের দিকে আবার বনদপ্তরের কর্মীরা পায়ের ছাপ ধরে জঙ্গলে নেমে পর্যবেক্ষণ চালান। তারপর জানা যায়, বাঘ মাকড়ি নদী পার হয়ে আজমলমারি জঙ্গলে চলে গিয়েছে। কিন্তু সন্ধ্যায় পাশের গ্রামে বাঘের আক্রমণে ফের আতঙ্ক ছড়াল। ওই বাঘটিই ফিরে এসেছে কি না, তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে। না কি নতুন কোনও বাঘ এলাকায় ঢুকেছে, খতিয়ে দেখছে বনদপ্তর।
মৈপীঠের বিভিন্ন গ্রামে কয়েকদিন ধরেই বাঘের আনাগোনা চলছে বলে দাবি বাসিন্দাদের। তার জেরে বেশ কিছু গ্রামে আতঙ্ক রয়ে গিয়েছে। বনদপ্তরের কর্মীদের অনুমান, জাল কিছু জায়গায় ছেঁড়া রয়েছে। এছাড়া জঙ্গল থেকে বেরিয়ে খাঁড়ির দিকে কোনও জাল নেই। সেই সুযোগে বাঘ বেরিয়ে পড়ছে। নদী পেরিয়ে লোকালয়ের কাছাকাছি চলে আসছে। অবশ্য দক্ষিণ ২৪ পরগনা বন বিভাগের এক আধিকারিক বলেন, নাইলনের জাল নতুন করে লাগানো হয়েছে। কিন্তু স্থানীয় মৎস্যজীবীরা সেই জাল ছিঁড়ে দিচ্ছে। এছাড়া খাঁড়ির দিকে কিছু অংশে জাল দেওয়া বাকি আছে।
এদিকে, নদীতে কাঁকড়া ধরতে গিয়ে বাঘের আক্রমণে মৃত্যু হল বর্ণধর মণ্ডল (২৪) নামে এক মৎস্যজীবীর। ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার সুন্দরবনের বৈঠাভাঙা জঙ্গলে। মৈপীঠ উপকূল থানার দক্ষিণ বৈকুণ্ঠপুর এলাকার পাঁচ মৎস্যজীবী এদিন সকালে নদীতে কাঁকড়া ধরার জন্য বের হন। নৌকায় বসে কাঁকড়া ধরছিলেন বর্ণধর। অন্যরা তাঁর পিছনেই ছিলেন। আচমকা বাঘ জঙ্গল থেকে বেরিয়ে আক্রমণ করে বর্ণধরকে। মাথায় কামড় দিয়ে জঙ্গলের দিকে টেনে নিয়ে যেতে থাকে। সঙ্গীরা লাঠি, বৈঠা নিয়ে বাঘের দিকে ছুটে আসেন। বাঘ শিকার ছেড়ে দিয়ে জঙ্গলে ঢুকে যায়। ততক্ষণে মৃত্যু হয়েছে বর্ণধর। সঙ্গীরা তাঁর দেহ নিয়ে গ্রামে ফেরেন।