এই সময়: ১৯১৪ সালে কলকাতায় প্রথম দেখা দিয়েছিল দু’চাকার এই ‘গাড়ি’। চাকাগুলি অনেকটা এক্কা গাড়ির মতোই বড়। তবে ঘোড়া নয়, ওই গাড়ি মানুষে টানতেন। কলকাতায় কিছুটা দেরিতেই এসেছিল মানুষে টানা ‘রিকশা’। ভারতে প্রথম এমন গাড়ি চলেছিল সিমলায়। সেখানকার পাহাড়ি রাস্তায় এমন বাহনেই ঘুরতেন সাহেবরা। কলকাতায় এলেও প্রথম কয়েক বছর বাঙালি মধ্যবিত্ত এড়িয়েই চলেছিলেন। ততদিন প্রধানত মালপত্র বহনে আর চিনাপাড়ায় সীমাবদ্ধ ছিল রিকশার গতিবিধি। তার পর?
পরের একশো বছরে কী ভাবে মানুষে টানা রিকশা বাঙালি জীবনের সঙ্গে জড়িয়ে গেল, সেই ইতিহাসই তুলে ধরেছেন ডালিয়া রায় তাঁর ‘হ্যান্ডপুলড রিকশা: এ হেরিটেজ অফ ক্যালকাটা’ বইতে। সম্প্রতি প্রেস ক্লাবে এই বইয়ের উদ্বোধন হলো। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রসার ভারতীর প্রাক্তন সিইও জহর সরকার। বইয়ের উদ্বোধনের অনুষ্ঠান হলেও রিকশার প্রয়োজনীয়তা ও বৈধতা নিয়ে আলোচনা বাদ গেল না। ২০০৭ সালে শহরে হাতে টানা রিকশা নিষিদ্ধ হয়।
সেই সূত্র ধরে ডালিয়া বলেন, ‘শহরে অন্তত দু’হাজার রিকশাচালক রয়েছেন। তাঁদের বিকল্প রোজগারের বিষয়টির দিকে তেমন ভাবে নজর দেওয়া হয়নি।’ জহর সরকার বলেন, ‘আজও বৃষ্টিতে শহরের অলি–গলি জলে ভরে গেলে শহরবাসীর সবচেয়ে বড় ভরসা রিকশাই।’ তাঁর বক্তব্য, ‘মানুষে টানা রিকশাকে ‘অমানবিক’ বলা হয়। কিন্তু এমন অনেক অত্যন্ত কষ্টসাধ্য জিনিসের সুবিধা কিন্তু আমরা ভোগ করে চলেছি।’
আলোচনায় বার বার উঠে আসে কলকাতার ঐতিহ্যে রিকশার জড়িয়ে থাকার বিষয়টি। তাই রিকশা নিষিদ্ধ হলেও শহরের ইতিহাসের সঙ্গে সম্পর্ক এড়ানো অসম্ভব।