• সি ফর ক্রিসমাস, সি ফর কেক! পুরোনো রেসিপিতেই বাজিমাত
    এই সময় | ২০ ডিসেম্বর ২০২৪
  • এই সময়: লন্ডনের বেকার পার্কিন্স লিমিটেডের তৈরির বেকিং মেশিনটা আজও রাখা আছে ‘ললিত গ্রেট ইস্টার্ন’ হোটেলের বেকারি সেকশনে। ওই যন্ত্র আর কাজ করে না। তবে ১০০ বছরেরও বেশি আগে কেক বানানোর যে রিসিপি তৈরি করেছিলেন সেই সময়ের অকল্যান্ড হোটেলের শেফরা, সেই রেসিপিতেই আজও সম্মোহিত কলকাতা এবং শহরতলি। একই কথা বলা যায় নিউ মার্কেটের ‘নাহুমস’ সম্পর্কে। এই দোকানের বয়স ১২০ বছর। তবু ‘নাহুমসের কেক’ বলতে আজও গদগদ শহর।

    তিনটি ‘সি’ বাদ দিয়ে কলকাতায় ক্রিসমাসের আবহ সম্পূর্ণ হয় না — কফি, ক্রিকেট এবং কেক। শীত মানেই ইডেনে টেস্ট ম্যাচ — এমনটা ইদানীং আর হয় না। কফিও আজকাল বছরভর খান অনেকেই। কিন্তু কেক ছাড়া কলকাতার বড়দিন? না, এখনও এই অভ্যাসে বদল আসেনি। তাই নিউ মার্কেটের পিছন দিকের গেটের কাছে দাঁড়ালেই সদ্য তৈরি কেকের সুগন্ধ যেন মন্ত্রমুগ্ধের মতো টেনে নিয়ে যায় পরপর সাজানো দোকানগুলির দিকে। আর কিছু দূরে ওই লম্বা লাইনটা? ওটা নাহুমসে ঢোকার।

    এই সুগন্ধ ললিত গ্রেট ইস্টার্ন হোটেলের বেকারির সামনে থেকেও মেলে। ফ্রুট কেক, প্লাম কেক, ডান্ডি কেক, প্লাম পুডিং, প্যানেটোনে, স্টলেন, নানা রকমের কাপ কেক এবং মাফিনের গন্ধ মিলেমিশে ওই প্রাণ আনচান করা সুগন্ধ। হোটেলের এগজ়িকিউটিভ শেফ সুনয়ন প্রামাণিক ‘এই সময়’–কে বলেন, ‘আমাদের গ্রেট ইস্টার্ন ফ্রুট কেক–এর একশো বছরেরও পুরোনো রেসিপির জনপ্রিয়তা আজও অটুট। এ ছাড়া প্লাম কেক অত্যন্ত জনপ্রিয়। তবে আমরা প্রতি বছরই বড়দিনে নতুন কিছু তৈরি করি।’

    শেফ জানাচ্ছেন, সেই ধারা মেনেই এ বার বড়দিনে ইটালির অত্যন্ত জনপ্রিয় প্যানেটোনে ব্রেড এবং জার্মান স্টলেন ব্রেড তৈরি হচ্ছে। এ বার নতুন কুকিও তৈরি হচ্ছে সেখানে, তা হলো আমন্ড বিসকোটি। এ ছাড়া থাকছে ফরাসি ভিয়েনোয়াজ়েরি, থাকছে ক্রোয়াজ়াঁ ব্রিয়োশের মতো জিভে জল আনা খাবারও।

    কলকাতার পাশাপাশি শহরতলির বাসিন্দাদের কাছেও বিপুল জনপ্রিয় বড়দিনের ফ্রুট কেক। অভিজ্ঞ শেফরা বলছেন, এর প্রকৃত রেসিপি নির্ভর করে কেকের উপাদান এবং সে সব মেশানোর পদ্ধতির উপর। তাই নামী কেক প্রস্তুতকারীদের কাছে এই উপাদান অত্যন্ত গোপনীয়। সেপ্টেম্বরের শেষেই শুরু হয়ে যায় ‘কেক মিক্সিং’–এর পর্ব। এ বছরও তার ব্যতিক্রম হয়নি। হাজার হোক, বড়দিনের যে কেকের প্রতি বাঙালির এত ভালোবাসা, তার স্বাদ নিয়ে কোনও সমঝোতায় যেতে রাজি নন শেফরা।

  • Link to this news (এই সময়)