এই সময়: স্নায়ু–চিকিৎসার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নেই। নেই উপযুক্ত পরিকাঠামোও। তাও কলকাতা থেকে দূরবর্তী ৪১টি সরকারি হাসপাতালে গত পৌনে দু’বছর ধরে সফল ভাবে হয়ে চলেছে ইস্কিমিক ব্রেন স্ট্রোকের চিকিৎসা। অর্থাৎ, যে স্ট্রোকে মস্তিষ্কের রক্তবাহিকায় চর্বি জমে রক্ত সরবরাহ বিঘ্নিত হয় মস্তিষ্কের বড় অংশে।
সৌজন্যে, সরকারি প্রকল্প ‘স্বাস্থ্য–ইঙ্গিত’। এই টেলি–মেডিসিন ব্যবস্থায় জেলা কিংবা মহকুমা স্তরের সরকারি হাসপাতালে স্ট্রোকের রোগীর আগাগোড়া চিকিৎসা করছেন বাঙুর ইনস্টিটিউট অফ নিউরোসায়েন্সেস (বিআইএন)–এর বিশেষজ্ঞ নিউরোলজিস্টরা। এর ফলে প্রাণ বেঁচেছে হাজার আটেক স্ট্রোকের রোগীর। সরকারি এই সাফল্যগাথা এ বার প্রকাশিত হলো ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (আইএমএ)–এর ‘ইয়োর হেলথ’ জার্নালে।
‘টেলি–স্ট্রোক প্রোগ্রাম অফ ওয়েস্টবেঙ্গল: ফেসিলিটেটিং পেশেন্ট সেফটি অ্যামং আন–রিচড পপুলেশন’ শীর্ষক প্রবন্ধে রাজ্যের স্বাস্থ্য–অধিকর্তা স্বপন সরেন এবং জনস্বাস্থ্য ও সংক্রামক ব্যাধি বিভাগের মেডিক্যাল অফিসার অর্ণব সরকার তথ্য–পরিসংখ্যান ও ব্যাখ্যা–সহ দেখিয়েছেন, দূর–চিকিৎসা ব্যবস্থায় কী ভাবে প্রাণ বেঁচেছে বিপুল সংখ্যক রোগীর।
স্ট্রোকের চিকিৎসায় ‘গোল্ডেন আওয়ার’ সাড়ে চার ঘণ্টা। কিন্তু কলকাতা থেকে দূরবর্তী এলাকায় কেউ স্ট্রোকে আক্রান্ত হলে নিউরোলজির সুবিধাযুক্ত সরকারি হাসপাতালে রোগীকে আনতে আনতেই অনেক সময় নষ্ট হয়। সেখানেই বাজিমাত করেছে ‘স্বাস্থ্য–ইঙ্গিত’। রোগী ভর্তি থাকছেন জেলা সদর বা মহকুমা হাসপাতালেই। মস্তিষ্কের সিটি স্ক্যানও হচ্ছে সেখানে। তার পর সেই রিপোর্ট টেলি–মেডিসিন ব্যবস্থায় বিআইএনের চিকিৎসক খুঁটিয়ে দেখে যথাযথ চিকিৎসার পরামর্শ দিচ্ছেন। এর ফলে ৭,৯৪৫ জন রোগীর প্রাণ বেঁচেছে, তাঁদের মধ্যে প্রায় ৭৬% রোগীর পক্ষাঘাত বা অন্য কোনও বড় শারীরিক সমস্যাও এড়ানো গিয়েছে।