এই সময়: চাকরি থেকে অবসরের সাত বছর পরেও গ্র্যাচুইটি–সহ অবসরকালীন অন্যান্য সুযোগসুবিধা পাননি বহরমপুর পুরসভার কর্মী ভবানীশঙ্কর রায়। বারংবার আদালতের নির্দেশের পরেও প্রাপ্য ২৫ লক্ষ টাকার মধ্যে সবে তাঁর অ্যাকাউন্টে ঢুকেছে সাকুল্যে ৩৪ হাজার টাকা। বাকি টাকা দেওয়া নিয়ে পুর–দপ্তর ও রাজ্য সরকারের মধ্যে চিঠি চালাচালি শুরু হয়েছে গত মাসে হাইকোর্ট টাকা মেটানোর নির্দেশ দেওয়ার পরে।
বাস্তবে টাকা না মেটানোয় বৃহস্পতিবার বিচারপতি অমৃতা সিনহার বেঞ্চ ডিরেক্টর অফ লোকাল বডিজের বেতন বন্ধ করে দিল। বিচারপতির নির্দেশ, যতদিন না ওই কর্মীর যাবতীয় বকেয়া তাঁর অ্যাকাউন্টে ঢুকছে ততদিন ওই ডিরেক্টরের বেতন বন্ধ থাকবে। প্রবল ক্ষোভের সঙ্গে বিচারপতির বক্তব্য, কে টাকা মেটাবেন তা নিয়ে আপনারা দুই দপ্তর লড়াই করুন। কিন্তু তার জন্যে এক জন কর্মীকে অবসরের পরে সরকারের দরজায় দরজায় ঘুরে হেনস্থা হতে হবে—এটা হাইকোর্ট মেনে নেবে না।
বহরমপুর পুরসভার তরফে আইনজীবী অরিন্দম দাস দাবি করেন, নভেম্বরে আদালতের নির্দেশের পরেই তাঁরা ওই কর্মীর পেনশনের টাকা অ্যাকাউন্টে পাঠিয়েছেন। কিন্তু গ্র্যাচুইটির ৪০ শতাংশ টাকা দেয় পুরসভা। বাকি টাকার জন্যে রাজ্যের কাছে চিঠি দেওয়া হয়েছে। আগের দিন হাইকোর্টের নির্দেশে এ দিন ভার্চুয়ালি শুনানিতে হাজির ছিলেন লোকাল বডিজের ডিরেক্টর।
তাঁর দাবি, গ্র্যাচুইটির বকেয়া টাকার জন্যে অর্থ–দপ্তরে চিঠি পাঠানো হয়েছে। যা শুনে ক্ষোভে ফেটে পড়েন বিচারপতি। বিচারপতি সিনহার কথায়, ‘এই বক্তব্য একেবারেই সন্তোষজনক নয়। কে টাকা দেবে তা নিয়ে আপনারা যুদ্ধ করুন ক্ষতি নেই, কিন্তু তার জন্যে কর্মীর হয়রানি একেবারেই বরদাস্ত করব না।’ তার পরেই ওই অফিসারের বেতন বন্ধের নির্দেশ দেয় আদালত।
বিরক্ত হাইকোর্ট এক সময়ে রাজ্যের আইনজীবীকে বলেন, ওই পুরসভা চালানোর দায়িত্ব নিন। পরে আদালত জানিয়ে দেয়, ১৬ জানুয়ারি পরবর্তী শুনানিতে আদালত দেখতে চায়, কর্মীর প্রাপ্য মেটানো হয়েছে কিনা। ওই দিন ফের ওই ডিরেক্টরকে ভার্চুয়াল মাধ্যমে শুনানিতে হাজির থাকারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।